Advertisement
Advertisement

এক রোগের পাঁচ চিকিৎসা, দিল্লিতে চালু পলিক্লিনিক

অ্যালোপ্যাথি, আয়ুর্বেদ, হোমিওপ্যাথি, ইউনানি, ন্যাচ্যারোপ্যাথি – আরোগ্যের সব উপায় মিলবে এক ছাদের তলায়৷

Multi-Speciality Polyclinic in Delhi
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 23, 2016 11:42 am
  • Updated:October 23, 2016 11:42 am

জ্যোতির্ময় কর্মকার, নয়াদিল্লি: পেটের ব্যামো হোক বা ডায়াবেটিস৷ সমস্যা যাই হোক না কেন, আরোগ্যের ধরন-ধারণটাই বদলে যেতে চলেছে রাতারাতি৷ ধরুন,  ডায়াবেটিসের ভোগান্তি নিয়ে গেলেন সরকারি হাসপাতালের ওপিডিতে৷ পছন্দমতো স্পেশালিস্ট ডাক্তারকে লাইন দিয়ে দেখিয়ে চলে আসবেন, তা হবে না৷ পঞ্চপাণ্ডবের মতো একসঙ্গে আপনার সামনে হাজির হবেন পাঁচ পাঁচজন ডাক্তার৷ অ্যালোপ্যাথির ডাক্তারবাবু যেমন থাকবেন, তেমন থাকবেন আয়ুর্বেদ, হোমিওপ্যাথি, ইউনানি এবং ন্যাচ্যারোপ্যাথির বিশেষজ্ঞ ডাক্তারবাবুরাও৷

আপাদমস্তক আপনাকে খুঁটিয়ে দেখবেন সকলেই৷ এর পর শুরু হবে চিকিৎসার দায়িত্বভাগ৷ অ্যালোপাথির ডাক্তারবাবু যদি আপনাকে ইনসুলিন বা প্রয়োজনমতো ট্যাবলেট দেন, তবে ন্যাচ্যারোপ্যাথির ডাক্তারবাবুও দেখিয়ে দেবেন অবশ্য করণীয় যোগ আসন৷ পুরিয়া করে বা কাচের স্লিম শিশিতে ওষুধ দিয়ে দেবেন হোমিওপ্যাথি  ডাক্তারবাবু৷ ডায়েট চার্ট তৈরি করে দেবেন আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরাও৷

Advertisement

আপাতভাবে পুরো ব্যাপারটাই গল্প মনে হলেও এখন এটাই সত্যি৷ দিল্লির ল্যুতিয়েন এলাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জায়গা গোলমার্কেটে চালু হয়ে গেল এমনই একটি পলিক্লিনিক৷ কেন্দ্রীয় আয়ুষ মন্ত্রক এবং নিউ দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন বা এনডিএমসি-র যৌথ উদ্যোগে এই ক্লিনিকে চিকিৎসা পরিষেবার সব পদ্ধতিই ব্যবহার করবেন বিভিন্ন বিভাগের ডাক্তারবাবুরা৷ গোটা দেশজুড়েই এই সমন্বিত চিকিৎসা পদ্ধতির মডেলকে প্রয়োগ করার পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের৷ স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংয়ের দাবি, “চিকিৎসা পদ্ধতির বিভিন্ন বিভাগগুলির মধ্যে ভাগাভাগি না করে রেখে সমন্বয় সাধন করাই এখন আমাদের লক্ষ্য৷ প্রতিটি বিভাগের সেরা বিষয়গুলিকে গ্রহণ করে চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারি আমরা৷ আর এতে আখেরে লাভবান হবেন রোগীরাই৷”

Advertisement

এই সুসংহত চিকিৎসাপদ্ধতি ইতিমধ্যেই জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেছে৷ শুধু দিল্লি-ই নয়, এনসিআরের আশে-পাশের এলাকা থেকেও রোগীরা আসছেন চিকিৎসা করাতে৷ কীভাবে এত ভরসা?  ক্লিনিকে আসা বেশ কয়েকজন জানালেন, তাঁদের পরিচিতরা হাতেনাতে ফল পেয়েছেন, তাই তাঁরাই এখানে আসার পরামর্শ দিয়েছেন৷ আবার কেউ কেউ বলছেন, পদ্ধতির কথাটা জেনে তাঁদের ভালো লেগেছে৷ তাই তাঁরা নিজে থেকেই এসছেন চিকিৎসা করাতে৷

আয়ুর্বেদ এবং হোমিওপ্যাথি, ইউনানিকে ফের মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় করে তুলতে ইতিমধ্যেই একাধিক পদক্ষেপ করেছে নরেন্দ্র মোদির সরকার৷ ক্ষমতায় এসেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে আলাদা করে গড়ে তোলা হয়েছে আয়ুষ মন্ত্রককে৷ ঝাঁ চকচকে জিম-এ বডি বিল্ডিংয়ের যুগেও আলাদা শহুরে ‘স্ট্যাটাস’ পাচ্ছে যোগাসন৷ সরকারিভাবে রাষ্ট্রসঙ্ঘে লাগাতার তদ্বির চালিয়ে ২১ জুন তারিখটিকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস হিসাবে ঘোষণা করানো হয়েছে৷

এবার চিকিৎসার সব পদ্ধতিগুলিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে এসে একযোগে ব্যবহার করাই লক্ষ্য৷ মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংয়ের কথায়, “ভারতীয় ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাব্যবস্থাকেই সরকারি উদ্যোগে আধুনিক রূপে ফিরিয়ে আনতে চাই আমরা৷” সে‌ক্ষেত্রে গোল মার্কেটের পলিক্নিনিকের সাফল্যের অভিজ্ঞতাকেই আগামী দিনের রূপরেখা তৈরির জন্য ব্যবহার করবে সরকার৷ পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই ক্লিনিকে কয়েকদিনের মধ্যেই কাউন্সিল অফ সায়েণ্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ বা সিএসআই-এর ওষুধ বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ করা হবে৷ থাকবেন অ্যালোপাথির ওষুধ বিশেষজ্ঞরাও৷ ভালভাবে সব দিক যাচাই করেই চূড়ান্ত হবে যে কোনও রোগের ওষুধ৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ