সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জি ডি বিড়লায় ছাত্রীর উপর যৌন নির্যাতনের ঘটনায় ধৃত ২ শিক্ষকের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করল পুলিশ। বুধবার আলিপুর পকসো কোর্টে চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। মূল অভিযুক্ত পিটি শিক্ষক অভিষেক রায় ও মহম্মদ মফিজুলের বিরুদ্ধে পকসো আইনের ৪ ও ৬ ধারা ও গণধর্ষণের মামলা রুজু হয়েছে। মোট ২৭ জন সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড হয়েছে এই মামলায়। এদিন আদালতে ২ অভিযুক্তকে আনা হলে তাদের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করে। যদিও এদিন শুনানি হয়নি, সেই শুনানি হবে সম্ভবত শুক্রবার। চার্জশিট পেশ করেছে যাদবপুর থানা। ৯০ দিনের মাথায় চার্জশিট পেশ হল এই কাণ্ডে।
যৌন নির্যাতনের অভিযোগে জি ডি বিড়লার দুই পিটি টিচার অভিষেক রায় ও মহম্মদ মফিজুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিগৃহীতার বয়ান শুনে পুলিশের প্রাথমিক সন্দেহ, চকোলেটের লোভ দেখিয়ে তাকে টয়লেটে নিয়ে গিয়ে যৌন নির্যাতন করা হয়। ছবি দেখে দুই শিক্ষককে চিহ্নিত করেছে বাচ্চাটি। এই পাশবিক ঘটনার আঁচ রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে পৌঁছে যায় সারা দেশে। ম্যারাথন পথ অবরোধে দাঁড়িয়ে অভিভাবকরাও সাফ জানিয়ে দেন, অভিযুক্তদের আড়াল করার চেষ্টা করছেন স্বয়ং স্কুলের অধ্যক্ষ শর্মিলা নাথ। পকসো আইনে তাঁকেও গ্রেপ্তার করার দাবিতে সোচ্চার হন বিক্ষোভকারীরা।
তদন্তে নেমে দুধের শিশুর উপর পাশবিক অত্যাচারের অভিযোগে বিকৃতমনস্ক ওই ২ শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে যাদবপুর থানার পুলিশ। মামলা রুজু হয় স্কুলের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধেও। প্রথমে থেকেই নির্যাতিতার বাবা-মা বলে আসছিলেন, প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার কথা। পাশাপাশি তাঁদের অভিযোগ, অনেক কিছু জেনেও চুপ রয়েছেন প্রিন্সিপাল। তিনি ঘটনার দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করেছেন। জিডি বিড়লা স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, তাঁরা এই ঘটনার কথা জেনেছেন যাদবপুর পুলিশের কাছ থেকে। অথচ প্রথমে স্কুল কর্তৃপক্ষ দাবি করে, তারা এই ঘটনার কথা জেনেছেন সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে। চাপে পরে শেষমেশ স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে বরখাস্ত করে। কিন্তু ওই পদক্ষেপে সন্তুষ্ট হননি অভিভাবক ও আক্রান্তর বাবা-মা।
নিরাপত্তা নিয়ে আট দফা দাবি পেশ করেন অভিভাবকরা। স্কুলে নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি স্কুল বাসেও সিসিটিভি লাগানোর দাবি তোলেন অভিভাবকরা। স্কুলের এবং স্কুল বাসের সিসিটিভির সঙ্গে মা-বাবাদের মোবাইলের সংযোগ রাখারও দাবি ওঠে। যাতে ছাত্রীদের গতিবিধির উপর তাঁরা সবসময় নজর রাখতে পারেন। স্কুলে মহিলা অ্যাটেনডেন্ট নিয়োগের বিষয়টিও উঠেছে। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে ছাত্র-ছাত্রী একসঙ্গে পড়লেও তাঁদের জন্য আলাদা শৌচালয় নেই। ছেলে এবং মেয়েদের জন্য আলাদা শৌচালয় তৈরি করার জন্য স্কুলকে জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.