ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দলের নতুন সভাপতি নির্বাচন ঘিরে বিজেপি ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) মধ্যে দ্বন্দ্ব ক্রমেই আরও প্রকট হয়ে উঠছে। একদিকে, নিজেদের ঘনিষ্ঠ কোনও নেতাকে সভাপতি পদে বসাতে তৎপর নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ। তাঁদের লক্ষ্য, ঘনিষ্ঠ কাউকে নেতৃত্বে রেখে দলের উপর প্রভাব বজায় রাখা। অন্যদিকে, সংঘ চাইছে দলের শীর্ষ পদে তাদের পছন্দের কাউকে আনা হোক। আগামী সোমবার শুরু হতে চলা বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠকের আগেই নতুন সভাপতি চাইছে সংঘ। যদি সেটা না হয়, তাহলে বিজেপির থেকে তাঁদের সমস্ত প্রতিনিধিকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে বলে সংঘের তরফে চরম হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। জাতীয় ও রাজ্যস্তরে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) পদে যাঁরা থাকেন তাঁরা আরএসএস-এর প্রতিনিধি হন। এই সাংগঠনিক সম্পাদকদের তুলে নেওয়া হবে বলেই সংঘের হুঁশিয়ারি। সূত্রের খবর, সংঘের এই হুঁশিয়ারির প্রেক্ষিতেই যাবতীয় কর্মসূচি বাদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ, শুক্র ও আগামিকাল শনিবার ব্যস্ত থাকবেন দলের নতুন সভাপতি ঠিক করতে।
বিজেপির নতুন সর্বভারতীয় সভাপতি পদে কে বসবেন, তা নিয়ে সংঘ পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের টানাপোড়েন চলছে। সেই জট কাটতেই একের পর এক বৈঠক করেছেন শীর্ষ নেতারা। মোদি-শাহর পছন্দের প্রার্থীকে নেতৃত্বে বসাতে বেঁকে বসে সংঘ। তাঁদের রাজি করাতে মোদিকে নাগপুরে সংঘের সদর দপ্তরেও ছুটে যেতে হয়েছে। কিন্তু, তাতেও সংঘের নেতারা রাজি হননি। মঙ্গলবার ও বুধবার রাতে অমিত শাহর বাসভবনে দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। সেখানে নতুন সভাপতি ছাড়াও দলের নতুন যে কেন্দ্রীয় কমিটি তৈরি হবে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি বাংলা-সহ, উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটকের মতো রাজ্যের সভাপতি পদে কারা বসতে চলেছেন, তাও প্রায় ঠিক হয়ে গিয়েছে বলেই সূত্রের খবর। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই সেই কাজ সেরে ফেলা হবে বলে বৈঠকে ঠিক হয়েছে। কিন্তু, সর্বভারতীয় সভাপতি পদের নাম নিয়ে কোনও রফাসূত্র মিলেছে বলে জানা যায়নি।
বর্তমান সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার উত্তরসূরী হিসাবে বেশ কয়েকটি নাম কিছুদিন ধরেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারমধ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান থেকে শুরু করে ধর্মেন্দ্র প্রধান, ভূপেন্দ্র যাদব, মনোহর লাল খট্টর, সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসলের পাশাপাশি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, দলের মহিলা মোর্চার প্রধান বনথি শ্রীনিবাসনের নাম রয়েছে। সূত্রের খবর, মোদি-শাহর প্রথম পছন্দ খট্টর। যিনি আরএসএস-এর প্রচারক হিসাবে দীর্ঘসময় মোদির সঙ্গে কাজ করেছেন। তাঁকে দলের সভাপতি করতে পারলে মোদি দলে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সক্ষম হবেন।
সংঘ যদি সত্যি সত্যিই তাদের প্রতিনিধিদের বিজেপি থেকে প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে সাংগঠনিকভাবে বিজেপি সংকটে পড়বে। সামনেই বিহারে বিধানসভা ভোট রয়েছে। দলে সংঘের এই পদাধিকারীদের গুরুত্ব অপরিসীম। তাঁরাই বিজেপি ও সংঘের মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজটি করেন। সংঘের সুপারিশেই সংঘের নেতাকে এই পদটি দেওয়া হয়। অর্থাৎ, তাঁরা না থাকলে বিজেপি সংঘ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের ভোটের আগে বিজেপির কাছে সেটা মোটেই কাম্য নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.