কলহার মুখোপাধ্যায়: ভোর সাড়ে পাঁচটায় ‘অন ইয়োর মার্ক’। পৌনে ছ’টায় ‘রেডি, স্টেডি’। ঘড়ির কাঁটা ছ’টা ছোঁয়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘গো’। ব্রিগেড মিছিলের নির্ঘণ্ট ঠিক এই সময় সারণী ধরেই এগিয়েছে। সল্টলেক, হাওড়া এবং কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামের ব্রিগেডমুখী মিছিল শুরু হয়েছে ভোর ছ’টার আশপাশে। ঐতিহাসিক এই সমাবেশে যোগ দিতে ব্রহ্মমুহূর্তে ঘুম থেকে উঠতে হয়েছে সমর্থকদের। তারপর তৈয়ারির পালা। তারপর পাত পেড়ে বসে খেয়ে রওনা দেবেন মানুষ। শুক্রবার রাতভর উনুন জ্বলেছে শিবিরগুলিতে। সারা রাত ধরে লক্ষ মানুষের ভাত সিদ্ধ হয়েছে। একটা পাঁচমেশালি তরকারি। আর ডাল। কিঞ্চিত আয়োজন। তবে পেটপুরে খাওয়ার ব্যবস্থা। যাতে সারাদিন পেট খালি না থাকে। ভরা পেটে ব্রিগেডের নক্ষত্র সমাবেশের সাক্ষী থাকবেন রাজ্যের লক্ষাধিক মানুষ।
শুক্রবার সল্টলেক মেলার মাঠের শিবিরের ভিড় ৩৫ হাজার পেরিয়ে যায়। কসবার গীতাঞ্জলির শিবিরে মানুষ এসে পৌঁছেছেন ২০ হাজার। হাওড়ায় এদিন রাত পর্যন্ত জনসমাগম ৪০ হাজার ছুঁয়েছে বলে শিবিরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃত্ব জানিয়েছেন।
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি থেকে নেতা-কর্মী-সমর্থকরা এসে উঠেছেন সল্টলেকে। মালদা ও মুর্শিদাবাদ থেকে এসে উঠেছেন কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে। আর পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, হুগলি ও মেদিনীপুর থেকে আসা মানুষ থাকছেন উত্তর হাওড়ার শ্যামগার্ডেনে। তিন শিবির থেকে বাস রওনা দেবে ব্রিগেডের উদ্দেশে। সল্টলেকের জন্য থাকছে ১০০টি বাস। কয়েকটি খেপে সল্টলেক থেকে ব্রিগেড যাতায়াত করছে সেগুলি। গীতাঞ্জলি ও হাওড়া থেকেও একই ব্যবস্থা থাকছে।
সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার শিবিরগুলি সরেজমিনে পরিদর্শন করছেন। এছাড়া সল্টলেকের দায়িত্বে রয়েছেন মন্ত্রী সুজিত বসু। এদিন এই শিবির পরিদর্শন করে যান মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। গীতাঞ্জলির দায়িত্বে কলকাতা পুরসভার বরো চেয়ারম্যান সুশান্ত ঘোষ। মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনও একাধিকবার পরিদর্শন করে গিয়েছেন। হাওড়ার শ্যামগার্ডেনের দায়িত্বে মন্ত্রী অরূপ রায় ও লক্ষ্মীরতন শুক্লা। হাওড়াতে ঝাড়খণ্ড ও উত্তরপ্রদেশ থেকেও ব্রিগেড সমাবেশে যোগ দিতে এসেছেন নেতা-কর্মী-সমর্থকরা।
শুক্রবার মন্ত্রী সুজিত বসু জানিয়েছেন, ১০০টি বাস শিবিরের ভিড় নিয়ে রওনা দেবে মৌলালির উদ্দেশে। সেখানে মানুষকে নামিয়ে ব্রিগেডের উদ্দেশে রওনা করে দিয়ে ফের সল্টলেকে ফিরে এসে দ্বিতীয় খেপে মৌলালির উদ্দেশে যাবে। গীতাঞ্জলির দায়িত্বে থাকা সুশান্ত ঘোষ জানিয়েছেন, শীতে যাতে মানুষের কষ্ট না হয় তার জন্য প্রত্যেককে একটি করে কম্বল দেওয়া হয়েছে। হাওড়ার দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী অরূপ রায় জানিয়েছেন, মিছিল করে ব্রিগেডে পৌঁছাবেন মানুষ। লক্ষ্মীরতন শুক্লা জানিয়েছেন, দ্বিতীয় হুগলি সেতুর টোল প্লাজার কাছে জায়ান্ট আকারের এলইডি স্ক্রিন টাঙানো থাকবে সেখানে অনুষ্ঠান দেখতে পারবেন জনতা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.