সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দূরপাল্লার ট্রেনের ভাড়া নিয়ে আপাতত মধ্যবিত্তকে বড়সড় স্বস্তি দিল রেলমন্ত্রক। এখনই বিমানের মতো ‘ডায়নামিক প্রাইসিং’ চালু হচ্ছে না ভারতীয় রেলে। রেলকর্তাদের নিয়ে গঠিত এক উচ্চ পর্যায়ের কমিটিকে একথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল বলেছেন, ‘ডায়নামিক প্রাইসিং’ নিয়ে নতুন করে প্রস্তাব জমা দিতে। প্রাথমিক খসড়ায় তিনি সন্তুষ্ট নন। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৫-১৬-তে যখন ফ্লেক্সি ফেয়ার চালু হয়নি সে সময় ১৩৮.৭১ লক্ষ টিকিট কাটা হয়েছিল। রেলের আয় হয় ১৯৩১.৬০ কোটি টাকা। ২০১৬-র সেপ্টেম্বরে ফ্লেক্সি ফেয়ার সিস্টেম চালু হওয়ার পর থেকে ২০১৬-১৭ আর্থিক বছরে ১৩৭.৩৯ লক্ষ টিকিট কাটা হয়, রেলের ভাঁড়ারে আসে ২১৯২.২৪ কোটি টাকা। ২০১৮-র ফেব্রুয়ারিতে রেলের আয় বেড়ে হয়েছে ২২৯৬.৭৫ কোটি টাকা।
অর্থাৎ, ফ্লেক্সি ফেয়ার চালু থাকলে রেলের আয় বৃদ্ধি হচ্ছিল। তাই ফ্লেক্সি ফেয়ারে আরও বদল আনতে চাইছিল রেলের কমিটি। রেলের এই উচ্চপদস্থ কমিটিই গত ১৫ জানুয়ারি এক প্রস্তাবে জানায়, দূরপাল্লার ট্রেনে বিমানের মতো ডায়নামিক প্রাইসিং চালু হোক। চাহিদা মোতাবেক লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ুক ট্রেনের ভাড়াও। ১০-৫০% পর্যন্ত ভাড়া বৃদ্ধি হোক। সমস্ত মেল এক্সপ্রেস ট্রেনেই এই নিয়ম চালু হোক। যে ট্রেনের চাহিদা যত বেশি, সেই ট্রেনের টিকিটের দাম ততটাই বেশি হোক। সেই সঙ্গে পুজোর সময় বা লোয়ার বার্থের জন্য বেশি ভাড়ার সুপারিশও করা হয় ওই প্রস্তাবে। এমনটা হলে কিন্তু উৎসবের মরশুমে মধ্যবিত্তদের মাথার উপর বাড়তি ভাড়ার কোপ পড়তে পারত। যে ট্রেন যত দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছয়, বা হাই স্পিড ট্রেনের ভাড়াও অনেকটাই বেশি করার প্রস্তাব ছিল ওই সুপারিশে। রেলের ফ্লেক্সি ফেয়ার সিস্টেমে টিকিটের দাম ৫০% পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারত।
কিন্তু মন্ত্রী এখনই এতটা পরিবর্তন চান না রেলের ভাড়ায়। গত ১৩ মার্চের এক বৈঠকে রেলমন্ত্রীর কাছে ওই প্রস্তাব প্রস্তাব করা হয়। বলা হয়, যাত্রা শুরুর কাছাকাছি সময় টিকিট কাটলে বেশি ভাড়া দিতে হবে যাত্রীদের। কিন্তু মন্ত্রী ওই নয়া প্রস্তাবে সন্তুষ্ট হননি। তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করে কমিটিকে বলেন নতুন করে খসড়া পেশ করতে। ফ্লেক্সি ফেয়ার স্কিমকে সবদিক থেকে ফুলপ্রুফ করতে নির্দেশ দেন মন্ত্রী। রেলের এই উচ্চপর্যায়ের কমিটিতে রয়েছেন রেল বোর্ডের সিনিয়র কর্তারা, নীতি আয়োগের উপদেষ্টা রবিন্দর গোয়েল, এয়ার ইন্ডিয়ার রেভিনিউ ম্যানেজমেন্টের প্রতিনিধি মীনাক্ষী মালিক ও বিশিষ্ট অধ্যাপকরা। তাঁরা মন্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, জাতীয় পরিবহণ শাখাকে লাভের মুখ দেখাতে হলে ফ্লেক্সি ফেয়ার চালু করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কারণ, রেল এখনও কোটি কোটি টাকার ক্ষতিতে চলছে প্রতিদিন। মন্ত্রী যুক্তি দেন, যাত্রীদের উপর অতিরিক্ত ভাড়ার চাপ না দিয়ে ঘুরপথে আয় বাড়ানোর দিকে নজর দিক রেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.