সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আলোর উৎসব দীপাবলি। অজ্ঞান, অহং ও মোহের অন্ধকার ঘুচিয়ে জীবনে প্রজ্ঞা ও চেতনার আলোক প্রজ্জ্বলনের সাধনা। তারই প্রতীক হিসেবে জ্বলে ওঠে দীপ। সুতরাং এই উৎসব কোনও ধর্মের গণ্ডীতে বাঁধা থাকতে পারে না। তবু সামগ্রিকভাবে এটিকে হিন্দুদের উৎসব হিসেবেই দেখা হয়। সে বেড়া ভেঙে দিলেন বারাণসীর মুসলিম মহিলারা। ভগবান শ্রীরামের সামনে দীপ জ্বালিয়ে দিওয়ালি পালন করলেন তাঁরা।
[ কী রহস্য কালী মূর্তিতে? কেন মা নগ্নিকা? ]
দশেরায় রাবণ বধ। ঠিক তার কুড়ি দিনের মাথায় অযোধ্যায় পা রেখেছিলেন শ্রীরামচন্দ্র। আলোর মালায় সেজে উঠেছিল অযোধ্যানগরী। রামায়ণের গল্প তাই মিশেছে দীপাবলির আলোতে। সুতরাং এ উৎসব হিন্দুদের এমনটাই ধরে নেওয়া হয়। পাশাপাশি, জয় শ্রীরাম ধ্বনির সঙ্গে বিশেষ এক রাজনৈতিক দলের মতাদর্শও জড়িয়ে আছে। যাদের কট্টর হিন্দুত্ববাদ কখনও দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাছে আঘাত হয়ে নেমে আশে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধন করতে শ্রীরামকে যথেচ্ছভাবেই ব্যবহার করেন নেতারা। কখনও মূর্তি তো কখনও মন্দির, সবাই রাজনীতির তুরুপের তাস হয়ে দেখা দেয়। ফলে অবধারিত মেরুকরণ। এবং দিওয়ালির মতো উৎসবও তাই এক নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে পড়ে।
[ ইসলাম গ্রহণ করেও কেন সাধনা করেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ? ]
কিন্তু এ ছবিই দেশের সবটা নয়। ভারতীয় ঐতিহ্য কখনওই বৈচিত্রের সমতা বা ইউনিফর্মিটির পক্ষে নয়। বরং বৈচিত্রের সূত্র ধরেই যে গূঢ় ঐক্যের সন্ধান মেলে, তাইই ভারতীয় সংস্কৃতি ও সভ্যতার মেরুদণ্ড। তারই ছাপ মেলে কখনও কখনও ধর্মাচরণে। যখন সম্প্রদায়ের ভেদ ভেঙে উৎসব হয়ে ওঠে সর্বজনীন। ঠিক সে ছবিই ধরা পড়ল বারাণসীতে। প্রধানমন্ত্রীর লোকসভা কেন্দ্রে মুসলিম মহিলারা দিওয়ালি উদযাপনে মেতে উঠলেন। বরনে বোরখা। কিন্তু হাতে প্রদীপ নিয়ে ভগবান শ্রীরামের ছবির সামনে দীপ জ্বালিয়ে আরতি করলেন তাঁরা। ইসলাম নিরাকারের সাধনা। তবু যে কোনও ধর্মের পথই যদি অন্তঃস্থ বিবেককে আলোকিত করার মোকামে মেশে, তবে এ প্রদীপ প্রজ্জ্বলনেও কোনও বাধা নেই। বহু তত্ত্বকথা, সমালোচনা, আলোচনা, রাজনীতির পেরিয়ে এই মহিলাদের হাতের প্রদীপের শিখাতেই যেন থাকল সেই বার্তা।
UP: Muslim women celebrate #Diwali in Varansi pic.twitter.com/8ftf2VKYRn
— ANI UP (@ANINewsUP) October 18, 2017
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.