ফাইল ছবি।
সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: ওয়াকফ সংশোধনী আইনে মুসলিম স্বার্থবিরোধী বলে অভিযোগ তুলে বড়সড় আন্দোলনের পথে হেঁটেছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশ। এনিয়ে দেশজুড়েই বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে। নয়া ওয়াকফ আইনের বিরোধিতার জল গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টেও। চলছে শুনানি। যুক্তি, পালটা যুক্তির মাঝেই বড়সড় উদ্বেগের কথা শোনা গেল খোদ প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার গলায়। মূলত ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ বা ‘ভোগ-দখলে ওয়াকফ’ সম্পত্তি নিয়ে সত্যিই যে শঙ্কার জায়গা রয়েছে তা মেন নিল শীর্ষ আদালত।
এদিন ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় মামলাকারীদের আইনজীবী কপিল সিব্বল ও অভিষেক মনু সিংভির একাধিক যুক্তি খণ্ডন করে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। এজলাসে মামলাকারীদের কৌশলী সিংভি বলেন, নতুন আইনে ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ বিলুপ্ত করা হয়েছে। এর ফলে বহু সম্পত্তি বেদখল হয়ে যেতে পারে। তাঁকে মাঝপথেই থামিয়ে দেন প্রধান বিচারপতি। বলেন, “যদিও আপনার বক্তব্য মাঝপথে থামাতে চাই না, কিন্তু বিষয়টি নিয়ে যে উদ্বেগ রয়েছে তা সত্যি। আমরা শুনলাম দিল্লি হাই কোর্টও নাকি ওয়াকফের জমিতে তৈরি! আমরা বলছি না সব ক্ষেত্রেই এমনটা ঘটেছে। কিন্ত বাস্তবিকই উদ্বেগের কারণ রয়েছে।”
প্রসঙ্গত, নয়া ওয়াকফ আইন নিয়ে কেন্দ্রের বিরোধিতায় শীর্ষ আদালতে মামলা করেছে একাধিক রাজনৈতিক দল। আসাদউদ্দিন ওয়েইসির মিম বাদে তৃণমূল, সিপিআই, সমাজবাদী পার্টি, আরজেডি, জেডিইউ, ইন্ডিয়ান মুসলিম লিগ-সহ একাধিক দল রয়েছে তার মধ্যে। প্রায় প্রতিটি মামলারই মূল বক্তব্য, এই নতুন আইন মুসলিম স্বার্থবিরোধী এবং তাদের মৌলিক অধিকারে আঘাত করতে চলেছে। তাই তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। বুধবার এসব মামলার শুনানির ঠিক আগেই শিখ সম্প্রদায়ের তরফে গুরুগ্রামের গুরুদ্বারের দয়া সিং সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।
গত ৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি ওয়াকফ সংশোধনী আইনে সই করে দেওয়ার পর থেকে প্রতিবাদের সুর চড়েছে আরও। সুপ্রিম কোর্ট এবং একাধিক হাই কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকার এই ইস্যুতে ক্যাভিয়েট করেছে যাতে আদালত একপক্ষের বক্তব্য শুনে রায় না দেয়। বিরোধী দল এবং মুসলিম সংগঠনগুলির দাবি, নয়া ওয়াকফ আইনে ওয়াকফ বোর্ড ও কাউন্সিলে অমুসলিম সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে কেন্দ্রীয় সরকার ধর্মীয় পরিসরে হস্তক্ষেপ করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.