ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাওবাদমুক্ত ভারতের লক্ষ্যে লাগাতার অভিযান জারি রয়েছে ছত্তিশগড়জুড়ে। গত কয়েকমাসে শতাধিক শীর্ষ স্থানীয় কমান্ডারের মৃত্যুতে কোমর ভেঙে গিয়েছে মাওবাদী সংগঠনগুলির। প্রাণের দায়ে আত্মসমর্পণের পথে হেঁটেছে বেশিরভাগ মাওবাদী। এই পরিস্থিতিতে সরকারের কাছে এক মাসের যুদ্ধবিরতি আর্জি জানিয়ে লিখিত বার্তা দিল মাওবাদীদের উত্তর-পশ্চিম সাব-জোনাল ব্যুরো। শান্তি আলোচনার লক্ষ্যে গত ১৭ এপ্রিল মাওবাদীদের তরফে এই লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।
গত ৮ এপ্রিল যুদ্ধবিরতির আর্জি জানিয়ে একটি চিঠি প্রকাশ করেছিল মাওবাদীরা। সেই চিঠির রেশ ধরেই দ্বিতীয় চিঠিতে মাওবাদীদের তরফে জানানো হয়েছে, ‘অভিযানের নামে চলা এই হত্যাকাণ্ড অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। বরং সমস্যা সমাধানে মনোযোগ দেওয়া উচিত। শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই তা সম্ভব।’ মাওবাদীদের তরফে জানানো হয়েছে, ‘আমাদের এই আবেদন কোনও রণনীতি নয়। দুই পক্ষই যদি আলোচনায় রাজি হয় সেক্ষেত্রে এই যুদ্ধবিরতি একান্ত প্রয়োজনীয়। শান্তি আলোচনার অনুকুল পরিবেশ তৈরির জন্য এটা প্রয়োজন। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষা করব আমরা।’
যুদ্ধবিরতি চেয়ে ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে মাওবাদীদের প্রথম চিঠিতে সরকারের তরফে পালটা প্রতিক্রিয়ায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল মাওবাদীরা যদি শান্তি চায় সেক্ষেত্রে সরকার সদর্থক পদক্ষেপ নেবে। তার ভিত্তিতেই দ্বিতীয় চিঠিতে মাওবাদীদের তরফে জানানো হয়েছে, যুদ্ধবিরতি না হলে মাওবাদীদের বিভিন্ন জোনাল কমান্ডারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা যাচ্ছে না। বিভিন্ন অঞ্চলের মাও নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে একাধিক নেতার মৃত্যু হয়েছে। যার জেরেই শান্তি আলোচনা সম্পন্ন করতে এক মাসের যুদ্ধবিরতির দাবি জানাল মাওবাদীরা। এই বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলিকেও এগিয়ে আসার আর্জি জানানো হয়েছে মাওবাদীদের তরফে।
২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে মাওবাদমুক্ত ভারত গড়ার বার্তা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছত্তিশগড়ে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর মাওবিরোধী অভিযান আরও গতি পেয়েছে। ২০২৪ সালে বস্তার অঞ্চলে নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানে মৃত্যু হয়েছে ২৮৭ জন মাওবাদীর। গ্রেপ্তার হয়েছে হাজারেরও বেশি, পাশাপাশি আত্মসমর্পণ করেন ৮৩৭ জন। এরপর চলতি বছরে মাত্র ৩ মাসে এখনও পর্যন্ত ১৩০ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। শুধুমাত্র বস্তার রেঞ্জে সংখ্যাটা ১১০। মৃত মাওবাদীদের মধ্যে ‘মাথার দাম’ রয়েছে এমন বহু শীর্ষ স্থানীয় কমান্ডার নিকেশ হয়েছে। মাও অধ্যুষিত জেলার সংখ্যা ১২ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৬। একদা বস্তার রেঞ্জের মাও অধ্যুষিত বড়েশেট্টি গ্রাম মাওবাদী মুক্ত বলে ঘোষিত হয়েছে। কার্যত কোমর ভেঙে যাওয়ার পর এবার সরকারকে এক মাসের জন্য যুদ্ধ বিরতির আর্জি জানিয়ে শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দিল মাওবাদীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.