সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অজ্ঞাতবাস পর্বে অবশষে নীরবতা ভাঙলেন নীরব মোদি। রীতিমতো চিঠি দিয়ে পিএনবিকে জানালেন তিনি ঋণ মেটাতে চান। কিন্তু যেভাবে দেশ জুড়ে তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযান চলছে তাতে বকেয়া অর্থ ফেরানোর পথ বন্ধ হতে বসেছে। তাঁর সংস্থার ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।
[দুবাইয়ে কি গা ঢাকা দিয়েছেন নীরব? জেলে ঢোকানোর ইঙ্গিত বাবা রামদেবের]
এখানেই শেষ নয়, পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে আর্থিক কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার আগেই চুপিসারে নিজের ‘স্টেটাস’ বদলে ফেলেছিলেন বিতর্কিত কোটিপতি হীরে ব্যবসায়ী নীরব মোদি। ছিলেন ‘রেসিডেন্ট ইন্ডিয়ান’ অর্থাৎ এ দেশে বসবাসকারী ভারতীয়। হয়ে গিয়েছেন ‘নন রেসিডেন্ট ইন্ডিয়ান’ বা প্রবাসী ভারতীয়। তাঁর পাসপোর্ট আদৌ ভারতীয় কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। বেলজিয়ামের অ্যান্টোয়ার্পে বড় হওয়া নীরব ভাইয়ের মতোই সে দেশের নাগরিকত্ব নিয়েছেন কি না, তা নিয়েও চলছে জল্পনা। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, নীরব এখন কোথায়? প্রথমে শোনা যাচ্ছিল, এই বিতর্কিত ব্যবসায়ী সপরিবার নিউ ইয়র্কে রয়েছেন। কিন্তু বিভিন্ন সূত্রে একাধিক দাবি উঠে এসেছে। কেউ বলছেন সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, কারও মত সুইজারল্যান্ড বা ইউরোপের কোনও দেশে নীরব লুকিয়ে আছেন। তবে সূত্রের খবর, তাঁর আইনজীবীর দল ইতিমধ্যে দুবাই পৌঁছেছে। সব মিলিয়ে রুদ্ধশ্বাস গোয়েন্দা কাহিনির মতোই এগোচ্ছে পিএনবি কেলেঙ্কারি ও তার খলনায়কের গতিবিধি, যাত্রাপথ ও কার্যকলাপ। তবে শনিবার এই নাটকে নয়া মোড়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে লেখা নীরবের একটি চিঠির খবর প্রকাশ্যে আসে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি পিএনবি কর্তৃপক্ষকে কার্যত দুষে লিখেছেন টাকা ফেরতের কোনও পথ তারা আর খোলা রাখলেন না।
[৮০০ কোটির ঋণখেলাপ, সিবিআইয়ের জালে রোটোম্যাক কর্তা]
ব্যবসায় আসার পর থেকে তাঁর চমকপ্রদ উত্থান–বরাবরই নীরব মোদির পরিচয় ছিল ভারতীয়। ব্যাঙ্কের নথি থেকে সরকারি কাগজপত্র, সর্বত্রই এই পরিচয় সামনে এসেছে। সেই পরিচয়েই তিনি পিএনবি-সহ অন্য ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছেন। কিন্তু সেই পরিচয়টাই পাল্টে গিয়েছে ২০১৭-র ৬ নভেম্বরের পর থেকে। নীরব মোদির সংস্থা এএনএম এন্টারপ্রাইজেস প্রাইভেট লিমিটেডের জমা দেওয়া সার্টিফায়েড কপি জানাচ্ছে, তিনি অনাবাসী ভারতীয়! কবে, কীভাবে এই বদল ঘটল, কেউ জানে না? এমনকী, পিএনবি বা ঋণদাতা অন্য ব্যাঙ্কগুলিও এ ব্যাপারে ওয়াকিবহাল কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
[প্রতি ৪ ঘণ্টায় জালিয়াতিতে ধরা পড়েন ১ ব্যাংককর্মী, আরবিআই রিপোর্টে হইচই]
যেমন সংশয় রয়েছে নীরবের অবস্থান ঘিরেও। সরকারের শীর্ষ মহল মনে করছে, নীরব আপাতত সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে গা-ঢাকা দিয়েছেন। সেখান থেকেই তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছেন। একই সঙ্গে রয়েছেন কেলেঙ্কারিতে অন্যতম অভিযুক্ত তথা তাঁর মামা মেহুল চোকসিও। নীরবের আইনজীবীরা সম্প্রতি দুবাইয়ে পৌঁছনোয় সরকারের সেই সন্দেহ জোরদার হয়েছে। কিন্তু নিঃসন্দেহ নন গোয়েন্দারা। বিশেষত সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম বা ইউরোপের অন্য কোনও দেশে তাঁর লুকিয়ে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও গোয়েন্দাদের ধারণা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.