ফাইল ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুলিশ হেফাজতে এক অভিযুক্তকে নৃশংস অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছিল প্রাক্তন আইপিএস সঞ্জীব ভাটের বিরুদ্ধে। ১৯৯৭ সালের সেই ঘটনায় অভিযুক্ত ওই প্রাক্তন আইপিএসকে বেকসুর খালাস করল গুজরাটের এক আদালত। শনিবার এই মামলার শুনানিতে আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, প্রাক্তন ওই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তার ভিত্তিতে যথেষ্ট প্রমাণ নেই। ফলে প্রমাণের অভাবে গুজরাটের পোরবন্দরের তৎকালীন পুলিশ সুপারকে বেকসুর খালাস করা হচ্ছে।
ঘটনার সূত্রপাত ১৯৯৭ সালে। সন্ত্রাসবাদ ও বেআইনি অস্ত্র সংক্রান্ত মামলায় নারান যাদব নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা করে পুলিশ। এই মামলায় ২২ জন অপরাধীর মধ্যে একজন ছিলেন যাদব। অভিযোগ, তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে অপরাধ স্বীকার করতে বাধ্য করা হয়। তার জন্য পুলিশ হেফাজতে নৃশংস নির্যাতন করেন সঞ্জীব ভাট ও বজুভাই চাউ নামে এক কনস্টেবল। যাদবকে বেঁধে তাঁর শরীরের নানা জায়গায় বিদ্যুতের শক দেওয়া হয়। এমনকি গোপাঙ্গেও। বাদ যায়নি যাদবের পুত্রও। এই মামলায় ১৯৯৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর মামলা দায়ের হয় সঞ্জীব ভাট ও বজুভাই চাউয়ের বিরুদ্ধে। আদালতের নির্দেশে ২০১৩ সালের ১৫ আগস্ট এফআইআর দায়ের করা হয়। যদিও সেই মামলায় প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস হলেন সঞ্জীব। পাশাপাশি বজুভাই চাউয়ের মৃত্যু হয়েছে আগেই।
উল্লেখ্য, গুজরাট হিংসার তদন্তে নেমে আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একের পর এক অপরাধের অভিযোগ উঠেছিল প্রাক্তন এই আইপিএস সঞ্জীব ভাটের বিরুদ্ধে। ১৯৯০ সালে জামনগরে পুলিশ হেফাজতে নৃশংস নির্যাতনের ফলে এক অভিযুক্তের মৃত্যু হয়। সেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন ভাট। ১৯৯৬ সালে রাজস্থানের এক আইনজীবীকে মাদক মামলা ফাঁসানোর অভিযোগে ২০ বছরের সাজা হয়েছে তাঁর। শুধু তাই নয়, নির্দোষ ব্যক্তিদের হেফাজতে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে অপরাধ স্বীকার করতে বাধ্য করার মতো অভিযোগ বার বার উঠেছে এই প্রাক্তন আইপিএসের বিরুদ্ধে। একাধিক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে বর্তমানে রাজকোটের কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী তিনি। এরই মাঝে ১৯৯৭ সালের এক মামলায় বেকসুর মুক্তি পেলেন সঞ্জীব ভাট।
অবশ্য চাকরি জীবনের শুরু থেকেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সঞ্জীবের নাম। ১৯৯০ সালে জামনগর জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে ছিলেন সঞ্জীব। ১৯৯০ সালে বিহারে বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণীর রথ আটকে দিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল লালুপ্রসাদ যাদবের সরকার। আডবাণী গ্রেপ্তার হওয়ার পর দেশের নানা জায়গায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে ছিল। জামনগর জেলার যোধপুর শহরে দাঙ্গাহাঙ্গামার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৫০ জনকে গ্রেপ্তার করেছিলেন সঞ্জীব। ধৃতদের মধ্যে প্রভুদাস বৈষ্ণানি নামে এক ব্যক্তি ছিলেন। ছাড়া পাওয়ার পরদিনই হাসপাতালে মারা যান ওই ব্যক্তি। প্রভুদাসের ভাই অভিযোগ করেন, পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন সঞ্জীব ও অপর ছয় পুলিশকর্মী তাঁর দাদাকে প্রচণ্ড মারধর করেছেন। শারীরিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই প্রভুদাস মারা গিয়েছেন। সেই মামলাতেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় সঞ্জীবের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.