সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নতুন সংসদের উদ্বোধনের দিন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই রাজদণ্ড প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সংসদে। অক্ষয় তিথিতে সংসদ ভবনে পবিত্র ধর্মদণ্ড সেঙ্গল স্থাপন নিয়ে সেসময়ও বিস্তর বিতর্ক হয়। লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha 2024) পর ফের সেই সেঙ্গল ইস্যু খুঁচিয়ে তুলল বিরোধী শিবির। সমাজবাদী পার্টির সাংসদ আর কে চৌধুরীর দাবি, সেঙ্গল রাজতন্ত্রের প্রতীক সংসদ থেকে সেটিকে সরিয়ে সংবিধানের কপি রাখা উচিত।
সেঙ্গল সংসদ থেকে সরানোর দাবিতে প্রোটেম স্পিকারকে চিঠিও লিখেছেন তিনি। প্রোটেম স্পিকারকে লেখা চিঠিতে সাংসদ চৌধুরীর দাবি, রাজতন্ত্রের প্রতীক হিসাবে ব্যবহৃত সেঙ্গল ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী। তাই অবিলম্বে লোকসভা থেকে সেঙ্গল সরিয়ে সেখানে গণতান্ত্রিক ভারতের প্রতীক সংবিধান প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাঁর সাফ কথা, “আমাদের সংসদ গণতন্ত্রের মন্দির। কোনও রাজপরিবারের প্রাসাদ নয়। আর সংবিধান আমাদের কাছে ধর্মগ্রন্থের মতোই পবিত্র। তাই গণতন্ত্রের মন্দিরে সংবিধান প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত।”
ইতিহাস বলছে, স্বাধীনতা এবং ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীক হিসেবে লর্ড মাউন্টব্যাটনের হাত থেকে এই ‘ধর্মদণ্ড’ পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরুর হাতে তুলে দেন সাদিয়াপা স্বামী। তিনি ছিলেন তামিলনাড়ুর তিরুভাদুথুরাই মঠের প্রধান পুরোহিতের সহকারী। বলা হয়, ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে ভারতের শেষ ভাইসরয় লর্ড মাউন্টব্যাটেন পণ্ডিত নেহেরুকে প্রশ্ন করেন, ভারত যে স্বাধীনতা পাচ্ছে তার প্রতীক কী হবে? উত্তর খুঁজতে তখন দেশের শেষ গভর্নর জেনারেল চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারীর দ্বারস্থ হন নেহেরু।
তামিলনাডুর রাজপরিবারের রীতি অনুযায়ী, নতুন রাজার অভিষেকের সময় হাতে রাজদণ্ড তুলে দেওয়া হয় তাঁর হাতে। যার সূত্রপাত হয়েছিল সেই চোল রাজাদের শাসনকাল থেকে। সেই প্রথা অনুযায়ী রাজা গোপালাচারী নেহেরুকে (Jawharlal Nehru) এই ধরনের দণ্ড ব্রিটিশদের হাত থেকে তুলে নেওয়ার পরামর্শ দেন। পণ্ডিত নেহেরুর সেই পরামর্শ বেশ পছন্দ হয়, এবং সেই রাজদণ্ড বানানোর দায়িত্বও পড়ে তাঁর কাঁধেই। ‘রাজাজি’ তামিলনাড়ুর মঠ ‘তিরুভাদুথুরাই আথিনাম’-এর গুরুকে সেটা তৈরির দেন। অবশেষে ১৫ হাজার টাকা খরচ করে তৈরি হয় সেঙ্গল। যদিও সেটা সেসময় সংসদে প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। মোদি (Narendra Modi) নিজের হাতে সেটি সংসদে প্রতিষ্ঠা করেন। এবার রাজতন্ত্রের এই প্রতীক সরানোর দাবি তুলছে বিরোধীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.