সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাজমহলের মালিকানা নিয়ে ধুন্ধুমার সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড বনাম আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (এএসআই)। ২০১০-এ সুপ্রিম কোর্টে এএসআইয়ের দায়ের করা এক মামলায় সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড দাবি করে, খোদ শাহজাহানই নাকি বোর্ডকে তাজমহল লিখে দিয়ে গিয়েছেন।
মঙ্গলবার ওই মামলাই চাঞ্চল্যকর মোড় নিল। সুপ্রিম কোর্ট তার এক নির্দেশে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে এক সপ্তাহ সময় দিয়ে জানিয়েছে, শাহজাহান যে তাজমহলকে বোর্ডের হাতে তুলে দিয়েছিলেন, তার নথি পেশ করতে হবে আদালত। বোর্ডের হাতে মাত্র এক সপ্তাহ সময় রয়েছে যার মধ্যে ১৬৬৬-তে মৃত শাহজাহানের স্বাক্ষর করা নথি সুপ্রিম কোর্টে পেশ করতে হবে। স্ত্রী মুমতাজের স্মৃতিতে তাজমহল তৈরি করার প্রায় ১৮ বছর পর মারা যান শাহজাহান। ১৬৫৮-তে অগ্রা ফোর্টে পুত্র ঔরঙ্গজেবের হাতে গৃহবন্দি অবস্থায় মারা যান শাহজাহান।
[কুলগামে সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষ, শহিদ জওয়ান]
২০১০-এর মামলাটি এখন সুপ্রিম কোর্টের মুখ্য বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চে বিচারাধীন। মঙ্গলবার ওই মামলায় ওয়াকফ বোর্ডকে প্রয়োজনীয় নথি পেশের নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি দীপক মিশ্র বলেন, ‘আপনাদের মুখের কথায় কেন দেশের মানুষ বিশ্বাস করবেন? এই ধরনের মামলা সুপ্রিম কোর্টের সময় নষ্ট করে।’ আদালতের পর্যবেক্ষণ, তাজমহল সপ্তদশ শতকে নির্মিত মনুমেন্ট। মোঘল জমানা শেষ হলে ব্রিটিশ আমলে মনুমেন্টটির দায়িত্ব যায় ইংরেজদের হাতে। স্বাধীনতার পর এএসআই দেশের অন্যান্য মনুমেন্টের মতো তাজমহলেরও দেখভালের দায়িত্ব পায়।
২০০৫-এ ওয়াকফ বোর্ড দাবি জানায়, তাজমহলকে বোর্ডের সম্পত্তি বলে ঘোষণা করতে হবে। ২০১০-এ এএসআই ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যায়। আদালত ওয়াকফ বোর্ডের দাবিতে স্থগিতাদেশ দেয়। বোর্ডের হয়ে এই মমলা লড়ছেন বর্ষীয়ান আইনজীবী ভিভি গিরি। তাঁর দাবি, শাহজাহান একটি ওয়াকফনামা করে তাজমহলের মালিকানা বোর্ডের হাতে তুলে দিয়ে যান। আর এখানেই প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের নির্দেশ, শাহজাহান যদি আসল ডিডে স্বাক্ষর করে যান, তাহলে ওই স্বাক্ষর আদালতে এনে দেখান। আদালত প্রশ্ন তুলেছে, কী করে শাহজাহান ওয়াকফনামায় স্বাক্ষর করতে পারেন? যে সময় তাজমহল তৈরি সম্পূর্ণ হয়েছে, সে সময় শাহজাহান জেলে বসে বাইরের প্রকৃতি দেখতেন। মামলাকারী এএসআইয়ের আইনজীবী এডিএন রাও আদালতকে জানান, কোনও ওয়াকফনামাই হয়নি। শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের কাছ থেকে ইংরেজরা তাজমহল নিয়ে নেয়। স্বাধীনতার পর ভারত সরকার ইংরেজদের কাছ থেকে মনুমেন্টটি নিয়ে নেয়।