সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিষমদ খেয়ে ভাইয়ের মৃত্যু হয়নি। তাই ক্ষতিপূরণ বাবদ রাজ্য সরকারের দেওয়া পাঁচ লক্ষ টাকার চেক ফিরিয়ে দিল শহিদ জওয়ানের পরিবার। পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ নিয়ে বৈষম্যের অভিয়োগও উঠল। শহিদ সিআরপিএফ জওয়ানের নাম মুজাহিদ খান (২৪)। গত শনিবার জম্মুর সুঞ্জওয়ান সেনা ক্যাম্পের জঙ্গি হামলায় শহিদ হয়েছেন তিনি। বিহারের ভোজপুরে পিরো গ্রামে তাঁর। ওই গ্রামেই বৃহস্পতিবার জওয়ানের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। বিহার সরকারের প্রতিনিধি ও স্থানীয় পঞ্চায়েতের তরফে কেউই উপস্থিত ছিলেন না জওয়ানের শেষ যাত্রায়।
ক্ষতিপূরণের চেক ফেরত দিয়ে শহিদ জওয়ানের দাদা ইমতিয়াজ খান জানান, “এটা টাকার প্রশ্ন নয়। সম্মানের প্রশ্ন। একই হামলায় অন্য শহিদের পরিবারকে দেওয়া হয়েছে ১১ লক্ষ টাকার চেক। তখন আমার ভাইয়ের ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ অর্ধেকের কম কেন? জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। বিষমদ খেয়ে নয়। সরকারি নিয়মানুসারে বিষমদ খেয়ে কোনও ব্যক্তির মৃত্যু হলে, তাঁর পরিবারকে চার লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়।”
এই প্রসঙ্গে ভোজপুরের জেলা শাসক শশাঙ্ক শুভঙ্কর বলেন, “সরকারি নির্দেশ মাফিক পাঁচ লক্ষ টাকার চেক নিয়ে শহিদ জওয়ানের বাড়িতে গিয়েছিলাম। তবে পরিবারের তরফে চেক গ্রহণ করা হয়নি। ইতিমধ্যেই এই খবর উপরমহলে জানিয়েছি। পরবর্তী সরকারি নির্দেশিকার অপেক্ষায় রয়েছি।”
জানা গিয়েছে, বিহার সরকারের নিয়ম অনুযায়ী, আধাসামরিক বাহিনীর জওয়ান শহিদ হলে, তাঁর পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। একই ঘটনা সেনা জওয়ানের ক্ষেত্রে ঘটলে দেওয়া হয় ১১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ। রাজ্য সরকারের এই ক্ষতিপূরণ নীতির বৈষম্য নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন মৃত জওয়ানের দাদা।
সিআরপিএফ জওয়ান মুজাহিদ খান শ্রীনগরের করণ নগরে সিআরপিএফ ক্যাম্পে জঙ্গি হানায় শহিদ হয়েছেন। গত সোমবার দুই সশস্ত্র লস্কর জঙ্গি সংশ্লিষ্ট সিআরপিএফ ক্যাম্পে ঢুকে গুলি বর্ষণ শুরু করে। প্রাথমিক আঘাত কাটিয়ে উঠে পালটা আক্রমণে যায় উপস্থিত সেনা জওয়ানরা। পরে পাশের একটি নির্মীয়মাণ বাড়িতে আত্মগোপন করে দুই জঙ্গি। ৩০ ঘণ্টারও বেশি সময় গুলির লড়াইয়ের পর মৃত্যু হয় দুই জঙ্গির। এই গুলিবর্ষণে শহিদ হন সিআরপিএফ জওয়ান মুজাহিদ খান।
গত রবিবার জম্মুর সেনা হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে সেনা জওয়ান কিশোর কুমার মুন্নার। তিনি উপত্যকার পুঞ্চ সেক্টরের এক সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলেন। চলতি মাসের প্রথম দিকে পাক সেনার গোলার আঘাতে আহত হন তিনি। তারপর থেকে সেনা হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন। গত রবিবার ওই হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বুধবার বিহারের খাগড়ার নিজের বাড়িতে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। শহিদ সেনা জওয়ানের পরিবারকে ১১ লক্ষ টাকার চেক দিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে জওয়ানের শেষকৃত্যে রাজ্য সরকারের তরফে কোনও প্রতিনিধিই উপস্থিত ছিলেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.