সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের বড়সড় ধাক্কা খেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্বপ্নের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্প। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে স্বাবলম্বী হওয়ার ক্ষেত্রে খানিকটা পিছিয়ে গেল ভারত। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, নৌসেনার জন্য অত্যন্ত জরুরি একটি প্রকল্প ঠান্ডাঘরে যেতে বসেছে। দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত ‘মাইনসুইপার’ যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের পরিকল্পনা আপাতত পিছিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র।
[ভারতীয় নৌসেনাকে যুদ্ধবিমান বিক্রি করতে উদ্যোগী মিগ]
প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১২টি ‘মাইনসুইপার‘ নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল কেন্দ্রের। গোয়া শিপইয়ার্ডে ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্থা ‘কাংনাম’ যৌথভাবে এই জাহাজগুলি বানানোর কথা ছিল। তবে অজানা কারণে সমস্ত প্রক্রিয়া বাতিল করে গোয়া শিপইয়ার্ডকে ফের নতুন করে টেন্ডার ডাকার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই প্রকল্প নিয়ে বিস্তর টালবাহানা রয়েছে। এবার কেন্দ্রের এহেন মনোভাবে তা আরও পিছিয়ে গেল। ফলে প্রশ্নের মুখে পড়ছে দেশের নিরাপত্তা। ২০০৫ সালে অন্তত ২৪টি ‘মাইনসুইপার’ কেনার আবেদন জানায় নৌসেনা। এক্ষেত্রে তাদের যুক্তি ছিল দেশের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূল রক্ষায় এই যুদ্ধজাহাজগুলি অত্যন্ত জরুরি। বর্তমানে নৌসেনার হাতে রয়েছে মাত্র ৪টি মাইনসুইপার। সেগুলিও প্রায় মান্ধাতা অামলের।
কী এই মাইনসুইপার এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ এই জাহাজগুলি?
প্রায় ৯০০ টন ওজনের মাইনসুইপারে হচ্ছে বিশেষ প্রযুক্তি সম্পন্ন এক ধরনের যুদ্ধজাহাজ। সমুদ্রে শত্রুপক্ষের বিছিয়ে রাখা মাইন (এক ধরনের বোমা) নিষ্ক্রিয় করতে এদের জুড়ি মেলা ভার। এছাড়াও শত্রুপক্ষের সাবমেরিন ও জাহাজ ধ্বংস করতে মাইনের ফাঁদও বিছিয়ে দিতে সিদ্ধহস্ত এই জাহাজগুলি। সম্প্রতি ভারত মহাসাগরে একাধিক চিনা পারমাণবিক সাবমেরিনের দেখা মিলেছে। করাচি বন্দরে তৈরি রয়েছে পাকিস্তানের যুদ্ধজাহাজও। ফলে যে কোনও মুহূর্তে ভারতের বন্দরগুলির জলসীমায় মাইন বিছিয়ে দিতে পারে তারা। তাই এদের মুকাবিলা করার জন্য দরকার কমপক্ষে ২৪টি মাইনসুইপারের। তাই কেন্দ্রের এহেন সিদ্ধান্তে ধাক্কা খেয়েছে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র। উল্লেখ্য, গত তিন চার বছরে লালফিতের জটে আটকে রয়েছে একাধিক অস্ত্র নির্মাণ ও কেনার প্রকল্প। ডোকলাম নিয়ে চিন ও কাশ্মীরে পাক সেনার আগ্রাসনের মুখে সামরিক বাহিনীর এহেন অবস্থায় চিন্তিত প্রতিরক্ষা মহল।
[চিনকে ‘চ্যালেঞ্জ’ জানিয়ে প্রথম স্করপেন সাবমেরিন এল ভারতীয় নৌসেনায়]