Advertisement
Advertisement

বয়ঃসন্ধিতে রূপান্তরকামীদের প্রতি সামাজিক কটূক্তির জবাব দেবে ‘চিত্রাঙ্গদা’ কর্মসূচি

তৃতীয় লিঙ্গের পড়ুয়াদের সঙ্গে কী ব্যবহার, শেখানো হবে স্কুলে।

Campaign to protect transgender students
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:February 11, 2019 2:07 pm
  • Updated:February 11, 2019 2:07 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:  মেয়েলি পুরুষ বা পুরুষালি মেয়ে – এসব কটাক্ষ, বিদ্রূপ আকছারই শুনতে হয় অনেককে। সে স্কুল, কলেজেই হোক কিম্বা বাসে, ট্রেনে, অফিসে। মানুষের চেহারা অথবা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য একটু ভিন প্রকৃতির হলেই, সমাজের তাঁরা যেন ঠিক খাপ খান না। বিশেষত বয়ঃসন্ধিকালে স্কুলের সহপাঠীদের থেকে এমন টিপ্পনির মুখে পড়লে, সেই অন্য ধরনের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেকার অফুরন্ত সম্ভাবনা নষ্ট হওয়ার প্রভূত আশঙ্কা থাকে। সমাজের মূল স্রোতে মিশে যেতে না পারার ভয়, নিজেকে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার চাপ, অন্তরের সত্ত্বাকে বিকাশ করার প্রতিকূল পরিবেশ – এসবই নিজের স্বচ্ছন্দ, স্বাভাবিক গতিতে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।

এমআর বাঙুর হাসপাতালে ‘মিরাকল’, নবজীবন পেলেন ‘ব্রেন ডেথ’ রোগিণী

Advertisement

কিন্তু ওই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সামান্য ব্যতিক্রমটুকু বাদ দিলে, কোনও কিশোর বা কিশোরী যে শেষপর্যন্ত মানুষ হিসেবে সকলের সমকক্ষ, সে সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখতে হবে আমাদের সকলকে। সেই সচেতনতার লক্ষ্যে এবার শহরের বিভিন্ন স্কুলগুলিতে প্রচার শুরু করছে জাতীয় মানবাধিকার ফেডারেশন। গোটা পরিকল্পনাটি করেছেন দেশের সর্বপ্রথম রূপান্তরকামী আইনজীবী মেঘ সায়ন্তন ঘোষ। তিনি এই মুহূর্তে জাতীয় মানবাধিককার ফেডারেশনের মুখ্য পৃষ্ঠপোষক। মেঘ সায়ন্তন জানাচ্ছেন, ‘ছোটবেলা বিশেষত বয়ঃসন্ধির সময়ে কোনও সহপাঠীর মধ্যে অন্যরকম প্রবণতা দেখলে বা আর পাঁচজনের থেকে তাকে আলাদা মনে হলে, তার সঙ্গে কীরকম আচরণ করা উচিত, এসব নিয়ে আমাদের আলাদা করে কোনও বোধ তৈরি হয় না। তৃতীয় লিঙ্গ বা রূপান্তরকারমী – এই শব্দগুলোর সঙ্গে স্কুলস্তরে আমরা সেভাবে পরিচিত হই না। তো এসব নিয়ে পড়ুয়াদের জানাতে এবং তাদের সচেতনতা তৈরি করতে আমাদের এই ক্যাম্পেন। নাম দিয়েছি চিত্রাঙ্গদা।’ নামকরণের প্রেক্ষাপট নিয়েও নিজের ভাবনা ভাগ করে নিয়েছেন মেঘ সায়ন্তন। তাঁর কথায়, ‘চিত্রাঙ্গদা মণিপুরের রাজকন্যা ছিলেন। পরিস্থিতির চাপে পড়ে তাঁকে যুদ্ধক্ষেত্রে পুরুষের সঙ্গে লড়তে হয়েছে। আর তিনি নিজেও রূপান্তরকামী ছিলেন। সে অর্থে তৃতীয় লিঙ্গ বা রূপান্তরকামীদের সকলের মধ্যে চিত্রাঙ্গদা লুকিয়ে আছেন।’

Advertisement

megh-sayantan2

সরস্বতী পুজো উপলক্ষে অতিরিক্ত ছুটি ঘোষণা রাজ্যের

মুখ্য পৃষ্ঠপোষকের এই আইডিয়াকে সমর্থন করে এগিয়ে এসেছে জাতীয় মানবাধিকার ফেডারেশন। মূলত শহরের স্কুলগুলিতে চলবে ‘চিত্রাঙ্গদা’ ক্যাম্পেন। যাদবপুর বিদ্যাপীঠ, টেকনো ইন্ডিয়ার স্কুল-সহ একাধিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে মেঘ সায়ন্তন এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। তাতে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে। আগামী মাসে আলোচনাসভার মাধ্যমে ‘চিত্রাঙ্গদা’ কর্মসূচির উদ্বোধন হবে। তারপর স্কুলগুলিতে নির্দিষ্ট দিন, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কর্মশালা করতে চায় জাতীয় মানবাধিকার ফেডারেশন। মূল উদ্যোক্তা মেঘ সায়ন্তনের সঙ্গে এই প্রচার কর্মসূচিতে থাকছেন ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট শুভ্রদীপ রায়চৌধুরীও। আলাদা করে তৈরি হচ্ছে ‘চিত্রাঙ্গদা’-র লোগোও। এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। মেয়েলি পুরুষ বা পুরুষালি মেয়ের পরিচয় নয়। এবার থেকে সেসব বিশেষ তকমা ভুলে আসুন না, একজন রূপান্তরিত বা তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিকে শুধু মানুষ হিসেবেই এগিয়ে যাই সম্পর্কের বন্ধনে। মেঘ সায়ন্তনদের এই লক্ষ্যে শামিল হই আমরাও। আর ভবিষ্যত নাগরিকদের মধ্যেও এ নিয়ে যথাযথ ধারণা গড়ে তুলি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ