ফাইল ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার নিয়ে এবার প্রকাশ্যে এল আর এক বিস্ফোরক তথ্য। দাবি করা হচ্ছে, ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রধান তথা জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা ব্যক্তিগতভাবে এই ধারা প্রত্যাহারের পক্ষে ছিলেন। সম্প্রতি এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন, ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইংস’ (RAW)-এর প্রাক্তন প্রধান এএস দুলত-এর ‘Chief Minister and the Spy’ বইতে।
দুলত দাবি করেছেন, জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ধারা ৩৭০ প্রত্যাহারের কিছুদিন আগে ফারুক আবদুল্লা ও তাঁর পুত্র ওমর আবদুল্লা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বইতে লেখা রয়েছে, ‘ওই সাক্ষাতে তাঁদের মধ্যে ঠিক কী আলোচনা হয়েছে তা কেউ কখনও জানতে পারবেন না।’ তবে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর ৭ মাসের জন্য গৃহবন্দি করা হয়েছিল উপত্যকার নেতাদের। সেই তালিকায় ছিলেন আবদুল্লারাও। এই সময়কালে দিল্লির কড়া নজরদারি ছিল তাঁদের উপর। জম্মু ও কাশ্মীরের নেতা-নেত্রীদের সেখানকার বর্তমান বাস্তব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করাতে চাইছিল কেন্দ্র। দুলতের দাবি, সেই সময় ফারুক আবদুল্লা তাঁকে জানিয়েছিলেন, ‘এই প্রস্তাব যাতে পেশ করা যায় তার জন্য আমরা অবশ্যই সাহায্য করতাম। তবে আমাদের প্রতি কেন ভরসা করা হল না?’
শুধু তাই নয়, দুলত তাঁর বইতে ফারুক আবদুল্লার রাজনৈতিক একাধিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। যেখানে তুলে ধরা হয়েছে জাতীয় রাজনীতিতে বহুবার প্রতারিত হয়েছেন আবদুল্লা। ১৯৮৪ সালে ইন্দিরা গান্ধী তাঁর (ফারুক আবদুল্লা) সরকারকে বরখাস্ত করেন। যা একধরনের প্রতারণা ছিল। এরপর অটলবিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গে অত্যন্ত হৃদ্যতার সম্পর্ক ছিল ফারুকের। তিনি বাজপেয়ীর সঙ্গে বিদেশ সফরে যেতেন। বাজপেয়ী চাইছিলেন ফারুককে জম্মু ও কাশ্মীরের নয়া মুখ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে। যদিও ফারুক ভেবেছিলেন তাঁকে উপরাষ্ট্রপতি পদ দেওয়া হবে। ফলে এটাও তাঁর কাছে ছিল প্রতারণারই সামিল।
তবে দুলতের দাবি অনুযায়ী ফারুক ব্যক্তিগত ভাবে ৩৭০ ধারা সমর্থন করলেও, প্রকাশ্যে এর তীব্র বিরোধিতা করেছেন বারবার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেছিলেন, ”যদি জম্মু ও কাশ্মীরের বেহাল পরিস্থিতির জন্য ৩৭০ ধারা ও পরিবারবাদ দায়ী হয়, তাহলে তৎকালীন সময়ে এখানে এত উন্নয়ন কীভাবে হয়েছিল?” উপত্যকার পরিবারবাদের রাজনীতি উড়িয়ে নিয়েও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী হয়েও আমি এখানে আমি নির্বাচন হেরেছি। তাহলে পরিবারবাদের যে অভিযোগ করা হচ্ছে তার ভিত্তি কী?” পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ ছিল, “৩৭০ ধারা প্রত্যাহারে জম্মু ও কাশ্মীরে শিক্ষা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। আগে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষা বিনামূল্যে ছিল উপত্যকায়। আমি বলব, ৩৭০ ধারা থাকালীন রাজ্যের কী পরিস্থিতি ছিল এবং এর পর কী অবস্থা তা কোনও নিরপেক্ষ কমিটি গঠন করে অনুসন্ধান করানো হোক।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.