সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেউ ফিরছিলেন কুম্ভ স্নান সেরে, তো কেউ যাচ্ছিলেন ত্রিবেণীর উদ্দেশে। তবে কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে মাঝপথে বাধা হয়ে দাঁড়াল ভয়ংকর মৃত্যু। রেলের চূড়ান্ত অব্যবস্থায় পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ গেল ১৮ জনের। আহত অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন আরও অনেকে। রবিবার দিল্লি পুলিশের তরফে প্রকাশ্যে আনা হয়েছে মৃতের তালিকা। যেখানে দেখা যাচ্ছে, মৃত ১৮ জনের মধ্যে রয়েছে ৭ বছরের শিশু থেকে ৭৯ বছরের বৃদ্ধা।
নয়াদিল্লি স্টেশনের ভয় ধরানো একের পর এক ছবি ইতিমধ্যেই দেখে ফেলেছে দেশ। যেখানে দেখা যাচ্ছে, শয়ে শয়ে জুতো, ব্যাগ, পোশাক ছড়িয়ে রয়েছে স্টেশন চত্বরে। যা প্রমাণ দিচ্ছে গতরাতের ভয়াবহতার। কোথায় পরিবারের সদস্যদের হারিয়ে পথে বসে কাঁদছেন পরিজন। ভিড়ের মধ্যে স্ত্রী-সন্তানের খোঁজ না পেয়ে ছবি হাতে কেউ ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রশাসনের দরজায়। হৃদয় মুচড়ে দেওয়ার মতো একের পর এক মর্মান্তিক ছবি দেখা যাচ্ছে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে। রবিবার পুলিশ প্রশাসনের তরফে মৃতের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, মৃতদের বেশিরভাগই দিল্লি (৯ জন) ও বিহারের (৮ জন) বাসিন্দা। একজন রয়েছেন হরিয়ানার। ৭ বছর থেকে ৭৯ বছরের মধ্যে বিভিন্ন বয়সের মানুষ রয়েছেন তালিকায়। মৃতদের মধ্যে রয়েছে ৫ শিশু, ১১ জন মহিলা ও ২ জন পুরুষ।
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, মৃত ১৮ জনের প্রত্যেকেই ছিলেন মহাকুম্ভের যাত্রী। কেউ সেখান থেকে ফিরছিলেন তো কেউ সেখানে যাচ্ছিলেন। শনিবার সেই উদ্দেশে শয়ে শয়ে মানুষ জড়ো হন নয়াদিল্লি স্টেশনে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, স্বতন্ত্রতা সেনানী এক্সপ্রেস এবং ভুবনেশ্বর-রাজধানী এক্সপ্রেস এই দুটি ট্রেনে প্রয়াগরাজ যাবেন বলে বহু মানুষ ১২ এবং ১৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু দুটি ট্রেনের কোনওটিই সময়মতো পৌছয়নি। এর মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে ট্রেনদুটি বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে কুম্ভের জন্য স্পেশাল ট্রেন প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস ঢুকে পড়ে ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে। প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস আসতে দেখে ওই ট্রেনের যাত্রীরা তো বটেই বাকি দুটি ট্রেনের যাত্রীরাও হু হু করে ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে ছুটতে থাকেন। সকলে একসঙ্গে ওই ট্রেনটিতে ওঠার চেষ্টা করলে অনেকে পড়ে যান। সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিও-তে দেখা যাচ্ছে, যারা পড়ে রয়েছেন তাঁদের মাড়িয়েই ট্রেনের দিকে ছুটছেন ‘পুণ্যার্থী’রা। তাঁদের আর্তনাদ-চিৎকারেও কেও তোয়াক্কা করেননি।
এই দুর্ঘটনায় রেলের তরফে ইতিমধ্যে মৃতদের পরিবারের জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যাঁদের আঘাত গুরুতর, তাঁরা আড়াই লক্ষ এবং যাঁদের আঘাত ছোটখাটো, তাঁরা এক লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাবেন। শনিবারের ঘটনার তদন্তের জন্য দুই সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.