সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ভিডিও। দেখে শিউরে উঠেছিল দেশবাসী। গাঁইতি দিয়ে লাগাতার কোপানো হচ্ছে আফরাজুলকে। শরীর প্রাণ যাতে একটুও না থাকে, নিশ্চিত করতে পেট্রল ঢেলে জ্যান্ত পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল মালদার প্রৌঢ়কে। বর্বরোচিত ঘটনাকে ‘লাভ জেহাদ’ আখ্যা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু আফরাজুল যে এমন কাজ করতে পারেন না। মালদহের বাড়ি থেকে জোরালো দাবি করেছিলেন স্ত্রী-কন্যারা। ভিডিও দেখে ক্ষোভে ফুঁসছিলেন তাঁরা। দাবি ছিল অভিযুক্তদের ফাঁসি।
[পাঞ্জাবের এই ভদ্রলোকের জন্মদিন ৩০ ফেব্রুয়ারি!]
একেবারে ঠান্ডা মাথায় আফরাজুলকে খুন করেছে শম্ভু রেগার। যা ক্যামেরাবন্দি করেছে তারই ভাইপো। কিন্তু কেন এই নৃশংসতা? এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, ভুল করেই আফরাজুলকে খুন করেছে শম্ভু। তার টার্গেট ছিল অন্য কেউ। পুলিশের জেরার মুখে এই কথা স্বীকার করেছে সে। রাজস্থানের যে যুবতীকে সে বোন হিসেবে মেনেছিল তাঁর সঙ্গে আসলে আজ্জু শেখ নামে একজনের সম্পর্ক ছিল। আজ্জুও ঘটনাচক্রে মালদা থেকে রাজস্থানে গিয়েছিল শ্রমিকের কাজ করতে। আফরাজুল-আজ্জু একই জায়গায় কাজ করত। শম্ভুর সঙ্গে আজ্জুর ফোনে কথোপকথন হয়েছিল। তাঁকে কোনওদিন দেখেনি। যখন আজ্জুকে খুনের পরিকল্পনা শম্ভু করে। রাজসামান্দে বাজার এলাকায় গিয়ে আজ্জুর খোঁজ করে সে। যাঁকে আজ্জুর সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি সম্ভবত ভেবেছিলেন কাজ দিতে চাইছে শম্ভু। তাই সে আফরাজুলের ফোন নম্বর শম্ভুকে দেয়। শম্ভুকে ফোন করে বলে কিছু নির্মাণের কাজ রয়েছে। আফরাজুলের সঙ্গে বাজার এলাকায় দেখা করে সে। ঘটনার দিন তাঁকে নির্জন স্থানে দেখা করতে বলে। খুনের সামগ্রী আগে থেকেই জোগাড় করে রেখেছিল শম্ভু। আর নিজের ১৪ বছরের ভাইপোকে এই নির্মম ঘটনাকে ক্যামেরাবন্দি করার জন্য নিয়ে গিয়েছিল।
[ভগৎ সিং, সুখদেব, রাজগুরুকে ‘শহিদ’ মর্যাদা নয়, জানাল হাই কোর্ট]
এদিকে এই শম্ভুর সমর্থনেই উত্তাল হয়ে উঠেছিল উদয়পুর। তাঁর সমর্থনে মিছিল করার চেষ্টা করে কয়েকটি কট্টরপন্থী গোষ্ঠী। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও হিংসা ছড়ানোর আশঙ্কায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয় ৮০ জনকে। তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বরাবরই আফরাজুলের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। নিহতের পরিবারকে তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া হয় রাজ্যের তরফে। পরিবারের একজনকে চাকরির আশ্বাসও দেওয়া হয়। মালদা গিয়ে আফরাজুলের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে আশ্বাস দেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও শুভেন্দু অধিকারী।প্রতিবাদে কলকাতায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মোমবাতি মিছিল করে যুব তৃণমূল কংগ্রেস। দোষীর উপযুক্ত শাস্তির আবেদন জানানো হয়েছিল।
শোনা গিয়েছে, যে তরুণীকে নিয়ে এত কাণ্ড। তিনি রেগার মহল্লা এলাকার বাসিন্দা। যেখানে শম্ভুও থাকে। মহম্মদ বাবলু শেখ নামে একজনের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একেই আজ্জু বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১০ সালে আজ্জুর সঙ্গে মালদা চলে এসেছিলেন তিনি। তাঁর মা ও কাকা তাঁকে ফেরত নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তার কয়েকমাস বাদে ফের মালদা চলে আসেন তিনি। এরপরই শম্ভু তাঁকে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব নিয়েছিল। আর এর জন্য নাকি তরুণীর মায়ের কাছ থেকে বেশ কিছু টাকাও নিয়েছে সে।
[রূপানির গদি টলমল, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে এগিয়ে স্মৃতি ইরানি?]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.