সুব্রত বিশ্বাস: ‘রদ্দি’ হয়ে নিলামে ওঠার কথা। কিন্তু তাকে প্রাণ দিল মানুষের প্রাণ ফেরাতে। এমনই এক মোটর কোচ মেডিক্যাল ভ্যানে রূপান্তরিত হয়ে বৃহস্পতিবার থেকে দৌড়বে শিয়ালদহ ডিভিশনে। উদ্দেশ্য অসুস্থ মানুষদের পরিষেবা দেওয়া। শহর থেকে দূরে থাকা মানুষজন ও রেলকর্মীরা, যাঁরা শহরে চিকিৎসা করাতে আসতে পারছেন না তাঁদের পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা হবে এই ভ্যানে।
বাতিল মোটর কোচকে মেডিক্যাল ভ্যানে রূপান্তরিত করেছে শিয়ালদহ ইলেকট্রিক বিভাগ। কোচের মধ্যে রয়েছে চিকিৎসকদের চেম্বার। সঙ্গে রোগী দেখার জায়গা। উলটোদিকে রোগীদের বসার জায়গা, যেখানে ১৮ থেকে ২৪জন রোগী বসতে পারবেন। থাকছে মেডিসিন রুম, ড্রেসার রুম, টেবিল, ফ্রিজ, টয়লেট, জলের ব্যবস্থা, স্ট্রেচার, হুইল চেয়ার, ল্যাডার, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা। পুরো কোচটি বাতানুকূল। সিসিটিভিতে মোড়া। ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল হলেও দেখতে একেবারে দামি রেস্তোরাঁর মতো। শিয়ালদহ ডিভিশনে ছুটবে এই ট্রেন রোগী দেখতে। সাধারণ মানুষ থেকে শহরে আসতে অপারগ রেলকর্মীদের চিকিৎসা পরিষেবা দেবে। চিকিৎসা করাতে হাসপাতালে আসতে পারেন না অনেক রেলকর্মী।
পাশাপাশি দুর্ঘটনায় আহতদের পরিষেবা ও দূর স্টেশনে সাধারণ মানুষের চিকিৎসার কথা ভেবে শিয়ালদহ ডিভিশন এমনই এক মেডিক্যাল ভ্যান তৈরি করার কথা ভাবে। রেল মোটর কোচের ‘লাইফ টাইম’ ২৫ বছর। এর পরেই তা রদ্দি হয়ে যায়। তোলা হয় নিলামে। ১৯৯৩ সালের নভেম্বরের এমনই একটি মোটর কোচের জীবনসীমা শেষ হয় গত বছর নভেম্বর। রেলের নিয়মে এই কোচকে ‘ইনফিরিয়র সার্ভিস’ করে আরও দশ বছর চালানো যায়। এই কোচটিকে ১৪ লক্ষ টাকা খরচ করে জীবনরেখা করা হয়। নাম দেওয়া হয় ‘প্রদীপ’। কর্তাদের কথায়, জীবনের সঙ্গে সাযুজ্য রক্ষা করে প্রদীপ, অপরদিকে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কর্তার নাম প্রদীপ। তাঁর তত্ত্বাবধানে তৈরি এই মেডিক্যাল ভ্যান। যিনি কি না এই মাসেই চাকরি থেকে অবসর নেবেন। তাঁর কাজকে স্বীকৃতি দিতেই এই নাম। বৃহস্পতিবার মেডিক্যাল ভ্যানটির চলাচলের সূচনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.