অর্ণব আইচ: ‘জাল’ হেলমেটে ছেয়েছে বাজার। সস্তার ওই হেলমেট মিলছে অনলাইনেও। তাই হেলমেটেও কাটছে না বিপদ। মাথায় হেলমেট। তবু মাথায় আঘাত লাগছে বাইক আরোহীর। কখনও সেই আঘাত হয়ে উঠছে গুরুতর। পুলিশের দাবি, বাজারে বিক্রি হওয়া সস্তার লোকদেখানো হেলমেটই কাড়ছে প্রাণ।
বেশ কয়েকটি বাইক দুর্ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ দেখেছে, হেলমেট থাকা সত্ত্বেও দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন বাইক আরোহী। বিপদ আসছে বিভিন্নভাবে। গাড়ির সঙ্গে বাইকের ধাক্কা অথবা চাকা পিছলে পড়ে গিয়ে কখনও খুলে যাচ্ছে হেলমেট। তাতেও মাথায় আঘাত লাগছে। আবার অনেক সময় দুর্ঘটনার পর মাথায় হেলমেট থাকলেও রাস্তা বা ফুটপাথের উপর পড়ে যাওয়ার পর দেখা যায়, হেলমেট ফেটে গিয়ে আঘাত লেগেছে মাথায়। আঘাত এমনই যে মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে বাইক আরোহীর। কয়েকদিন আগেও বাইপাসের উপর প্রচণ্ড গতিতে থাকা বাইকের চাকা পিছলে আরোহীর মাথায় আঘাত লাগে। হেলমেট থাকা সত্ত্বেও মৃত্যু হয় ওই বাইক আরোহীর। রবিবার রাতেও জওহরলাল নেহরু রোডের উপর বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় আরোহীর। গুরুতর আহত হন তাঁর স্ত্রী। অথচ দু’জনেরই হেলমেট ছিল। এককথায়, হেলমেট থেকেও অনেক সময় লাভ হচ্ছে না। তাই ট্রাফিক পুলিশের পক্ষে বেশি করে জোর দেওয়া হচ্ছে ‘আইএসআই মার্কা’ হেলমেট ব্যবহারের জন্য।
[এবার ছোটদের গণতন্ত্রের পাঠ, সিলেবাসে ঢুকছে ‘ভোটাধিকার’]
পুলিশ জানিয়েছে, ‘আইএসআই’ চিহ্নিত হেলমেটের উপরের স্তর তৈরি হয় শক্ত পলিকার্বনেট, ফাইবার গ্লাস বা কেলভার দিয়ে। তার নিচের স্তরে থাকে মোটা পলিস্ট্রিন বা ইপিএস ফোম। যদি কোনও আঘাত লাগে, তবে এই নিচের স্তরটি মাথাকে বাঁচায়। এ ছাড়াও বহু হেলমেটে একটি ‘কমফর্ট’ স্তরও থাকে, যাতে বাইক চালক বা আরোহীর কোনও অসুবিধা না হয়। এই ধরনের ‘আইএসআই’ চিহ্নিত হেলমেটের দাম প্রায় সাতশো টাকা থেকে দু’হাজার টাকার মধ্যে। সেখানে যে হেলমেটগুলি ‘আইএসআই’ চিহ্নিত নয়, সেগুলি রীতিমতো বিপজ্জনক বলে অভিমত পুলিশের। এই ‘জাল’ হেলমেটগুলি ১৫০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যেই বিক্রি হয়।
[অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় বাড়ি থেকে পালিয়ে কলকাতায়, উদ্ধার ভাই-বোন]
এই ‘জাল’ হেলমেটগুলির একটি স্তরে থাকে পলিস্ট্রিলিন। তার উপরের স্তর তৈরি হয় প্লাস্টিক দিয়ে। সেগুলি দেখতে চকচকে বা আসলের মতো হলেও একটু মোটা হাতুড়ি মারলেই ফেটে যায়। সেখানে দুর্ঘটনার পর এই হেলমেট পরলে আরোহীর মাথায় আঘাত লাগারই সম্ভাবনা বেশি। অনেকেই টাকা বাঁচাতে এই ‘জাল’ হেলমেট কেনেন। এমনকী, অনলাইনে অর্ডার দিলেই হাতে চলে আসছে এই হেলমেট। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হয় না বলে জানিয়েছেন ট্রাফিকের কর্তারা। তাই দুর্ঘটনা কমাতে এবার হেলমেটের মানের উপরও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বাইক আরোহীদের উপর নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।