ফাইল ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যুদ্ধের ডঙ্কা বেজেছে মধ্যপ্রাচ্যে। ভারতের দুই বন্ধু রাষ্ট্র ইরান ও ইজরায়েল এখন সম্মুখ সমরে। চরম উদ্বেগের মাঝেই সকলকে অবাক করে গ্রিন সিগন্যালে ছুটল দেশের শেয়ার বাজার। গত কয়েকদিনের ধাক্কা সামলে শুক্রবার প্রায় ১১০০ পয়েন্ট বাড়ল সেনসেক্স। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নিফটিও। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে যুদ্ধের কালো মেঘ কাটিয়ে কোন ম্যাজিকে লম্বা লাফ দিল দালাল স্ট্রিটের ষাঁড়?
শুক্রবারের বাজার রিপোর্ট অনুযায়ী, শুক্রবার বাজার খোলার কয়েক মিনিটের মধ্যে দেখা যায় সেনসেক্স ১১০০ পয়েন্টের বেশি বেড়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা আরও উপরে উঠতে থাকে। শেষ পর্যন্ত বাজার যখন বন্ধ হয় তখন, ১০৪৬.৩০ পয়েন্ট অর্থাৎ ১.২৯ শতাংশ বেড়ে সেনসেক্স পৌঁছে গিয়েছে ৮২,৪০৮.১৭ পয়েন্টে। পিছিয়ে নেই নিফটিও। রিপোর্ট বলছে, ৩১৯.১৫ পয়েন্ট বেড়েছে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ বা নিফটির সূচক। যার জেরে ১.২৯ শতাংশ বেড়ে নিফটি পৌঁছে যায় ২৫,১১২.৪০তে। বিএসই-র মিডক্যাপ ইনডেক্স বেড়েছে ১.২০ শতাংশ এবং স্মল ক্যাপ ইনডেক্স বেড়েছে ০.৫৫ শতাংশ।
যে শেয়ারগুলিতে সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গিয়েছে সেগুলি হল, হুন্ডাই মোটোর ইন্ডিয়া, পাওয়ার ফিন ক্রপ, সুইগি, জেএসডব্লু এনার্জি, লোধার মতো শেয়ারগুলি। ৩ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে এই লার্জ ক্যাপের এই শেয়ারগুলি। পাশাপাশি পতন লক্ষ্য করা গিয়েছে সাইমেন এনার্জি, শ্রী সিমেন্ট, বাজাজ অটো, আদানি পাওয়ার, হিরো মোটো, গোদরেজের মতো শেয়ারগুলি। ১ থেকে ৩ শতাংশ পতন দেখা গিয়েছে শেয়ারগুলিতে।
কিন্তু প্রশ্ন হল, মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে ঠিক কোন ম্যাজিকে এই বৃদ্ধি বাজারের? এর নেপথ্যে চারটি কারণ সামনে আনছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রথমত, গত কয়েকদিন ধরে দেশের শেয়ার বাজার উলটো পথে হাঁটছিল। ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধের জেরেই আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বাজারে। এই অবস্থায় টানা রক্তক্ষরণের পর এদিনের বাজার সেই ক্ষতে কিছুটা প্রলেপ দিল। যদিও তা সাময়িক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দ্বিতীয়ত, গত কয়েকদিন ধরে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বাড়ার পর এদিন ২ শতাংশ পড়েছে অপরিশোধিত তেলের দাম। যা বাজারের বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত কার্যকরি। তৃতীয়ত, ইজরায়েলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরাসরি যুদ্ধের পথে না হেঁটে আমেরিকা আলোচনার মাধ্যমে সংঘর্ষবিরতির চেষ্টার ইঙ্গিত দিয়েছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে এই বিষয়ে নিজের সিদ্ধান্ত জানাবে হোয়াইট হাউস। পাশাপাশি, যুদ্ধে রাশ টানতে ইউরোপের তিন দেশের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে ইরান। যা বিনিয়োগকারীদের কাছে আশার আলো। এবং সবশেষে রিপোর্ট বলছে, দেশের বাজারে বিদেশি বিনিয়োগ একধাক্কায় অনেকখানি বেড়েছে। শুধুমাত্র ১৯ জুন ৯৩৪.৬২ কোটি শেয়ার কিনেছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। যার প্রভাব পড়েছে বাজারে। যদিও এই উত্থানকে সাময়িক উত্থান বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ কোন পথে গড়ায় তার উপরেই নির্ভর করবে দেশের শেয়ার বাজার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.