সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠিক আর পাঁচটা জীবনের মতো নয়। অন্যকিছু চেয়েছিলেন তিনি জীবনের কাছ থেকে। যখন জার্মানি থেকে ভারতে আসেন ইরিনা, তখনও ঠিক স্পষ্ট ছিল না ধারণা। ফ্রেডরিখ ইরিনা ব্রুনিং। এখন হয়তো বলতে পারেন এই দেশ তাঁকে জীবনের মানে শিখিয়েছে।
১৯৭৮ সালে পর্যটক হিসেবে বার্লিন থেকে ভারতে আসেন ইরিনা। তখন থেকে শুরু। এখনও পর্যন্ত প্রায় ১২০০ গরুর জীবন বাঁচিয়েছেন এই জার্মান মহিলা। এই গরুগুলিকে তিনি যখন উদ্ধার করেন, রীতিমতো মৃতপ্রায় অবস্থায় ছিল সেগুলি। ঊনষাট বছরের ইরিনা এখন এদের দেখভালেই সময় কাটাচ্ছেন। মথুরাতেই কেটে গেছে জীবনের অধিকাংশ সময়। ইরিনা বলছেন, একসময় পথ খুঁজতেই ভারতে আসা তাঁর। ঘটনাক্রমে এসে পড়া মথুরাতে। গুরুর খোঁজ তখন থেকেই। যিনি তাঁকে পথ দেখাবেন। গুরুর খোঁজ মেলেনি। তবে জীবন বদলানোর রসদ পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
[‘মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্তই’, কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানকে তোপ ভারতের]
এক প্রতিবেশীর পরামর্শে গরু কেনেন ইরিনা। শিখতে শুরু করেন হিন্দি। গরুদের পরিচর্যার জন্য কেনেন বই। রাস্তায় অযত্নে পড়ে থাকা, পরিত্যক্ত গরুগুলিকে নিয়ে আসেন বাড়িতে। শুরু হয় যত্ন করা। তৈরি করেন ‘সুরভাই গোসেবা নিকেতন’। নিজে পরিচিত হন ‘সুদেবী মাতাজি’ নামে। নিজের সন্তানের মতো করে লালন পালন শুরু হয় গরুদের। খাবার থেকে শুরু করে ওষুধ, সব দেওয়া হয় তাঁর পোষ্যদের। শুধু তাই নয়, মথুরা জুড়ে যেখানেই পরিত্যক্ত কোনও গরু পড়ে থাকে, সেই-ই ঠাঁই পায় এই গোশালায়। এখন তো একটা বেশ বড়সড় পরিবার হয়ে গেছে তাঁর।
[দূরপাল্লার যাত্রায় কতক্ষণ ঘুমাবেন, সময় বেঁধে দিল রেল]
প্রতি মাসে এজন্য তাঁর খরচ প্রায় ২২ লক্ষ টাকার মতো। গরুদের দেখভালের জন্য রয়েছেন ৬০ জন কর্মী। কিন্তু এই খরচের টাকা আসে কোথা থেকে। ইরিনা জানাচ্ছেন, বার্লিনে কিছু সম্পত্তি রয়েছে তাঁর। ভাড়ার টাকায় অনেকটাই সুবিধা হয় তাঁর। তবে সমস্যা তৈরি হয় ভিসা নিয়ে। দীর্ঘমেয়াদি ভিসা এখনও পান নি তিনি। এরজন্য প্রতিবছর তাঁকে ভিসা ‘রিনিউ’ করাতে হয়। তবু এদেশের মাটিকেই ভালোবেসে এতগুলো বছর কাটিয়ে দিলেন ইরিনা। এখানে বাকি জীবন কাটাতে চান তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.