সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে ইজরায়েলের কাছ থেকে ৩০০০টি অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল ‘স্পাইক’ কিনতে চলেছে ভারত। এই নিয়ে ইজরায়েলের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদি সরকারের প্রাথমিক কথাবার্তা হয়ে গিয়েছে। সে দেশের প্রতিরক্ষা সচিব অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল উরি আদমের সঙ্গে ভারতীয় প্রতিরক্ষা সচিব সঞ্জয় মিত্র এই বিষয়ে সোমবার একদফা বৈঠক সেরেছেন।
এদিনই ২ দিনের ভারত সফরে এসেছেন ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা সচিব। তাঁর এই সফরের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে সাউথ ব্লকের কাছে। কারণ, এই সফরেই রাফায়েল অ্যাডভান্সড ডিফেন্স সিস্টেম-এর কাছ থেকে প্রায় ৩ হাজার স্পাইক মিসাইল ক্রয়ের চুক্তি চূড়ান্ত হতে পারে। দুই বন্ধু রাষ্ট্রের মধ্যে ‘গভর্মেন্ট টু গভর্মেন্ট’ রুটে অতি দ্রুত ও সস্তায় যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুর ট্যাঙ্ক ধ্বংস করতে এই মিসাইল কিনতে চায় ভারত। গোটা প্রকল্পের রূপায়নের দায়িত্বে রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব বাঙালি সঞ্জয় মিত্র। এই চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়িত হলে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ‘নাগ’ মিসাইল সেনার হাতে আসার আগে জরুরি চাহিদা পূরণ করতে পারবে।
জানুয়ারি মাসেই ইজরায়েলের সঙ্গে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি একটি চুক্তি বাতিল করেছে ভারত। ওই চুক্তিতে মোতাবেক ভারতেই ‘ট্রান্সফার অফ টেকনোলজি’ মারফত স্পাইক মিসাইলগুলি তৈরি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেক্ষেত্রে মিসাইলগুলির দাম বেশি পড়ছিল। ‘টেক ট্রান্সফার’-এর বিষয়টি না থাকায় এখন তুলনায় মিসাইলগুলি খানিকটা সস্তা পড়বে। এই চুক্তির সমান্তরালেই ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অরগানাইজেশন বা DRDO নাগ মিসাইল তৈরি করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে জোরকদমে। কিন্তু ওই মিসাইল তৈরি হওয়ার আগে ইজরায়েলের কাছ থেকে ‘স্পাইক’ কেনায় আপত্তি নেই ওই কেন্দ্রীয় সংস্থারও। নাগ মিসাইলে রয়েছে ‘হিট-সিকার গাইডেন্স সিস্টেম’। থার্ড জেনারেশন এই মিসাইলের পাল্লা ৪ কিলোমিটারেরও বেশি।
স্পাইক মূলত একটি ‘ফায়ার অ্যান্ড ফরগেট’ মিসাইল। ১৯৮০ থেকে এর বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়। যুদ্ধক্ষেত্রে এই মিসাইলের চাহিদা ও জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। একজন সেনা এই মিসাইল ছুড়েই নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটে যেতে পারেন, তাঁর প্রাণ সঙ্কটে পড়ে না। ২০১৪-তে আমেরিকা যখন নয়াদিল্লিকে এই একই ধরনের জ্যাভলিন মিসাইল দিতে চেয়েছিল, তখন সেটা না নিয়ে ভারত ঝুঁকেছিল ইজরায়েল নির্মিত এই স্পাইক মিসাইলের দিকে। পদাতিক সেনা কাঁধে করে এই মিসাইল বয়ে নিয়ে যেতে পারে যেখানে খুশি। যুদ্ধক্ষেত্রে খুব কাছাকাছি থাকা শত্রুর ট্যাঙ্ক বা যুদ্ধবিমানকে চোখের নিমেষে ধ্বংস করতে পারে এই মিসাইল। ধরা যাক শত্রু বেশ খানিকটা দূরে রয়েছে, দৃষ্টিসীমার বাইরে। সেক্ষেত্রে ‘হিট-সিকার’ মোড অন করে এই মিসাইল ছুড়ে দেওয়া যায়। দুশমনের পদচারণায় তৈরি হওয়া উত্তাপকে ব্যবহার করে হামলা চালায় স্পাইক মিসাইল। আপাতত ভারতীয় সেনা জরুরি ভিত্তিতে ৩০০০ স্পাইক মিসাইল চাইছে। তবে ইজরায়েল খানিকটা সস্তায় দিলে আরও মিসাইল কিনতে পারে ভারত।
কীভাবে কাজ করে এই স্পাইক মিসাইল, দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.