বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: দু’জনই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। দু’জনই বৃদ্ধ। একজন হাজির থাকবেন। অপরজন অসুস্থ। তাই ঘরবন্দি। একজন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। অপরজন কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভেলিক্কাকাটু শঙ্করন অচ্যুতানন্দন। হায়দরাবাদে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস এবার দু’জনকে ঘিরেই আবর্তিত হবে। কোঝিকোড়ের পর আর কোনও পার্টি কংগ্রেসে অংশ নেননি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। অসুস্থতার জন্য পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে সরে এসেছেন তিনি। শুধু তাই নয় এবারের রাজ্য সম্মেলনে সম্পাদকমণ্ডলী ও রাজ্য কমিটি থেকেও নিজেকে সরিয়ে নেন।
বুদ্ধবাবু বঙ্গ সিপিএমের সক্রিয় রাজনীতিতে নেই। এটা যেমন সত্যি। তেমনই এটাও ঘটনা যে গোটা রাজ্য পার্টির ‘রিমোট কন্ট্রোল’ তাঁর হাতে। বিশেষত জোটবিরোধী প্রকাশ কারাট বা রাঘুবালুদের আনা যুক্তির জাল কাটতে কীভাবে পাল্টা যুক্তি সাজাতে হবে, তার নকশা ‘অদৃশ্য’ থেকে বুদ্ধবাবুই তৈরি করেন। বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয়েছে সোমবার। হায়দরাবাদ যাওয়ার আগে দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ও বিমান বসু দীর্ঘক্ষণ তাঁর কাছে ছিলেন। পাম অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দার কাছ থেকে যাবতীয় খুঁটিনাটি জেনে নিয়েছেন।
সিপিএম সূত্রে খবর, হায়দরাবাদে যাওয়া রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বুদ্ধবাবুর যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে কাজ করবেন অভীক দত্ত ও রবীন দেব। কখন, কী পরিস্থিতি তৈরি হয় তার যাবতীয় তথ্য সময় ধরে বুদ্ধবাবুকে জানাবেন এই দুই নেতা। এতো গেল আলিমুদ্দিনের কথা। ভরাডুবির পর ত্রিপুরার নেতারাও যাতে জোটের পক্ষে নিজেদের বক্তব্য রাখেন তাতেও সচেষ্ট হয়েছেন বুদ্ধবাবু। এবারের পার্টি কংগ্রেসে রাজ্য থেকে প্রায় দু’শো প্রতিনিধি হায়দরাবাদ যাচ্ছেন। এঁদের মধ্যে যাঁরা বক্তব্য রাখার সুযোগ পাবেন তাঁরা যে বুদ্ধবাবুর লাইন মেনে পার্টির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে সমর্থন করবেন, তা একরকম স্পষ্ট করে দিয়েছেন একাধিক নেতা। এটাই বড় ভরসা সীতারাম ইয়েচুরি, মানিক সরকারদের। সিপিএমের ‘ঠোঁটকাটা’ বিতর্কিত নেতা বলে পরিচিত অচুত্যানন্দনকে পার্টির প্রায় সব নেতাই সমীহ করে চলেন। কেন্দ্রীয় কমিটি আর পলিটব্যুরো থেকে তাঁকে সরানো হয়েছে। কিন্তু রাজ্য কমিটিতে আছেন। নবতিপর ভিএসকে কেরল পার্টি তেমন পছন্দ না করলেও অন্য রাজ্যে এখনও তাঁর যথেষ্ট প্রভাব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.