অর্ণব দাস, বারাকপুর: ১১ দিন ধরে পুলিশের সঙ্গে লুকোচুরির খেলেও শেষরক্ষা হল না। নৈহাটিতে তৃণমূল কর্মী সন্তোষ যাদবকে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বলে চিহ্নিত রাজেশ সাউকে উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেপ্তার করল বারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ। সোমবার রাতে উত্তরপ্রদেশের বালিয়া জেলার ফেফনা থানা এলাকায় স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় বারাকপুর কমিশনারেটের তৈরি সিটের দুই অফিসার সত্যনারায়ণ পাণ্ডে ও অরিত্র চন্দ্র ফেফনার প্রত্যন্ত গ্রামের একটি খাটালে অভিযান চালান। তাতেই ধরা পড়ে রাজেশ ও তার সঙ্গী বিশাল। ঘুমের ঘোরে থাকা দুজন পুলিশি অভিযান সম্পর্কে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাদের হাতকড়া পরিয়ে দেওয়া হয়। ট্রানজিট রিমান্ডে আনা হচ্ছে বারাকপুরে।
গত ৩১ জানুয়ারি দুপুরে টোটোয় চড়ে যাওয়ার সময় খুন হন নৈহাটির তৃণমূল কর্মী সন্তোষ যাদব। দুটি বাইকে মোট ৬ মিলে টোটোটি ঘিরে ধরে সেখান থেকে তাঁকে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করে। তারপরই গা ঢাকা দেয় সকলে। সিসিটিভিতে হত্যাকাণ্ডের ভিডিও দেখেই পুলিশ অভিযুক্তদের খোঁজ শুরু করে। বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ একটি সিট গঠন করে তদন্তে নামে। তনদন্তকারীরা জানতে পারেন, গত ৩১ তারিখ সন্তোষ যাদবকে খুনের পরই ভিনরাজ্যে গা ঢাকা দেয় খুনের সঙ্গে জড়িত মূল আসামী রাজেশ ও তার সহযোগীরা। সিট সদস্যরা চারটি দলে ভাগ হয়ে দুটি করে দলকে পাঠানো হয় বিভিন্ন রাজ্যে। তারা নিজেদের পুলিশ পরিচয় গোপন করে বিহারের বেগুসরাই, কখনও আবার উত্তর প্রদেশের সিকন্দারপুরের প্রত্যন্ত গ্রামে ঘুরে বেড়িয়েছেন।
সিট সদস্য সত্যনারায়ণ পাণ্ডে ও অরিত্র চন্দ্রর প্রশ্ন ছিল একটাই। সামনে যাঁকেই দেখেন, তাঁকেই জিজ্ঞাসা করেন, বাংলা থেকে কেউ এসেছে? উত্তর আসে, জানা নেই। এর মাঝে রবিবার খাঁটি খবর পান সিট সদস্যরা। জানতে পারেন, দুদিন ধরে দুজন ওই এলাকায় এসে রয়েছে কাজের জন্য। তাদের বাড়ি বাংলায়। তাতেই মোটের উপর নিশ্চিত হন তাঁরা। গভীর রাতে ফেফনার একটি খাটালে অভিযান চালান। ধরা পড়ে রাজেশ ও তার সাগরেদ বিশাল। সোমবার তাদের বালিয়া জেলার সিজেএম আদালতে তোলা হলে আদালত ৪ দিনের ট্রানজিট রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। মঙ্গলবারই তাদের বারাকপুরে নিয়ে আসা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.