পাক উপপ্রধানমন্ত্রী ইশক দার।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় ২৬ জন পর্যটককে নৃশংস হত্যার ঘটনায় নিন্দায় মুখর গোটা বিশ্ব। ইতিমধ্যেই এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে উঠে এসেছে পাক যোগের ইঙ্গিত। আর সেই ইঙ্গিতকে আরও উস্কে দিয়ে বিতর্কিত বয়ান এল পাকিস্তানের তরফে। পাক বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার বিবৃতি জারি করে জানালেন, পহেলগাঁওয়ে যারা হামলা চালিয়েছে তারা জঙ্গি নয়, স্বাধীনতা সংগ্রামী হতে পারে। তাঁর এই মন্তব্য বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। পাকিস্তানের এই সাফাই আরও স্পষ্ট করে দিচ্ছে, জঙ্গিদের প্রতি তাঁদের সহমর্মীতা।
পহেলগাঁও হামলার ঘটনায় ভারত-পাক কূটনীতিক সম্পর্ক চরম আকার নিয়েছে। সমস্ত পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিলের পাশাপাশি তাঁদের ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাতিল হয়েছে সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করা হয়েছে। এই পরিস্থিতির মাঝেই জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তারপরই পাক উপপ্রধানমন্ত্রী ইশাক দার বলেন, “গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও জেলায় যে হামলার ঘটনা ঘটেছে হতে পারে এই হামলাকারীরা স্বাধীনতা সংগ্রামী।” একইসঙ্গে সিন্ধু জলচুক্তি প্রসঙ্গে বলেন, “পাকিস্তানের ২৪০ মিলিয়ন মানুষ এই জলের উপর নির্ভরশীল। এটা আপনারা বন্ধ করতে পারেন না। এটা একধরনের যুদ্ধ। সেই চুক্তিতে স্থগিতাদেশ কোনওভাবেই মানব না।” এখানেই না থেমে দুই দেশের মধ্যে চলতে থাকা যুদ্ধের আবহ প্রসঙ্গে দার আরও বলেন, “পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী যে কোনও হামলার জবাব দিতে। যদি কেউ কোনও হামলার চেষ্টা হয়, তাহলে আমরাও চুপ থাকব না। কড়া জবাব দিতে আমরাও প্রস্তুত।”
তবে পাক উপপ্রধানমন্ত্রী তথা বিদেশমন্ত্রী এই ঘটনায় পাকিস্তানের দায় এড়িয়ে স্থানীয় বিদ্রোহ হিসেবে দেখাতে চাইলেও। তথ্য বলছে, সরাসরি পাক যোগ রয়েছে এই হামলার সঙ্গে। যে ৮ থেকে ১০ জন জঙ্গি এই হামলা চালিয়েছিল তাদের বেশিরভাগই ছিল বিদেশি জঙ্গি। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে লস্কর ই তইবার ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট বা টিআরএফ। পিওকে ও পাকিস্তানের হ্যান্ডলারদের সহায়তায় নাশকতার এই ছক অত্যন্ত নিখুঁতভাবে করা হয়েছিল। ওপার থেকে অস্ত্রে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের এদেশে পাঠানোর পাশাপাশি খোঁজা হয়েছিল এমন পর্যটনস্থল, যেখানে পর্যটকের সংখ্যা প্রচুর হলেও নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকে তুলনামূলক কম।
শুধু তাই নয়, আততায়ীদের কাছে ওপার থেকে রিয়াল টাইম নানা নির্দেশও পাঠানো হচ্ছিল বলেও শোনা যাচ্ছে। যে চার আততায়ী মঙ্গলবার নাশকতা চালিয়েছিল, তাদের হেলমেটে ক্যামেরা লাগানো ছিল। যার ফলে ঘটনার ভিডিও রেকর্ডিং ও রিয়াল টাইম আপডেটও নিচ্ছিল তাদের ‘আকা’-রা। এরা পুঞ্চেও এই ধরনের সন্ত্রাস করেছে বলে তথ্য সামনে আসছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.