Advertisement
Advertisement

Breaking News

লক্ষ্মীপুজো

কোজাগরীতে অন্য পুজো, লক্ষ্মীর আসনে সারমেয়

মেয়ে ভেবেই পোষ্যকে লক্ষ্মীর আসনে বসিয়ে পুজো করেন সল্টলেকের সুকন্যা।

A woman celebrates laxmi puja dedicated to worshipping dog
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:October 13, 2019 9:38 am
  • Updated:October 13, 2019 9:38 am

অভিরূপ দাস: পুজোয় সব কিনতে হবে শুধু ঠাকুর ছাড়া। সে তো সারাদিন বাড়িতেই ঘুরঘুর করছে। সল্টলেকে ছিমছাম বাড়িটায় প্রস্তুতি সাড়া। নৈবেদ্য, পঞ্চশস্য, আমের শিষ, সব উপকরণই মজুত। রবিবার দু’হাত জড়ো করে লক্ষ্মীপুজোর মন্ত্র পড়বেন পরিবারের সকলে। কিন্তু এ লক্ষ্মী মণ্ডপে কোজাগরী নেই। সেখানে সাদা-হলুদে ছোপ ছোপ সারমেয়!

[আরও পড়ুন:জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডে নয়া মোড়, স্ক্যানারে শিক্ষকের বন্ধুর সঙ্গে বিউটির সম্পর্ক]

এতটুকু শুনে চমকে যাচ্ছেন যাঁরা তাঁরা জানেন না পূর্ব কলকাতার এই ঘরের পুজো এবার ছ’বছরে পড়ল। লক্ষ্মীপুজোয় এখানে বাড়ির পোষ্যকে পুজো করেন সুকন্যা দে। এ অভ্যাসে ছেদ পড়েনি। লক্ষ্মীপুজো বাঙালির ঘরে ঘরে। গেরস্থালির শ্রী যাতে অটুট থাকে সে কারণেই লক্ষ্মীর আরাধনায় মাতেন সকলে। সে ভাবনা থেকেই লক্ষ্মীপুজো শুরু করেন সুকন্যাও। ঘরে আলপনা দেন। সমস্ত নিয়মকানুন মানেন। ঠাকুরটাই শুধু কেনেন না। হাত নেড়ে ডাকলেই আসনে লাফ দিয়ে উঠে পড়ে আদরের ‘ম্যাগি।’

Advertisement

পাড়া প্রতিবেশীরা অনেকেই চমকে যান। প্রশ্ন তোলেন, “কুকুরকে লক্ষ্মী রূপে?..” “ওই কুকুর শব্দটাতে আমার অসুবিধা রয়েছে।” সাফ জানান সুকন্যা। তাঁর কথায়, “ওকে আমি আমার মেয়ের মতোই দেখি। সেই কারণেই লক্ষ্মীপুজোর দিন আমি মেয়ের পুজো করি। ঠাকুরের আসনে ওকে বসাই।”

Advertisement

বছর আটেক আগের কথা। বেঙ্গালুরুতে গিয়েছিলেন সুকন্যা। সেখানেই বেওয়ারিশ পশুদের আশ্রয়ে দেখতে পেয়েছিলেন এই সারমেয়কে। প্রথম দেখাতেই ভাল লেগে যায়। বগলদাবা করে সল্টলেকের বাড়িতে নিয়ে আসেন। সেই থেকেই ‘ম্যাগি’ তাঁর কোলে কোলে ঘোরে। “অনেকে আমার এই কাজকর্মে নিন্দা করেন। ভাবেন বেশি আদিখ্যেতা। কিন্তু আমার কোনও লুকোছাপা নেই। এবছরও আমি ম্যাগিকে পুজো করব।” যারা পশুপাখি ভালবাসেন লক্ষ্মীপুজোর দিন সকলকে নিজের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সুকন্যা। বলেছেন, কেউ চাইলে আমার সল্টলেকের বাড়িতে আসতেই পারেন। অভিনব এই পুজোর সাক্ষী থেকে যেতে।

তবে এ পুজোর শুরুতে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি তাঁকে। অনেক বন্ধুই সাবধান করেছিল, এই নিয়ে শোরগোল পড়ে যাবে। তাঁর এহেন পুজোয় কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে বিবেকানন্দর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন সুকন্যা। বলেছেন, “বিবেকানন্দ তো বলেছেন সমস্ত জীবের মধ্যেই ঈশ্বর রয়েছে। আমি মনে করি ম্যাগির পুজো করেই আমি স্রষ্টার পুজো করছি।”

[আরও পড়ুন: কোজাগরী পূর্ণিমার আগেই জেগে উঠল ‘লক্ষ্মীর গ্রাম’ হাওড়ার খালনা]

একটা নয়, একাধিক পোষ্য রয়েছে সুকন্যার বাড়িতে। লক্ষ্মীপুজোয় তাদের জন্য বিশেষ ভোগও রান্না করা হচ্ছে। সকলে মিলে পাত পেড়ে একসঙ্গে বসে খাবে। সুকন্যার কথায়, “পুজো শেষ হলে রেকাবি থেকে প্রসাদ খায় আমার ‘লক্ষ্মী’। আমি কামনা করি ও যেন ভাল থাকে। ওরা তো কথা বলতে পারে না। তবে আমি মনে মনে বুঝতে পারি ও আমার ভাল থাকার কামনা করছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ