ফাইল ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সপ্তাহের প্রথম দিনেই কার্যত ‘রক্তস্নাত’ শেয়ার বাজার। সোমবার বাজার খোলার পর থেকেই নিম্নমুখি ছিল নিফটি ও সেনসেক্সের সূচক। বেলা যত গড়াতে থাকে পরিস্থিতি তত খারাপ আকার নেয়। একটা সময়ে ১১০০ পয়েন্ট নামে সেনসেক্স। পাল্লা দিয়ে নামে নিফটিও। সবমিলিয়ে একদিনে ১৩ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বিনিয়োগকারীদের। এবং গত ৭ মাসের মধ্যে সবচেয়ে নিচে নেমেছে সোমবারের বাজার।
বাজার বন্ধ হওয়ার পর সোমবারের রিপোর্ট বলছে, বিএসই সেনসেক্স ১০৪৮.৯০ পয়েন্ট অর্থাৎ ১.৩৬ শতাংশ নেমে বর্তমানে ৭৬,৩৩০.০১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ৭ মাস আগে ৭৬,৪৫৬.৫৯ পয়েন্ট-এর নিচে এসেছে বাজার। একই অবস্থা নিফটিরও। রিপোর্ট বলছে, এদিন ৩৪৫.৫৫ পয়েন্ট অর্থাৎ ১.৪৭ শতাংশ পড়ে গিয়ে বর্তমানে ২৩,০৮৫.৯৫ তে এসে ঠেকেছে। নিফটি ফিফটিও ৩২৯.৭০ পয়েন্ট নিচে নেমেছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে টাটা স্টিল, এশিয়ান পেন্টস-সহ ৫০০র বেশি স্টক গত এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে নিচে ট্রেড করছে।
কিন্তু কেন এই বিরাট ধাক্কা শেয়ার বাজারে? গুরুতর এই পরিস্থিতির নেপথ্যে অবশ্য বেশ কিছু কারণ তুলে ধরছেন বিশেষজ্ঞরা। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রুড অয়েলের দাম বৃদ্ধি। গত তিনমাসের মধ্যে সোমবার সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে ক্রুড অয়েলের। যার প্রভাব সরাসরি পড়েছে বাজারে। দ্বিতীয়ত, মার্কিন ডলারের তুলনায় টাকার দাম দুর্বল ছিলই। সোমবার টাকার দামে রেকর্ড পতন দেখা যায়। ১ ডলার অনুযায়ী ভারতীয় টাকার দাম হয়েছে ৮৬.৫৯ টাকা। তৃতীয়, বিশেষজ্ঞদের দাবি আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথগ্রহণ ভারতের বাজারে বড় ধাক্কার আগাম ইঙ্গিত দিচ্ছে। ভারত-সহ একাধিক দেশের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছেন ট্রাম্প। এর পাশাপাশি তাঁর H1B ভিসা নীতি ভারতের মুশকিল বাড়াবে। আসন্ন সেই বিপদবার্তা অনুধাবন করে এলোমেলো বইতে শুরু করেছে ভারতের বাজার।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এই সব উত্থান-পতনের প্রভাব যেমন বাজারে পড়েছে, তেমনই আভ্যন্তরীণভাবে খুব একটা স্থির নয় দেশের বাজার। অতীতের মতো এবারও নতুন বছরের শুরুতে শেয়ার বিক্রির প্রবণতা দেখা গিয়েছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। তাছাড়া একাধিক সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে ভারতের জিডিপি গ্রোথ কম হতে পারে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে। এর প্রভাব শেয়ারবাজারে পড়তে শুরু করেছে এখন থেকেই। এই অবস্থায় আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে সংসদে পেশ হবে কেন্দ্রীয় বাজেট। সেখানে সরকার অর্থনৈতিক নীতি বাজারের দুরবস্থা কিছুটা সামাল দিতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.