Advertisement
Advertisement

Breaking News

এটিএম জালিয়াত

ওয়েটারের হাতের মুঠোয় স্কিমার! রেস্তরাঁর বিল মিটিয়ে ATM জালিয়াতির কবলে ক্রেতারা

ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই জালিয়াত গয়ার বাসিন্দা।

ATM schemer into the palms of waiter in resturants, 2 arrested
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:January 17, 2020 9:43 pm
  • Updated:January 17, 2020 9:43 pm

অর্ণব আইচ: রেস্তরাঁর ওয়েটারের হাতের মুঠোয় স্কিমার। শুধু খদ্দেরের হাত থেকে এটিএম কার্ড পেলেই হল। খাবার টেবিল থেকে কাউন্টার পর্যন্ত যেতে যেটুকু সময় লাগে। তার মধ্যেই হাতের মুঠোয় থাকা মিনি ডিএক্স৩ স্কিমারে কার্ড সোয়াইপ করে তুলে নিত সেই কার্ডের তথ্য। আর খদ্দের আগেই বলে দিয়েছেন তাঁর পিন নম্বর সেই এটিএম কার্ডের তথ্য আর পিন নম্বর জেনে নকল এটিএম কার্ডের মাধ্যমে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া হত পুরো টাকা। শেষমেশ পুলিশের জালে এল দুই জালিয়াত।

পুলিশ জানিয়েছে, গত আট মাস ধরে এই কাজ করে চলেছিল মুদাস্সর খান ও ইরফানউদ্দিন নামে বিহারের গয়ার দুই বাসিন্দা। তারা পূর্ব কলকাতার তিলজলা এলাকায় ঘাঁটি গেড়ে এই কাজ করত। তার জন্য মোটা টাকার কমিশন দিয়ে সাহায্য নিত মুম্বই, কলকাতা ও হায়দরাবাদের বিভিন্ন হোটেলের ওয়েটারদের। আট মাসে এই স্কিমারের সাহায্যে এই তিন শহরের বিভিন্ন হোটেলের খদ্দেরদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় দশ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: মশলার প্যাকেটে করে ৬ কোটি টাকার হেরোইন পাচার, গ্রেপ্তার যুবক]

সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের কাছে এই ধরনের চারটি জালিয়াতির মামলা দায়ের হয়। সেই সূত্র ধরে তদন্ত করতে গিয়ে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, কখনও শিলিগুড়ি, কখনও কার্শিয়াং, আবার কখনও বিহারের কোনও এটিএম থেকে তোলা হচ্ছে এই টাকা। গোয়েন্দারা এটিএমের সিসিটিভি ফুটেজ ঘেঁটে জালিয়াতদের টুপি পরা ছবি পান। শুরু হয় তদন্ত। তাঁরা জানতে পারেন যে, বৃহস্পতিবার ওই তথ্যগুলি নিয়ে শিলংয়ের কোনও এটিএম থেকে তারা টাকা তুলতে যাচ্ছে। দার্জিলিং মেলে ওঠার আগেই লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখার আধিকারিকরা তাদের ধরে ফেলেন। তাদের ল্যাপটপ থেকে প্রায় ৩০০টি এটিএমের তথ্য উদ্ধার হয়েছে। এছাড়াও ৩৮টি নকল এটিএম কার্ড, স্কিমার, রাইটার যন্ত্রও গোয়েন্দারা উদ্ধার করেছেন। গ্রেফতারির পর জেরার মুখে ভেঙে পড়ে রেস্তরাঁর বিষয়টি জানায়।
পুলিশ জানিয়েছে, বন্ধুদের মাধ্যমেই এই তিন শহরের বেশ কয়েকটি হোটেলের ওয়েটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই এটিএম কার্ড জালিয়াতির চক্রের দুই মাথা। ৬ হাজার টাকা দিয়ে তারা ওই মিনি ডিএক্স৩ যন্ত্রটি জোগাড় করে। ইউ টিউবে শিখে নেয় পদ্ধতি। তারা ছোট মাপের ওই স্কিমার যন্ত্রটি পরিচিত ওয়েটারদের হাতে তুলে দেয়। বিল মেটানোর সময় কার্ড ও তার পিন নম্বর চায় ওই বিশেষ ওয়েটার। খদ্দের তা দিয়ে দিলেই কার্ড সোয়াইপ করে তার তথ্য পুরে নেয় স্কিমারে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বিশিষ্টরা ‘শয়তান’, ‘পরজীবী বুদ্ধিজীবী’ বলে খোঁচা দিলীপ ঘোষের]

পরে সেই স্কিমার নিয়ে নেয় দুই জালিয়াত। ওই স্কিমার যন্ত্রটিতে রেকর্ড হয়ে থাকা এটিএমের তথ্য সহজেই পুরে নেওয়া যেত ল্যাপটপে। এরপর ‘রাইটার’ ব্যবহার করে তৈরি হত ভুয়ো এটিএম কার্ড। সেই কার্ডের মাধ্যমেই এটিএম থেকে তুলে নিত টাকা। শহরে বাইপাসের ধারের একটি রেস্তরাঁর ওয়েটারের সন্ধান পেয়েছেন গোয়েন্দারা। হায়দরাবাদ ও মুম্বই পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। গোয়েন্দাদের পরামর্শ, রেস্তরাঁয় এসে খাওয়ার পর কার্ডে বিল মেটাতে গেলে হয় ওয়েটারকে বলতে হবে সোয়াইপ মেশিন নিয়ে আসতে না হয় নিজেই কাউন্টারে গিয়ে কার্ড সোয়াইপ করতে হবে। কোনওমতেই কাউকে বলা যাবে না পিন নম্বর। ধৃত দু’জনকে জেরা করে আরও তথ্য জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ