নব্যেন্দু হাজরা: শহরে বাড়ছে ব্যক্তিগত ছোট গাড়ির সংখ্যা। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দূষণও। সমস্যার মোকাবিলায় গণপরিবহণ ব্যবস্থা জোরদার করা ছাড়া উপায় নেই। যেকারণে প্রতিটি রাজ্যকে চিঠি দিল কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রক।
মন্ত্রকের চিঠিতে বলা হয়েছে, শহরাঞ্চলে বায়ুদূষণের উৎস হল প্রাইভেট গাড়ির বল্গাহীন সংখ্যাবৃদ্ধি। যাকে রুখতে গেলে গণপরিবহণের ভিত আরও মজবুত করতে হবে। এমন ব্যবস্থা চাই যাতে স্বচ্ছল মানুষও বাসে চড়তে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। যে লক্ষ্যে ছোট এসি লাক্সারি বাসের সংখ্যা বাড়ানো জরুরি। আর বাস মালিকদের এই বাস নামানোয় উৎসাহিত করতে পারমিটের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব রেখেছে মন্ত্রক। তার জন্য মোটর ভেহিক্যালস অ্যাক্টের সেকশন ৬৬-র কিছু পরিবর্তনও করা হতে পারে। তবে ২২ সিটের সরকারের ঠিক করে দেওয়া বাসই নামাতে হবে সেক্ষেত্রে। আর এই লাক্সারি বাস নামলে সাধারণ মানুষও তার সওয়ারি হবে। এক মাসের মধ্যে প্রত্যেক রাজ্যের থেকে এবিষয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের এক কর্তা জানান, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।
দূষণে জেরবার দিল্লি থেকে কলকাতা। বিশেষত বায়ুদূষণে। তবু দিল্লির তুলনায় কলকাতার পরিস্থিতি কিছুটা ভাল। কেন্দ্রীয় সরকার মনে করছে, শহরে দিনে যে লাখ লাখ গাড়ি চলছে তার থেকে বেরনো কালো ধোঁয়াই এই দূষণের উৎস। দিন দিন ছোট গাড়ির সংখ্যা বাড়াতেই তা বাড়ছে। মধ্যবিত্ত গেরস্তও এখন ইএমআইতে একটা চার চাকা কিনছেন। কারণ সাধারণ বেসরকারি বা সরকারি বাসে আরামদায়ক যাত্রা সম্ভব নয়। দীর্ঘ পথ ভিড়ে ঠাসাঠাসি করে যেতে হয়। যেহেতু প্রয়োজনের তুলনায় বাসের সংখ্যা কম তাই গণ পরিবহণকে আরও আরামদায়ক ও মজবুত করা হলে সাধারণ মানুষ গাড়ি কেনার দিকে কম ঝুঁকবে। সেই চিন্তাভাবনা থেকেই এই পরিকল্পনা।
এসি ডিলাক্স (এসিএক্স) বাস, যার বডি কোড হবে এআইএস-০৫২ এবং বাসগুলি হবে ২২ যাত্রীর বসার উপযুক্ত। এই ধরনের বাসই নামানো হবে। সরকারও নামাতে পারবে। আবার বেসরকারি মালিকরাও তা নামাতে পারবেন। আর এই বাস নামানোর জন্য পারমিট পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের তরফে যেন ছাড় দেওয়া হয় সেকথা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। পরিবহণ দপ্তরসূত্রে খবর, এমনিতেই ইলেক্ট্রিক বাস নামানোর ক্ষেত্রে পারমিট লাগে না। এখানে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক সে বাসের কথা উল্লেখ না করলেও আদতে তাই বলতে চেয়েছে। তাই পারমিটের বিষয়টি সমস্যার হবে না। তবে রাজ্য নয়া এই ফর্মুলায় সহমত হয়ে চিঠি দিলে তবে তা কার্যকর হবে। বিষয়টি এখনও আলোচনাস্তরেই রয়েছে পরিবহণ দপ্তরে। বাস-মিনিবাস সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য পরিবহণ দপ্তর কী বলে আগে দেখি, সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.