সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অনেক হয়েছে। আর নয়। এবার পাকিস্তান উপযুক্ত জবাব পাবে, পরপর সেনা ছাউনিতে হামলার জেরে এমনই হুমকি দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেছেন, ‘সঞ্জুয়ানে জইশ জঙ্গিরাই হামলা চালিয়েছে। আর জইশ জঙ্গিরা পাকিস্তানে থাকা মাসুদ আজহারের নেতৃত্বে অভিযান চালায়। জঙ্গিরা অবশ্যই পাকিস্তানের সাহায্য পায়। ভারতে সন্ত্রাসের পিছনে যে পাকিস্তানের মদত রয়েছে, সে তথ্য বারবার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইসলামাবাদ তা প্রতিবার অস্বীকার করেছে। পাকিস্তান এবার উপযুক্ত জবাব পাবে।’
প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুমকি দেওয়ার দিনই ফের সেনা শিবিরে জঙ্গি হামলা হয়। শ্রীনগরের করণনগর অঞ্চলের সিআরপিএফ-এর ছাউনিতে হামলার চেষ্টা করে জঙ্গিরা। যদিও পাক-মদতপুষ্ট জঙ্গিদের সে চেষ্টা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। বড় ধরনের হামলার আগেই পালটা আঘাত করে নিরাপত্তারক্ষীরা। হামলার পর ঘটনাস্থল থেকে জঙ্গিরা পালিয়ে যায়। জঙ্গিদের খোঁজে জোর তল্লাশি অভিযান চলছে। লস্কর-ই-তৈবা এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। এই তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই সঞ্জুয়ান সেনা ছাউনিতেও আক্রমণের পিছনে তারাই রয়েছে বলে জানিয়েছে ওই জঙ্গিগোষ্ঠীটি। এই হামলার পালটা হিসাবে ভারত সীমান্তে যথাযথ প্রত্যুত্তর দিতে পারে, এই আশঙ্কায় পাকিস্তান সোমবার নয়াদিল্লিকে জানিয়েছে, বিএসএফ যেন আক্রমণ না করে। অন্যদিকে, জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি জানিয়েছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করে সমস্যার সমাধান হওয়া সম্ভব নয়। বরং দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই সম্পর্কের উন্নতি হবে।
[মহা শিবরাত্রিতে জঙ্গি হানার শঙ্কা, ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গকে ঘিরে চূড়ান্ত সতর্কতা]
এদিকে তদন্তকারী দলের অনুমান, সঞ্জুয়ানে অভিযান চলার সুযোগেই যে শ্রীনগরে সিআরপিএফ ক্যাম্পে আক্রমণ চালানো হবে, এই ছক কষেছিল। কারণ, অভিযান চলাকালীন সকলের নজর সঞ্জুয়ান সেনা শিবিরেই থাকবে। কিন্তু জঙ্গিদের সেই পরিকল্পনা একেবারে বানচাল করে দেন সিআরপিএফ জওয়ানরা। তবে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে শহিদ হন এক কনস্টেবল। যে হাসপাতাল থেকে পাক সন্ত্রাসবাদী নাভিদ পালিয়ে যায়, সেই হাসপাতালের একেবারে কাছেই এই সেনা শিবির। হামলার ছক বানচাল হলেও সশস্ত্র দুই জঙ্গিকে ধরতে পারেনি নিরাপত্তারক্ষীরা। জঙ্গি হামলার জেরে দ্রুত এলাকায় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে। এই ঘটনার পর যাতে কেউ উত্তেজনা ছড়াতে না পারে সেজন্যই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
সোমবার তখন ভোররাত। সাড়ে চারটে নাগাদ। সেনা ছাউনির প্রবেশদ্বারের কাছে দুই সশস্ত্র জঙ্গিকে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। তাদের কাছে হাতে এ কে ৪৭ রাইফেল ছিল। প্রবেশদ্বারের নিরাপত্তারক্ষী দুই জঙ্গির দিকে এগিয়ে যেতেই গুলি চালাতে শুরু করে। ঘটনাস্থলেই সিআরপিএফ কনস্টেবলের মৃত্যু হয়। নিহত জওয়ান ৪৯ ব্যাটালিয়নের সদস্য। ঘটনার পরই গোটা এলাকা ঘিরে ফেলা হয়। ফের যাতে কোনওরকম হামলা না হয়, সেজন্য প্রবেশদ্বারেই মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্তি নিরাপত্তাবাহিনী। জম্মু-কাশ্মীরের পুলিশ সুপার এসপি বৈদ্য জঙ্গি হামলা ব্যর্থ করার জন্য জওয়ানদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
এই অবস্থার মধ্যেই এখনও থমথমে অবস্থা সঞ্জুয়ান সেনা শিবিরে। সকল জঙ্গি খতম, এটা নিশ্চিত হওয়ার পরেও সোমবার সকাল থেকে এলাকায় তল্লাশি অভিযান জারি রেখেছে। সেনা শিবিরের পার্শ্ববর্তী এলাকাতেও খোঁজ চলেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সেনাবাহিনীর তরফে। ইতিমধ্যে সঞ্জুয়ান কাণ্ডের তদন্ত শুরু করেছে এনআইএ।
Our heart goes out to our courageous soldiers who sacrifice so much for the safety of the nation. Visiting the Military Hospital in Jammu, Smt @nsitharaman meets those injured in the Sunjuwan attack. pic.twitter.com/RYioM4NxoR
— Raksha Mantri (@DefenceMinIndia) February 12, 2018
[দেশের জওয়ানদের অপমান করেছেন মোহন ভাগবত, তোপ রাহুলের]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.