Advertisement
Advertisement

Breaking News

১০ ফুট বরফে মোড়া শেষনাগ, টানা বৃষ্টিতে ‘ভিলেন’ আবহাওয়া

ফের বন্যা হবে না তো?  যাত্রাপথ থেকে উত্তর দিলেন আমাদের প্রতিনিধি। দেখুন ভিডিও।

Extreme weather halts Amarnath Yatra
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 30, 2018 11:14 am
  • Updated:June 30, 2018 11:14 am

ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, চন্দনওয়ারি: সামনের পাথরটা কত বড়, ঘোড়ার পিঠে ক’জন? হাজার হ্যালোজেনও ধন্দ কাটবে কি না গ্যারান্টি দেওয়া যাচ্ছে না। লিডার নদীর গর্জন শোনা যাচ্ছে বটে, দেখা যাচ্ছে না কিছুই। আকাশ ঝেঁপে বৃষ্টি, সঙ্গে ঝোড়া হাওয়া। চন্দনওয়ারিতে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছে অমরনাথ যাত্রায় বাদ সেধেছেন তিনি নিজেই। না হলে দুর্যোগের কারণে বৃহস্পতিবার স্থগিত যাত্রার দরজা খুলে দেওয়ার পরও শুক্রবার কেউ তো শেষনাগের বাধা টপকাতেই পারলেন না। শুধু পারলেন না বললে ভুল হবে, ফিরে এলেন প্রায় ২০০ জন। তাঁদের অনেকেই অসুস্থ। আশ্রয় ভারত সেবাশ্রমের শিবিরে।

[গৌরী লঙ্কেশের হত্যাকারীদের হুমকিতে ভয় পাই না: প্রকাশ রাজ]

Advertisement

যাঁরা রয়ে গিয়েছেন, সেই হাজারের চেয়ে কিছু বেশি যাত্রী রাত কাটাচ্ছেন কী ভাবে সেটা ভেবে আঁতকে উঠতে হচ্ছে। কারণ, সেখানে রাস্তায় তো ১০ ইঞ্চি বরফ। ভূস্বর্গ এমনিতেই তপ্ত রাজনৈতিক কারণে। সদ্য মেহবুবা মুফতি সরকারের পতনে যে গরম আবহ তৈরি হয়েছিল তাকে এক ঝটকায় শূন্য ডিগ্রির চেয়ে নিচে নামিয়ে এনেছে বাবা অমরনাথের যাত্রাপথ। টানা বৃষ্টিতে তৈরি হয়েছে বন্যার আশঙ্কা। বৃষ্টি না থামায় উপত্যকায় আবার জারি হয়েছে রেড অ্যালার্ট। সেখানে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা কালো ধাতব আগ্নেয়াস্ত্রধারীদের জ্যাকেটে বরফ। আর যাত্রীদের হাল এই অবস্থায় সহজেই অনুমেয়। এবং ফিরে এসেছে প্রায় দুই যুগ আগেকার আতঙ্ক। তা কিন্তু জঙ্গি হামলার নয়। পাকিস্তানি মৌলবাদিদের কোনও হুমকিরও নয়। বরং আবহাওয়ার চোখ রাঙানির। যা হাড় হিম করে দিচ্ছে। ১৯৯৬ সালে এই শেষনাগেই তো প্রবল দুর্যোগে শেষ নিশ্বাস ফেলেছিলেন ২৪৩ জন পুণ্যার্থী। চন্দনওয়ারির পনি-মালিক থেকে লঙ্গরখানার ম্যানেজার, সকলেই আকাশের দিকে তাকিয়ে বলছেন, “ইনসাল্লাহ। দেখো।” এ ছাড়া করার যে কিছু নেই।

Advertisement

মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ক্রিকেটের টেস্ট ম্যাচের মেজাজ ছিল প্রথম। দিন দু’য়েক পার করেই যা একেবারে আইপিএলের বিশ ওভারি ম্যাচের মতো চালিয়ে খেলছে। আর শুক্রবার যেন শেষ ওভারের প্রতি বলে ছক্কা মারার মেজাজ। যা দেখা গিয়েছিল বৃহস্পতিবারের বারবেলা থেকে। ফলে লিডার নদী ফুলে ফেঁপে উঠেছে। পাহাড়ি রাস্তা। এখানে প্লাস্টিক নিষিদ্ধ। কিন্তু সেই ঢালু রাস্তায় জল থই থই। বাজারে অঘোষিত বনধ। গতকাল তাই যাত্রা স্থগিত করা হয়। স্বাভাবিক কারণেই ভিড় উপচে পড়ছে চন্দনওয়ারিতে। ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই রব।

শুক্রবার এত ঝুঁকি মাথায় নিয়েও যাত্রীরা সাত-সকালেই তৈরি। সবাই যেতে চান। এখানে যে প্রবেশ গেট করা হয়েছে সেখানে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন বাচ্চা কোলে মা থেকে লাঠি হাতে বৃদ্ধ। আবার টাঙ্গাওয়ালার মাথায় চেপে বসা মহিলা। এই অবস্থায় রক্ষীরা সকাল দশটায় গেট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন। যা খোলা থাকার কথা ১২টা পর্যন্ত। হাজার দেড়েক মানুষ তখন যাত্রা শুরু করেছে শেষনাগের পথে। বাকিরা আটকে। শুরু বিক্ষোভ। দাবি, যেতে দিতে হবে। নিরাপত্তারক্ষী ও সরকারের তরফে আপত্তি, যেতে নাহি দিব। দড়ি টানাটানি। অঝোরে বৃষ্টি। দমকা হাওয়ায় গায়ে যেন কাঁটা ফুটছে। তবু সকলেই চান অমরনাথের পথে হাঁটতে। বিপদ থাকুক মাথায়।

আসলে সবার ফেরার টিকিট কাটা আছে। এত কাটাকুটি খেলার মধ্যে অমরনাথের দর্শন মিলবে তো? পরিকল্পিত যাত্রায় একটা দিন গিয়েছে দুর্যোগের কবলে। আর কত? দুপুরের পর ভিড় বাড়ছে যাত্রীদের। সারা ভারতের চরিত্র হাজির। কাকে ছেড়ে কার কথা বলা যায়? তাঁরা সবাই তৈরি শনিবারের জন্য। সবার নজর আকাশে। কে বলবে আবহাওয়া নয়, জঙ্গিদের ঠেকাতে এনএসজি নেমেছে এখানে। ওসব থোড়াই কেয়ার। এরই মধ্যে খবর এল রাস্তায় বরফ। শেষনাগে। একটু আধটু নয়, পাক্কা ১০ ফুট। ফলে শেষনাগের পর কাউকে যেতে দেওয়া হয়নি। শুক্রবার সন্ধ্যার পর আবহাওয়া আরও চোখ রাঙাচ্ছে। বৃষ্টি থামার কোনও লক্ষণ নেই। বরং সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী দু’দিন পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। তাই আতঙ্কের যাত্রাপথ ঘিরে আরও ভয় চেপে বসেছে। ১৯৯৬ ফিরে আসবে না তো? জানেন অমরনাথ।

ছবি ও ভিডিও: প্রতিবেদক

[আমাদের ধন্যবাদ জানান! মান্দাসোরে নির্যাতিতার পরিবারকে নির্লজ্জ প্রস্তাব বিজেপি সাংসদের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ