মহাকুম্ভে ভক্ত সমাগম। নিজস্ব চিত্র
হেমন্ত মৈথিল, মহাকুম্ভ নগর: যৌতুক প্রথা আজও ভারতের বুকে এক দগদগে ক্ষত। এই পোড়া দেশে আজও যৌতুক না দিতে পারার কারণে মেয়েরা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আর এহেন প্রথার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-ধ্বনি উঠল মহাকুম্ভে। উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেল বৃহস্পতিবার প্রয়াগরাজের পরমার্থ নিকেতন শিবিরে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান চলাকালীন তিনি যৌতুক প্রথার কুফল সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির গুরুত্বের কথা বলেন।
সেই সঙ্গেই এদিন রাজ্যপাল রাষ্ট্রসন্ত পূজ্য মোরারি বাপুর কণ্ঠে শ্রী রামচরিত মানস পাঠও শোনেন তিনি। শিবিরে থাকাকালীন রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকীতে তাঁর বীরত্ব ও ধ্যানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, ”মহান ব্যক্তিরা সর্বদাই আমাদের হৃদয়ে অধিষ্ঠান করেন। তাঁরা তাঁদের কর্ম এবং চিন্তার মাধ্যমে মানুষের মনে তাঁদের স্থান চিরকালীন।” তিনি নেতাজির মতো নির্ভীক হওয়ার বার্তা দেন সমাজকে। বলেন, যুব সমাজের মধ্যে যেন ভীত মনোভাব না দেখা যায়। তাঁরা যেন সবসময়ই অন্যের বিপদে এগিয়ে যায়। এছাড়াও রাজ্যপাল মেয়েদের জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য টিকা দেওয়ার গুরুত্বের উপর জোর দেন। তিনি কন্যাদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথাও বলেন।
প্রসঙ্গত, মহাকুম্ভ মেলাই বিশ্বের সবচেয়ে বড় জনসমাগমের আসর। অতীতের সব বড় ধর্মীয় সমাবেশের থেকে অনেক বেশি মানুষের জমায়েত হতে চলেছে প্রয়াগরাজে। ১৩ জানুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রয়াগরাজে যে মহাকুম্ভ চলবে তাতে প্রায় ৪৫ কোটি পুণ্যার্থী অংশ নেবেন। এর মধ্যে বিদেশি পর্যটক প্রায় ১৫ লক্ষ। এই কুম্ভকে ধর্ম, সংস্কৃতি এবং আত্মোপলব্ধির মহোৎসব হিসাবে বর্ণনা করেছেন উত্তরপ্রদেশ সরকারের শীর্ষ আধিকারিকরা। যোগী সরকারের দাবি, এটিই পৃথিবীর বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব।
উত্তরপ্রদেশ সরকার জানিয়েছে, নিরাপদে কুম্ভ মেলা সম্পন্ন করতে সবরকম বন্দোবস্ত করা হয়েছে। মহাকুম্ভের জন্য ১৪টি নতুন ফ্লাইওভার, ৯টি স্থায়ী ঘাট, ৭টি বাস স্ট্যান্ড এবং ১২ কিলোমিটার অস্থায়ী ঘাট তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে মেলা চত্বরে মোতায়েন ৩৭ হাজার পুলিশ কর্মী, ১৪ হাজার হোমগার্ড। ২ হাজার ৭৫০টি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাযুক্ত সিসি ক্যামেরাও বসানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.