Advertisement
Advertisement

ছেলেকে এভাবে শনাক্ত করতে হবে স্বপ্নেও ভাবেননি, কান্নায় ভেঙে পড়লেন মৃতের বাবা

কার গাফিলতি কেড়ে নিল তরতাজা একটা প্রাণ?

Majherhat Bridge Collapse: Soumen Bag died
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:September 4, 2018 9:27 pm
  • Updated:September 4, 2018 9:27 pm

রাহুল চক্রবর্তী: ‘ছেলের মুখ এভাবে শনাক্ত করতে হবে স্বপ্নেও ভাবিনি।’ মৃত ছেলেকে দেখে কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রদীপ বাগ। ভাবতেও পারেননি বই কিনতে গিয়ে আর বাড়িই ফিরবেন না ছেলে।

বছর ২৮-এর সৌমেন বাগ বেহালার শীলপাড়ার বাসিন্দা। একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন। ব্যস্ততা থেকে সময় বের করে করতেন কিছু টিউশনও। বইপত্র নিয়েই সময় কাটাতে ভালবাসতেন সৌমেন। মঙ্গলবার বিকেলে শিলপাড়া থেকে কলেজ স্ট্রিটের দিকে যাচ্ছিলেন কিছু বই কিনতে। মিনিবাসে ছিলেন তিনি। কিন্তু মাঝেরহাট ব্রিজে বাসটি পৌঁছতেই ঘটল সেই মর্মান্তিক ঘটনা। মোমিনপুরের দিকের ব্রিজের একটি অংশ আচমকাই ভেঙে পড়ে। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে যায় মিনিবাসটি। বাসের মধ্যেই আটকা পড়ে যান সৌমেন। টিভির পর্দায় চোখ রাখতেই গোটা ঘটনা জানতে পারেন সৌমেনের বাবা-মা। ছেলের চিন্তায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে ছেলের মোবাইলে ফোন করেন। কিন্তু সৌমেন তো ফোন রিসিভ করার মতো পরিস্থিতিতে ছিলেন না। পকেটে রাখা মোবাইলটি বাজতেই থাকে। বাবা-মায়ের মন যেন কু-ডাকতে শুরু করেছিল। সেই সঙ্গে প্রার্থনা, ছেলে যেন নিরাপদে বাড়ি ফেরে।

Advertisement

[ব্রিজ কাণ্ডের তদন্ত হওয়া দরকার, ঘটনাস্থলে গিয়ে মন্তব্য রাজ্যপালের]

ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারীরা এসে সৌমেনের ফোন রিসিভ করে বাড়ির লোককে আরও অস্বস্তিতে ফেলে দেন। জানান, তাঁদের ছেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁরা যেন দ্রুত এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছে যান। প্রদীপ বাগ ও অনিতা বাগের আত্মা খাঁচা থেকে বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম। একরাশ উদ্বেগ নিয়েই পৌঁছে যান হাসপাতালে। তখনও আশা, আহত ছেলে নিশ্চয়ই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবে। কিন্তু নাহ, বিধি বাম। মঙ্গলবার সৌমেনের জীবনে এভাবে শনি নেমে আসবে, কেউ ভাবেনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে একজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছিলেন, তিনি যে সৌমেনই, তা যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না প্রদীপবাবু ও অনিতা দেবী। চিকিৎসকরা সৌমেনকে মৃত বলে ঘোষণা করলে ছেলের দেহ শনাক্ত করেন তাঁরা। জোয়ান ছেলেকে হারিয়ে কান্নায় কাতর শীলপাড়ার স্বামী-স্ত্রী।

Advertisement

কার গাফিগতি কেড়ে নিল তরতাজা একটা প্রাণ? কীভাবে সান্ত্বনা দেওয়া হবে প্রদীপবাবু ও অনিতাদেবীকে? মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ হিসেবে তো পাঁচ লক্ষ টাকা চাননি তাঁরা। চেয়েছিলেন একটা সুস্থ প্রাণ। মানুষের যাতায়াতের যোগ্য একটা ব্রিজ। যাতে এভাবে চলে যেতে হত না কোনও সৌমেনকে। মাঝেরহাট ব্রিজের মতোই এখন শোক আর হতাশায় ভেঙে পড়েছে বাগ পরিবার।

[একে একে এমার্জেন্সিতে ঢুকছে রক্তাক্ত শরীর, SSKM-এ যুদ্ধকালীন তৎপরতা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ