Advertisement
Advertisement

Breaking News

ক্যানসারের ভুল চিকিৎসা কলকাতায়

কলকাতায় পরীক্ষানিরীক্ষায় ধরা পড়ল ক্যানসার, মুম্বইয়ে উধাও!

ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে আদালতের দ্বারস্থ ভুক্তভোগী।

Kolkata lab fined Rs 1 lakh for misleading cancer report
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:November 8, 2019 9:21 am
  • Updated:November 8, 2019 9:21 am

শুভঙ্কর বসু: নামী ডায়গনাস্টিক সেন্টারের রিপোর্টে ধরা পড়েছে স্ত্রীর জরায়ুতে ক্যানসার! দুধ ব্যবসায়ী জয়রাম সিংয়ের মাথায় যেন তখন বাজ ভেঙে পড়ার জোগাড়। রিপোর্ট হাতে পেয়ে আর দেরি করেননি। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন স্ত্রী ঊর্মিলাকে। বাইপাসের ধারের ওই নামী প্যাথলজিক্যাল ল্যাবের রিপোর্ট দেখিয়ে হাসপাতালে ভরতি করে দেন স্ত্রীকে। তড়িঘড়ি ক্যানসারের চিকিৎসাও শুরু হয়ে যায়। ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রিপোর্টে লেখা ছিল- ক্যানসার জরায়ুর অনেকাংশেই ছড়িয়ে পড়েছে। এবার নয় দু’বার একই রিপোর্ট আসে। সেইমতো চিকিৎসা শুরু করে বিবেকানন্দ হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি এমন হয় যে দু’বার কেমো দিতে হয়। কিন্তু উন্নতির বিন্দুমাত্র লক্ষণ তো নেই, উলটে ঊর্মিলাদেবীর শরীর আরও বিগড়ে যাচ্ছিল। 

জয়রামের সামান্য দুধের কারবার। কারবার বললে ভুল হবে। ছোট্ট ব্যবসা। দু’বেলার খোরাকি জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়। স্ত্রী ছিলেন বড় ভরসা। কিন্তু তাঁরই এমন অবস্থা! ধারদেনা করে টাকা জোগাড় করে শেষপর্যন্ত তিনি স্ত্রীকে নিয়ে মুম্বই ছোটেন। ভাগ্যিস গিয়েছিলেন! মুম্বইয়ের ‘বম্বে হসপিটাল অ্যান্ড মেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টার’-এ ঊর্মিলার শারীরিক পরীক্ষা হয়। আর তাতেই চোখ খুলে যায়। জানা যায়, নামী ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রিপোর্ট সম্পূর্ণ ভুল। ক্যানসার তো নয়ই, এমনকী জরায়ুতেও কোনও ক্ষতিকারক কোষ বা ‘ম্যালিগন্যান্ট সেল’ নেই। বয়সজনিত কারণে জরায়ুর সাধারণ রোগে ভুগছেন ঊর্মিলাদেবী। নয়া রিপোর্টে সাফ উল্লেখ করে দেয় মুম্বইয়ের ওই হাসপাতাল। 

Advertisement

[আরও পড়ুন: সাংসদ সৌমিত্র খাঁর সঙ্গে আড্ডা রত্নার, তুঙ্গে বিজেপি যোগের জল্পনা ]

রিপোর্ট হাতে পেয়ে নিজের চোখকে যেন কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না জয়রাম। আর ঠকতে রাজি নন তিনি। কলকাতায় ফিরে এসে আরেকটি নামী ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ফের স্ত্রীর শারীরিক পরীক্ষা করান। এবার সব সংশয় দূর হয়। মুম্বইয়ের হাসপাতালের সঙ্গে রিপোর্ট হুবহু মিলে যায়। কিন্তু বাইপাসের ধারের ওই প্যাথলজি ল্যাব? তাদের জন্যই তো এমন মানসিক ও শারীরিক যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে জয়রাম ও তাঁর স্ত্রীকে। নতুন রিপোর্টগুলি নিয়ে এবার সেই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান জয়রাম। ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তাদের কাছে। কিন্তু জয়রামের কোনও কথা শুনতে রাজি হয়নি ঝা চকচকে ওই ডায়গনস্টিক সেন্টারের কর্মীরা। দূর দূর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। অপমানে কেঁদে ফেলেছিলেন জয়রাম। কিন্তু পণ করেছিলেন জবাব নিয়েই ছাড়বেন। সোজা মামলা ঠুকেছিলেন ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের জেলা ফোরামে। কিন্তু সেখানে তাঁর হার হয়। আবেদনটি খারিজ করে দেয় বারাসত জেলা ফোরাম। তবে হাল ছাড়েননি জয়রাম। 

Advertisement

এরপর মির্জা গালিব স্ট্রিটে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রাজ্য ফোরামের দ্বারস্থ হন দুধ বিক্রেতা জয়রাম। আদালতে দাবি করেন, স্ত্রীর অসুস্থতার পর গৃহ চিকিৎসক এ কে ঘোষের পরামর্শে তিনি বাইপাসের ওই ‘সুপার স্পেশালিটি রেফারাল ল্যাবরেটরিতে’ দু’বার স্ত্রীর শারীরিক পরীক্ষা করান। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই স্ত্রীর ভুল চিকিৎসা হয়। আদালতে এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রিপোর্টগুলি খতিয়ে দেখার পর শেষ পর্যন্ত জয়রামকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। দু’মাসের মধ্যে ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ওই টাকা দিতে হবে। 

[আরও পড়ুন: ‘উনি বিজেপির লোক’, রাজ্যপালকে তীব্র আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর়়]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ