সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার-প্যান সংযোগ করিয়েছেন? নির্দেশিকা অনেক আগেই জারি হয়েছিল। পরবর্তীকালে তা নিয়ে নানা জটিলতাও দেখা দিয়েছে। জল গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। আপাতত আধার সংযোগের বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও সময়সীমা নেই। তবে এই আর্থিক বর্ষের মধ্যে যাঁরা এ কাজ করে ফেলেছেন, তাঁদের জন্য বিশেষ ভাবনা কেন্দ্রের। আধার-প্যান সংযুক্ত অ্যাকাউন্টে দু’হাজার টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল মোদি সরকার। আরও বেশি সংখ্যক মানুষ যাতে এ কাজ করেন ভোটের আগে তাই নিশ্চিত করতে চলেছে সরকার। আর সে কারণেই এই পদক্ষেপ।
[ চিনে প্রতিনিধিদলকে নেতৃত্ব দিতে মমতাকে অনুরোধ সুষমার ]
নির্দেশিকা জারি হওয়া মাত্র কেউ সাত তাড়াতাড়ি করে ফেলেছিলেন। কেউবা গড়িমসি করে ফেলে রেখেছেন। কথায় বলে, সবুরে মেওয়া ফলে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, যাঁরা আগে করেছেন তাঁরাই এবার লাভের মুখ দেখতে চলেছেন। ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার প্যান সংযোগ যাঁরা ইতিমধ্যেই করে ফেলেছেন, তাঁদের জন্য বিশেষ উপহারের ভাবনা মোদি সরকারের। জানা যাচ্ছে, এই ধরনের অ্যাকাউন্ট পিছু ২ হাজার টাকা উপহার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। আদালতের রায়ে আপাতত আধার-প্যান সংযোগের কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। সে কারণে অনেকেই এ ক্ষেত্রে গা-ছাড়া দিচ্ছেন। এদিকে আধারের ভিত্তিতে সমস্ত পরিষেবাকে এক সূত্রে বেঁধে ফেলার যে পরিকল্পনা কেন্দ্রের তাও এর জেরে একরকম মুখ থুবড়ে পড়েছে। তাই বেশি সংখ্যক মানুষ যাতে এই ব্যাপারে উৎসাহী হয়, সে কারণেই উপহার দেওয়ার সিদ্ধান্ত।
[ হিন্দুত্ব প্রচার ভারতে কাজ করবে না, বিজেপিকে একহাত প্রকাশ রাজের ]
কীভাবে অ্যাকাউন্টে ঢুকবে এ টাকা? তার অবশ্য কিছু পদ্ধতি আছে। বিগত লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রতি অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ করে টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। ক্ষমতায় আসার পর অবশ্য সে দাবি পূরণ করেননি তিনি। তাই অনেকেই এ খবর নিয়ে ধোঁয়াশা প্রকাশ করেছেন। তবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্র সূত্রে খবর, সরাসরি অ্যাকাউন্টে এ টাকা ঢুকবে না। কৌশলে এই উপহার দেওয়া হবে। ব্যাংকে ন্যূনতম ব্যালেন্স জারি রাখার নিয়ম আছে। সেক্ষেত্রেই ফাঁস লাঘব করা হবে। এলাকাভিত্তিতে ন্যূনতম ব্যালেন্সের অঙ্কও আলাদা। এবার প্রতি ক্ষেত্রে দেওয়া হবে বিশেষ ছাড়া। অর্থাৎ যাঁদের অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ৫০০০ টাকা রাখার কথা, তাঁদের ৩০০০ টাকা রাখলেই হবে। তবে শর্ত একটাই। বিগত আর্থিক বর্ষ অর্থাৎ ৩১ মার্চের মধ্যে যাঁরা অ্যাকাউন্টের সঙ্গে প্যান-আধার সংযোগ করে রেখেছেন তারাই এই সুবিধা বা কেন্দ্রীয় উপহারের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তবে গ্রেস পিরিয়ড হিসেবে গোটা এপ্রিল মাসটাকেও গণ্য করা হচ্ছে। অর্থাৎ কেন্দ্রের তোফায় উৎসাহী হয়ে যাঁরা এপ্রিলের মধ্যে সংযোগ করিয়ে নেবেন, তাঁরাও ছাড়ের জন্য বিবেচিত হবেন বলেই সূত্রের খবর।
এদিকে কেন্দ্রীয় এই সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক বিরোধিতা মাথাচাড়া দিয়েছে। বিরোধীদের বক্তব্য, যে বিষয় আদালতের বিচারাধীন, তা নিয়ে এরকম কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না কেন্দ্র। কোনও কোনও মহলের বক্তব্য, নীরব মোদি কাণ্ডের পর ব্যাংকের উপর আস্থা চলে গিয়েছে সাধারণ মানুষের। তা ফেরাতেই এই টোপের বন্দোবস্ত। অন্যদিকে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে আধারের সাফল্য তুলে ধরতেই এই জনমোহিনী ভরতুকি বলেও সরব বিরোধীরা। তবে অর্থমন্ত্রকের তরফে সাফ জানানো হয়েছে, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সংযোগ নেই। ন্যূনতম ব্যালেন্স রাখা নিয়ে এমনিতেই নাজেহাল সাধারণ মানুষ। তাই ব্যাংকগুলির সঙ্গে কথা বলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
[ বিমানসেবিকাদের নগ্ন করে তল্লাশি, সমালোচনার ঝড়ে স্পাইসজেট ]
যেদিন কেন্দ্রের তরফে এই ঘোষণাটি এল, সেদিনের তারিখটার দিকেই দেখুন। সারা দুনিয়ায় এই একটাই দিন রেখে দেওয়া আছে নিছক মজা করার জন্য। দিনটার অস্থিমজ্জাতেই যে লুকিয়ে আছে এ কথা। কত জোক এল গেল, কত জোকই আসবে ব্যাংকটা তো শুধু থেকেই যায়। কিন্তু পয়লা এপ্রিল আর তো কাল থাকবে না। এই নিছক রসিকতা করার লাইসেন্সটুকুও তাই থাকবে না। তাই নাহয় একটু মশকরা আজ মেনেই নিলেন। বরং ভাবুন, ন্যূনতম ব্যালেন্স কম রাখার ঘোষণায় এই যে আপনি মুহূর্তের জন্যও আনন্দিত হয়েছিলেন, তাকে সত্যিই কী বলা যায়? আমাদের ধারণা লালমোহনবাবু থাকলে নিশ্চিতই বলতেন, এ হল অসম্ভবের আনন্দ। আর এই মজাটুকু স্রেফ ভাল থাকার আর SHARE করে নেওয়ার জন্যই।