ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ: টাকা ফেললেই ‘সরকারি চাকরি’। কয়েক লক্ষ টাকা দুই মহিলার হাতে তুলে দিলেই হাতেহাতে নিয়োগপত্র। চাহিদা অনুযায়ী রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকারের। বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে এক মহিলা রাজ্যের এক রাজনৈতিক নেতার নামও নেন। যদিও নিয়োগপত্র নিয়ে কাজে যোগ দিতে গিয়েই বুঝতে পারেন যে, প্রতারণা চক্রের হাতে পড়েছেন তাঁরা। আর এভাবেই মধ্য কলকাতার একটি হোটেলে বসে প্রতারণা চক্র খুলে ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা রোজগার করছিল চক্রটি। মুচিপাড়া থানায় দুই মহিলার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন মালদহের এক যুবক। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ। গোয়েন্দাদের মতে, পুরো ঘটনাটির পিছনে রয়েছে কোনও বড় চক্র। সেই চক্রের সন্ধান চালাচ্ছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।
এদিকে, কানাডায় চাকরি দেওয়ার নাম করে এক মহিলা চিকিৎসকের কাছ থেকে প্রায় দু’লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠল। এই বিষয়ে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের একটি বহুতল আবাসনের বাসিন্দা ওই মহিলা চিকিৎসক যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। মহিলা চিকিৎসকের অভিযোগ, শিয়ালদহের বাসিন্দা এক ব্যক্তি পরিচয় হওয়ার পর তাঁকে কানাডায় চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে জানান। তাঁর কাছ থেকে ভিসার প্রসেসিং ফি হিসাবে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৭৫০ টাকা নেন। কিন্তু সেই টাকা নেওয়ার পর তিনি চাকরিও পাননি, ওই টাকা ফেরতও পাননি মহিলা চিকিৎসক।
পুলিশ জানিয়েছে, মালদহের এক বাসিন্দা চাকরি খুঁজতে এসে মধ্য কলকাতার শিয়ালদহ অঞ্চলের একটি হোটেলে ওঠেন। ওই হোটেলেই যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় পারুল নামে তাঁরই স্বল্পপরিচিত মালদহেরই বাসিন্দা এক মহিলার। চাকরি খুঁজতে এসেছেন শুনে পারুল তাঁকে রূপা নামে এক মহিলার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। রূপা তাঁকে জানায়, তার সঙ্গে এক রাজনৈতিক নেতার পরিচয় রয়েছে। তারই জোরে সে অনেককে টাকার বিনিময়ে সরকারি চাকরি দিতে পারে। মালদহের ওই যুবক তাকে ১৪ লক্ষ টাকা দেন। তার বদলে যুবককে রাজ্য সরকারের একটি বিভাগের নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। মালদহের ওই যুবক উৎসাহিত হয়ে বিষয়টি তাঁর পরিচিতদের বলেন। অনেকেই তাঁর মাধ্যমে রূপার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এভাবে পারুল ও রূপা ওই হোটেলে বসে মোট ১ কোটি ৩০ লক্ষ্য টাকা নিয়ে বহু যুবককে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন বিভাগের নিয়োগপত্র দেয়। এমনকী, বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে দুই মহিলা কয়েকজন চাকরিপ্রার্থীকে জানায়, টাকা নেওয়া সত্ত্বেও তাঁদের চাকরি হয়নি। তাই তাঁদের সই করা চেকও দেয় তারা। কিন্তু চাকরিতে যোগ দিয়ে গিয়েই যুবকরা বুঝতে পারেন, ওই নিয়োগপত্রগুলি জাল। ভুয়া ওই চেকগুলিও। দেখা যায়, মোট ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার জালিয়াতি হয়েছে। যদিও টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায় দুই মহিলা। পুলিশের ধারণা, এই চক্রের পিছনে আরও বড় মাথা রয়েছে। পুলিশ সন্ধান চালাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.