সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শনিবার রাতে মহাকুম্ভে যাওয়ার ট্রেন ধরতে নয়াদিল্লি স্টেশনে জড়ো হয়েছিলেন শয়ে শয়ে যাত্রী। অনিয়ন্ত্রিত ভিড়, ভুল ঘোষণার জেরে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারান ১৮ জন। এবার এই মর্মান্তিক ঘটনার জল গড়াল সুপ্রিম কোর্টে। দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা। সুপ্রিম দরবারে মামলাকারীর প্রশ্ন, সমস্ত প্রযুক্তিগত সুবিধা কি শুধু ভিআইপিদের জন্য? সাধারণ মানুষকে কি ফেলে রাখা হয় ভগবানের নামে?
জানা গিয়েছে, নয়াদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্টের শীর্ষ আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন আইনজীবী বিশাল তিওয়ারি। এক সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, আদালতে তিনি বলেন, “আজকের দিনে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত বাহিনী, স্বেচ্ছাসেবক, প্রযুক্তি এবং এমনকি কৃত্রিম মেধাও রয়েছে। এত উন্নত প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও নয়াদিল্লি স্টেশনে এই দুর্ঘটনা ঘটল। এটা খুবই দুঃখের বিষয়। সমস্ত প্রযুক্তি, সমস্ত ব্যবস্থাপনা শুরু হাতে কয়েকজন মানুষ ও ভিআইপিদের জন্য। কিন্তু সাধারণ মানুষের কী হবে? তাঁদের ফেলে রাখা হচ্ছে ভগবানের ভরসায়।” এছাড়া আদালতে বিশাল তিওয়ারি অনুরোধ করেন, ভবিষ্যতে এই ধরনের দুর্ঘটনা রুখতে যেন যথাযথ গাইডলাইন তৈরি করা হয়। এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিক সুপ্রিম কোর্ট। প্রসঙ্গত, নয়াদিল্লির ঘটনায় তদন্তের পর রিপোর্ট জমা দিয়েছে আরপিএফ। যা নিয়ে অস্বস্তি বেড়েছে রেলের।
আরপিএফের প্রাথমিক রিপোর্টে ভুল ঘোষণাকেই পদপিষ্টের ঘটনার অন্যতম কারণ বলা হয়েছে। যদিও রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছিলেন, নয়াদিল্লি স্টেশনে অতিরিক্ত ভিড় ছিল না। এদিকে রেল পুলিশের রিপোর্ট উল্লেখ করা হয়েছে, শনিবার রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে ঘোষণা করা হয়, নয়াদিল্লি স্টেশনের ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে প্রয়াগরাজগামী কুম্ভ স্পেশাল ট্রেন আসছে। যদিও খানিক পরেই বলা হয়, ১২ নম্বরে নয়, ট্রেনটি ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসছে। একই সময়ে ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল মগধ এক্সপ্রেস। আর ১৫ নম্বরে ছিল উত্তর সম্পর্ক ক্রান্তি এক্সপ্রেস। অন্যদিকে, প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস ধরার জন্য ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছিলেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। মূল গোলমাল হয় অবশ্য এর পরে।
হুড়োহুড়ি পড়ে যায় তখন, যখন কুম্ভ স্পেশ্যাল ট্রেন ঘোষণা হয়। এর ফলে ১২-১৩ এবং ১৪-১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের যাত্রীদের একাংশ ওভারব্রিজে ওঠার চেষ্টা করেন। একই সময়ে দুটি ওভারব্রিজের সিঁড়ি ধরে নামছিলেন মগধ এক্সপ্রেস, উত্তর সম্পর্ক ক্রান্তি এক্সপ্রেস এবং প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেসের যাত্রীরাও। এই পরিস্থিতিতে ব্যাপক হুড়োহুড়ি শুরু হয়। ধাক্কাধাক্কিতে ভিড়ের মধ্যে ওভারব্রিজে পড়ে যান বহু যাত্রী। তাদের মাড়িয়েই যাওয়ার চেষ্টা করেন অন্য যাত্রীরা। আরপিএফের তরফে আরও বলা হয়েছে, রাত ৮টা ১৫ থেকে ১০টা ১০, এই দুঘণ্টার মধ্যে চারটি ট্রেনের ভিড় তৈরি হয়েছিল। তারপর পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.