সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এখনও অনেককেই বলতে শোনা যায় মনুষ্যত্ব বলে কিছু নেই। বিপদে পড়া মানুষের সাহায্যে আর কেউ এগিয়ে আসে না। কিন্তু এই কথাটিকেই এবার ভুল প্রমাণ করলেন মুম্বইয়ের এক দম্পতি। ২০১১ সালে ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিল একমাত্র ছেলে। চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে গিয়েছিল ২৩ বছর বয়সি নিমেশ তান্না। না, ছেলের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েননি প্রদীপ তান্না এবং দময়ন্তী তান্না। তাঁরা ছেলের নামে একটি ট্রাস্ট খোলেন। এবং ছেলের স্মৃতিতে গৃহহীন বয়স্ক মানুষদের মুখে তুলে দিচ্ছেন খাবার। দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর ধরে প্রতিদিন একই কাজ করে চলেছেন তাঁরা। নিজেদের এলাকার ১১০ জন বয়স্ক বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাকে বিনামূল্য খাবার খাওয়াচ্ছেন তান্না দম্পতি। সম্প্রতি সামনে এসেছে তাঁদের এই মহৎ উদ্যোগের খবর। আর তারপর থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে প্রশংসা পাচ্ছেন তাঁরা।
সর্বভারতীয় সংবাদসংস্থা এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দময়ন্তী বলেন, ‘আমরা ১১০ জন বয়স্ক মানুষের জন্য খাবার তৈরি করি। এছাড়া প্রত্যেক মাসে ১০০ জনের হাতে খাদ্যশস্য তুলে দিয়ে থাকি। শুধু তাই নয়, আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় গরিব শিশুদের পোশাক, বই এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে দিয়েছি। এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যাঁদের সন্তানরা মা-বাবার খেয়াল রাখে না, আবার এমন অনেকে আছে, যাঁরা কিনা আমাদের মতোই সন্তান বা কাছের কাউকে হারিয়েছেন। তাঁদেরই আমরা বিনামূল্যে খাবার দিয়ে থাকি। সমস্ত আয়োজনই আমরা নিজেরা করে থাকি। আর বন্ধুবান্ধব-আত্মীয়স্বজনরা কিছুটা সাহায্য করে থাকেন।’
এদিকে, প্রদীপ তান্না বলেন, ‘ছেলের মৃত্যুর পর আমরা খুব ভেঙে পড়েছিলাম। কী করব বুঝতে পারছিলাম না। কিন্তু পরে আমরা ঠিক করি এমন কিছু করব, যার মধ্যে দিয়ে আমাদের ছেলের স্মৃতি বেঁচে থাকবে। এরপর প্রায় দেড় বছর পর আমার স্ত্রী এই উপায়টি বের করেন। আমরা কখনই জাতপাত, ধর্মের ভেদাভেদ করি না। যাঁদের বয়স ৬০ -এর বেশি এবং যাঁদের সত্যিই খাবারের প্রয়োজন হয়, তাঁদেরই সাহায্য করি।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.