সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঝাড়খণ্ডে পাঁচ এনজিও কর্মীর গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত রয়েছেন মিশনারি স্কুলের ফাদার। তিনিই পাঁচ মহিলা কর্মীকে দু’ঘণ্টার জন্য দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যেতে বলেন। তদন্তে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের হাতে। ঘটনাটি ঝাড়খণ্ডের খুন্তি জেলার কোচাং গ্রামের। এনজিওর মহিলাকর্মীদের অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনায় ফাদার আলফানসোর হাত রয়েছে। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চলছে তদন্ত।
জানা গিয়েছে, গত বুধবার গ্রামের মহিলাদের মধ্যে সচেতনতার প্রচারে এসেছিলেন এনজিও কর্মীরা। গ্রামের মিশনারি স্কুলের প্রধান ফাদার আলফানসোর আমন্ত্রণে সেখানে যান তাঁরা। সচেতনতার বার্তামূলক একটি নাটকও অভিনয় করে দেখান। অভিযোগ, নাটক চলাকালীন ঘটনাস্থলে প্রায় জোর করে ঢুকে পড়ে দুষ্কৃতী দলটি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত মহিলাদের উত্যক্ত করাও শুরু হয়ে যায়। এই দেখে ফাদার সন্ন্যাসিনীদের ছেড়ে দিতে বলেন। একই সঙ্গে দুষ্কৃতীরা চাইলে পাঁচ এনজিও কর্মীকে নিয়ে যেতে পারে, তাও জানিয়ে দেন ফাদার। এমনকী, পাঁচজন মহিলাকে দু’ঘণ্টার জন্য দুষ্কৃতীদের সঙ্গে তিনিই যেতে বলেন বলেও অভিযোগ। এদিকে চারঘণ্টা পরে নির্যাতিতা মহিলারা ওই স্কুলে ফিরে এলে এনিয়ে থানায় অভিযোগ জানাতে নিষেধও করেন ফাদার। এমনকী, ফাদারের অভিযোগ না মেনে কেউ যদি থানায় যায়, তাহলে নির্যাতিতার পরিবারের লোকজন বিপদে পড়তে পারেন, এই হুঁশিয়ারি দেন আলফানসো।
উল্লেখ্য, বিষয়টি নিয়ে দু’দিন চুপচাপ থাকলেও শুক্রবার স্থানীয় থানায় গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন পাঁচ নির্যাতিতা। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতেই ওইদিন রাতে দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নির্যাতিতা ও অভিযুক্তদের আলাদা আলাদা করে জেরা করেন তদন্তকারী অফিসাররা। এই জিজ্ঞাসাবাদেই গণধর্ষণের ঘটনায় ফাদারের যুক্ত থাকার ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়। জেরার পর ধৃতদের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এদিকে গণধর্ষণের ঘটনায় ফাদারের যুক্ত থাকার খবরটিকে ভুয়ো বলে দাবি করেছেন মিশনারির অন্য কর্তারা। তাঁদের দাবি, ফাদার আলফানসোকে ফাঁসানো হচ্ছে।এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই পালটা দিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের এডিজে আরকে মালিক। তিনি জানিয়েছেন, এনজিওর মহিলাকর্মীদের গণধর্ষণের ঘটনায় মিশনারির প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে। সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে ফাদারের। নাহলে তিনি কেন সন্ন্যাসিনীদের আড়াল করে পাঁচ মহিলাকর্মীকে দুষ্কৃতীদের দিকে ঠেলে দিলেন? একই সঙ্গে নির্যাতিতাদের থানায় অভিযোগ জানাতে নিষেধ করলেন। নিষেধ না মানলে বিপদের হুমকিও দিলেন। এইসব ঘটনাই ফাদারের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলার জন্য যথেষ্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.