Advertisement
Advertisement

রাত টহলে কুকুরের তাড়ায় ত্রস্ত পুলিশ, আত্মরক্ষার অস্ত্র জ্বলন্ত সিগারেট

কুকুর তাড়ানোর নতুন উপায়।

Cops use cigrette to keep dogs away
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:January 18, 2019 11:27 am
  • Updated:January 18, 2019 11:27 am

অর্ণব আইচ: রাস্তার কুকুর তাড়াতে সিগারেট? শুনতে আশ্চর্য লাগলেও, এটাই বাস্তব। এর পিছনে আসলে যুক্তিটি কী, তা নিয়ে তর্ক বাধতে পারে। ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর, এনিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু এই সিগারেটই যে রাতবিরেতে পুলিশকে বাঁচাচ্ছে কুকুরের তাড়া থেকে। অপরাধ রুখতে রাত্রিকালীন টহলদারি পুলিশের কাজের মধ্যেই পড়ে। ঘুরতেই হয় রাস্তায় রাস্তায়। অন্যদিকে, রাতে সজাগ থাকে পথকুকুররাও। ফলে দুই পাহারাদারের মধ্যে শুরু হয়ে যায় প্রতিযোগিতা। পুলিশকর্মীরা জানাচ্ছেন, রাতে কুকুর তাড়ানোর দাওয়াই হিসাবে তাঁরা বেছে নিয়েছেন জ্বলন্ত সিগারেটকে। কারণ, সিগারেটের আগুন দেখলে কুকুর খুব কাছে আসে না। আবার অনেক সময় মোবাইলে কথা বলার ভান করেও পুলিশকর্মীরা কুকুরদের দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন।

                              [নিউটাউনে সরছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের ক্যাম্পাস]

গভীর রাতে ইউনিফর্ম পরে সাইকেল নিয়ে টহল দিচ্ছে পুলিশ। পিছনে তাড়া করেছে কুকুর। দৃশ্যটি কলকাতায় খুব অপরিচিত নয়। কুকুরের তাড়ার মুখে পড়তেই হয় পুলিশকর্মীদের। অনেকেরই কাজ সেরে বাড়ি ফিরতে রাত হয়ে যায়। একটু বেশি রাতে নির্জন রাস্তা দিয়ে হেঁটেছেন, কিন্তু কুকুরের তাড়া খেতে হয়নি, এমন শহরবাসীও কমই আছেন। এমনও হয়েছে, বাইক বা স্কুটারে করে আরোহী যাচ্ছেন, তাঁর পিছনে দৌড়ে চলেছে রাস্তার কুকুর। ঘাবড়ে গিয়ে স্কুটার বা বাইক থেকে পড়ে পথ দুর্ঘটনাও ঘটেছে। আহত হয়েছেন বাইক চালক বা আরোহী। এসবের জন্য বেশি রাতে অনেকেই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে ভয় পান। এক পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, রাস্তায় কুকুর থাকার ফলে একদিকে সুবিধা হয়। সারাক্ষণ একেকটি থানা এলাকার প্রত্যেকটি রাস্তায় পুলিশের পক্ষে টহল দেওয়া সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে রাস্তার কুকুর অনেক সময়েই পাহারা দেওয়ার কাজ করে। রাতে এক বা একাধিক মানুষ দেখলে স্বভাবতই তেড়ে যায় কুকুর। দুষ্কৃতী দেখে তাড়া করলে
এলাকার বাসিন্দাদের বরং সুবিধাই হয়। কিন্তু কুকুরের তাড়া খেয়ে যে রাতে পুলিশকে নাস্তানাবুদ হতে হচ্ছে, তা স্বীকার করেছেন বেশ কয়েকটি থানার পুলিশকর্মীরাই। বিশেষ করে সাইকেল নিয়ে বা হেঁটে টহল দেওয়ার সময় কুকুরের তাড়া খেতে হয় অনেক পুলিশকর্মীকেই। বড় রাস্তাগুলিতে টহল দিতে গেলে হয়তো তাঁরা এই সমস্যার সামনে পড়েন না। কিন্তু কোনও পাড়ার অপরিসর রাস্তা দিয়ে যেতে গেলেই কুকুরের সামনে পড়তে হয়।

Advertisement

        [বাবাকে বেধড়ক মার ছেলের, নার্সিংহোমে ঠাঁই বৃদ্ধের]

এক পুলিশ আধিকারিক জানান, রাতে অভিজ্ঞতা থেকেই টহলরত পুলিশকর্মীরা দেখেছেন, আগুনকে সারমেয়কুল ভয় পায়। আগুন দেখলে সহজে ধারেকাছে ঘেঁষতে চায় না তারা। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে চলাফেরা করা সম্ভব নয়। কিন্তু জ্বলন্ত সিগারেট দেখলে যে কুকুর দূর থেকে ডাকলেও খুব কাছে আসে না, তা দেখেছেন পুলিশকর্মীরাই। তাই টহল দেওয়ার সময় রাতে বহু পুলিশকর্মীই হাতে রাখেন জ্বলন্ত সিগারেট। এই ক্ষেত্রে যে পুলিশকর্মীরা ধূমপান করেন না, তাঁরা সমস্যায় পড়েন। তাঁদের মধ্যে অনেকে আবার সামনে কুকুর দেখলে, কানে ফোন নিয়ে কথা বলার ভান করেন। তাতেও কুকুরদের কিছুটা দূরে রাখা যায়। কিছুক্ষণ ডেকে চুপ করে যায় রাতের পাহারাদাররা। তবে যতই পুলিশকর্মীরা মোবাইলে কথা বলার ভান করুন না কেন, টহল দেওয়ার সময় পুলিশকর্মীদের চারিদিকে নজর রাখতেই হয়। আবার যে পুলিশকর্মীরা ধূমপায়ী, টহল দেওয়ার সময় তাঁরা যে সারাক্ষণ ধূমপান করবেন, এমনও সম্ভব হয় না। কারণ, ধূমপান যে স্বাস্থ্যের জন্য
অত্যন্ত ক্ষতিকর, তাও তাঁদের মাথায় রাখতে হয়। সাইকেল নিয়ে টহলে থাকলে তখন গতি বাড়িয়ে অন্য রাস্তায় চলে যান পুলিশকর্মীরা।সবমিলিয়ে রাতে পথকুকুরদের অতি সক্রিয়তা থেকে রক্ষা পেতে সিগারেটই ভরসা যোগাচ্ছে পুলিশকে।

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ