Advertisement
Advertisement

Breaking News

‘আমার উত্তরসূরি ভারত থেকেই’, চিনকে চ্যালেঞ্জ দলাই লামার

তিব্বতিদের মাথার উপর ‘পুতুল ধর্মগুরু’ বসাতে চায় চিন।

My successor will come from India, says Dalai Lama
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:March 20, 2019 10:37 am
  • Updated:March 20, 2019 10:37 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরসূরি নির্বাচন প্রসঙ্গে সরাসরি চিনকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামা। মঙ্গলবার তিনি সাফ জানিয়েছেন, তাঁর উত্তরসূরি আসবেন ভারত থেকেই। চিন থেকে নয়। চিন কাউকে পরবর্তী দলাই লামা হিসেবে বেছে নিলে তিব্বতিরা এবং বিশ্বের বৌদ্ধ সম্প্রদায় তাঁকে কিছুতেই মেনে নেবেন না।

দলাই লামার এই ঘোষণার পর স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ বেড়েছে চিনের। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও বেজিং যে তিব্বত নিয়ে চাপে রয়েছে তা তাদের সাম্প্রতিক অবস্থান থেকেই স্পষ্ট। কারণ নিজেদের তাঁবেদার নাবালক বা অনুগত কোনও বৌদ্ধ ভিক্ষুকে দলাই লামার উত্তরসূরি দাঁড় করাতে চিন মরিয়া। এর ফলে ‘পুতুল ধর্মগুরু’ মাথার উপর বসিয়ে তিব্বতিদের উপর এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপর সবরকমভাবে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে চায় চিন। এটা কিছুতেই হতে দিতে চান না দলাই লামা। কারণ তাঁবেদার ধর্মগুরু মাথার উপর বসিয়ে কমিউনিস্ট চিন তিব্বতিদের ও বৌদ্ধদের উপর নিরঙ্কুশ প্রাধান্য বজায় রাখতে চায়। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সোমবার এ ব্যাপারে স্পষ্ট ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ৬০ বছর আগে ভারতে আশ্রয় নেওয়া চতুর্দশ দলাই লামা। চিনের লালফৌজের হাত থেকে বাঁচতে লাসা থেকে সেনার ছদ্মবেশে সে দিন বেরিয়ে পড়েছিলেন তিনি। দু’দিন দু’রাত পায়ে হেঁটে, ব্রহ্মপুত্র নদ পেরিয়ে, দুর্গম হিমালয়ের বাধা টপকে দলাই ভারতে পৌঁছেছিলেন ১৯৫৯ সালের ১৭ মার্চ। চিন-অধিকৃত তিব্বত ছেড়ে পালিয়ে আসা দলাই লামা, তাঁর পরিবার স্বজন ও অনুগামীদের ভারত আশ্রয় দিয়েছিল হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায়।

Advertisement

সেই ধর্মশালায় গাছে ভরা ছোট ছোট পাহাড় আর তুষারে ঢাকা সুউচ্চ পর্বতে ঘেরা বৌদ্ধ মন্দিরের পাশে তাঁর অফিসে বসে নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী চতুর্দশ লামা বলেছেন, ‘‘সে দিন চিন তিব্বতিদের ভাষা আর সংস্কৃতির স্বাধীনতার দাবি মেনে নেয়নি। আমাদের দমিয়ে দিতে লালফৌজ নামিয়ে রক্তের নদী বইয়ে দিয়েছিল তিব্বতে। আজও বেজিং আমার মৃত্যুর পর তাদের পছন্দের দলাই লামা বেছে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাতে চিনেরই উদ্বেগ বাড়বে। তিব্বতিরা সেই লামাকে মেনে নেবেন না।’’ ৮৩ বছরের চতুর্দশ দলাই লামা চিনকে কটাক্ষ করে জানিয়েছেন, “দলাই লামার ‘পুনরাবির্ভাব’-এর জন্য এখন তো দেখছি তিব্বতিদের থেকে বেজিংই বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে। আমি খুব অবাক হব না, যদি আমার মৃত্যুর পর আপনাদের দু’জন দলাই লামাকে দেখতে হয়। তাঁদের মধ্যে আমার এক জন উত্তরসূরি হবেন ভারত থেকে। আর এক জনকে নিজেদের স্বার্থরক্ষার জন্য বেজিং বেছে নেবে। এজন্য জাল উত্তরসূরিকে বেছে নেবে চিন। তিব্বতিদের স্বাধীনতার আকাঙ্খা দমিয়ে রাখতেই চিন এটা করবে। চিন আমার পরের দলাই লামা নিয়ে বেশি চিন্তাভাবনা করছে। বেজিংয়ের বক্তব্য, চিনের ঐতিহ্যশালী ঐতিহাসিক রাজবংশের নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী দলাই লামা বেছে নেওয়ার অধিকার তাদেরই। কিন্তু বেজিং এটা জেনে রাখুক শেষ কথা বলবেন বৌদ্ধ ধর্মাবলাম্বী তিব্বতের মানুষই। তাঁরা যদি লামাদের বাঁচিয়ে রাখতে চান, তা হলে লামারা থাকবেন। আর তখনই প্রশ্ন উঠবে কে হবেন পরবর্তী দলাই লামা। স্বাভাবিকভাবেই তিব্বতি ও খাঁটি বৌদ্ধরা এবং পশ্চিমি দুনিয়া স্বীকৃতি দেবে ভারতে নির্বাসিত তিব্বতিদের উত্তরসূরিকে। চিনের চাপিয়ে দেওয়া লামাকে তাঁরা স্বীকৃতি দেবেন না।” চিন অবশ্য বরাবরই দলাই লামাকে চিনের পক্ষে ক্ষতিকারক ‘বিপজ্জনক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা’ তকমা দিয়েছে। যদিও আমেরিকা, ইউরোপ, ভারত তা মানতে রাজি নয়।

Advertisement

[ইদাইয়ের কোপে বিপর্যস্ত আফ্রিকার দুই দেশ, মোজাম্বিক ও জিম্বোবোয়েতে মৃত কমপক্ষে ১২৭]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ