Advertisement
Advertisement

Breaking News

হাতের মুঠোয় ‘স্কিমার’, পুলিশের জালে এটিএম জালিয়াতির নয়া চক্র

বিহারের গয়া থেকে ধরা পড়ল দুই যুবক।

ATM fraud racket busted
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:December 20, 2018 9:21 am
  • Updated:December 20, 2018 9:21 am

স্টাফ রিপোর্টার: এবার জালিয়াতদের হাতের মুঠোয় স্কিমার। এটিএম যন্ত্রে স্কিমার বসিয়ে জালিয়াতির পুরনো পদ্ধতিকে পিছনে ফেলে অনেক দূরে এগিয়ে গেল জালিয়াতরা। হাতের মুঠোয় লুকানো স্কিমারে এটিএম কার্ডটি ছুঁইয়ে নিলেই কেল্লা ফতে। তার পর শুধু আড়চোখে পিন নম্বরটি দেখে মুখস্থ করে নেওয়ার অপেক্ষা। মুহূর্তের মধ্যে উধাও গ্রাহকের অ্যাকাউন্টের টাকা।

শহরে নতুন পদ্ধতিতে এটিএমে স্কিমিং। অভিনব স্কিমার-সহ বিহারের গয়া থেকে ধরা পড়ল দুই যুবক। বুধবার গোয়েন্দাপ্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী জানান, সুরিন্দর সিং ও সুলতান খান নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে এমন স্কিমার, যা এটিএম যন্ত্রে বসানোর কোনও প্রয়োজন নেই। ‘ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ রিডার’ বা এমএসআর নামে অভিনব এই বিদেশি স্কিমার যন্ত্রটি থাকে জালিয়াতের হাতের মুঠোয়। দু’টি পেন ড্রাইভ পাশাপাশি রাখলে যেমন দেখতে হয়, এই স্কিমারের চেহারাটি অনেকটা সেইরকম।

Advertisement

[পিএইচডি করার সুযোগ না দিলে অনশন প্রত্যাহার নয়, সিদ্ধান্তে অনড় মাও নেতা অর্ণব]

Advertisement

গত কয়েক মাস আগেই স্কিমার ব্যবহার করে জালিয়াতরা শতাধিক শহরবাসীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। এই ঘটনায় রোমানিয়ান ও নাইজেরীয় এটিএম জালিয়াতরা গ্রেপ্তার হয়েছে। এরপর থেকে সতর্ক হয়েছে ভারতীয় জালিয়াতরাও। তাই স্কিমার ও স্কিমিংয়ের পদ্ধতি তারা আমূল বদলে ফেলে। শহরের বৃদ্ধা থেকে শুরু করে মহিলা পুলিশকর্মী, অনেকেই পা দিয়েছেন এই জালিয়াতি গ্যাংয়ের পাতা ফাঁদে। গত অক্টোবর মাসে দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জের একটি এটিএমে জালিয়াতির ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, মণিপুরি এক প্রৌঢ়া এটিএমে এসেছিলেন।

তার আগেই তারা এটিএমের কি-বোর্ডে আঠা লাগিয়ে রাখে। তাতে আটকে যায় কি-বোর্ড। সাহায্যকারী হয়ে এগিয়ে আসে জালিয়াতরা। তারা বলে, এটিএম কার্ডের সমস্যা রয়েছে। তাই তাঁরা কার্ডের ম্যাগনেটিক স্ট্রিপটি ঘষে ‘পরীক্ষা’ করে। প্রৌঢ়া বুঝতেও পারেননি যে, তাঁর এক ‘সাহায্যকারী’র হাতের মুঠোর মধে্য রয়েছে একটি স্কিমার। কার্ডটি হাতে নিয়ে প্রৌঢ়ার চোখের আড়ালে জালিয়াত সুরিন্দর ও সুলতান ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ ঘষে তার তথ্য রেকর্ড করে নেয় অনলাইনে কেনা ‘এমএসআর’-এ। এবার প্রৌঢ়া টাকা তুলতে গেলে আড়চোখে কার্ডের পিন নম্বর দেখে নেয় জালিয়াত। স্কিমারের তথ্য ভরে ফেলে ক্লোনিং মেশিনে। এটিএম কার্ডের ক্লোন তৈরি করে তারা। সেই ‘ক্লোনড কার্ড’ দিয়েই প্রৌঢ়ার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেয় টাকা। তিনি বালিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ তদন্ত করতে শুরু করে। এর পর একে একে আমহার্স্ট স্ট্রিট, রিজেন্ট পার্ক থানায় একই পদ্ধতিতে হয় জালিয়াতি। সংশ্লিষ্ট থানাগুলিতে জালিয়াতির অভিযোগ দায়ের হয়। এর মধ্যে রিজেন্ট পার্কের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের এটিএমে এক মহিলা পুলিশকর্মীর কাছ থেকেও একইভাবে জালিয়াতির ঘটনা ঘটে।

[মেয়েকে ৭ বছর ঘরে তালাবন্দি করে রাখল বাবা ও সৎ মা]

তদন্ত শুরু করে লালবাজারের গোয়েন্দারা জানতে পারেন, টাকা তোলা হয়েছে শিয়ালদহের গোটা দু’য়েক এটিএম থেকে। বালিগঞ্জ, আমহার্স্ট স্ত্রিট, রিজেন্ট পার্ক থেকে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজের সঙ্গে মেলানো হয় শিয়ালদহ থেকে পাওয়া ফুটেজ। জালিয়াতের চেহারা মিলে যায়। সেই চেহারার সূত্র ধরেই এই রাজ্য ও বিহারে জালিয়াতদের সন্ধান করতে শুরু করেন গোয়েন্দারা। সূত্রের মাধ্যমে খবর আসে, এরা গয়ার পুরনো এটিএম গ্যাংয়ের ‘নব্য ভার্সন’। সেই সূত্র ধরেই গয়ায় হানা দিয়ে প্রথমে সুরিন্দরকে ধরা হয়। তাকে জেরা করে গ্রেপ্তার করা হয় সুলতানকে। সুলতানের কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছে ওই আধুনিক স্কিমার। এই চক্রে রয়েছে আরও কয়েকজন। তাদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ