সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হেলমেট না থাকায় এক বাইক আরোহীকে বেধড়ক মারধর করল কয়েকজন সিভিক ভল্যান্টিয়ার। তার জেরে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। শনিবার সকালে এই অভিযোগে উত্তাল হল মধ্যমগ্রাম থানার চৌমাথা এলাকা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রতিবাদে সরব হয়ে পথে নামেন তাঁরা। রণক্ষত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। কর্তব্যরত সিভিক ভল্যান্টিয়ারদের উপর চড়াও হন উত্তেজিত জনতা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ এলে তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় বিক্ষোভকারীদের। এর পর যশোর রোড অবরোধ করেন উত্তেজিত জনতা। ইতিমধ্যে মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে খুনের মামলাও রুজু করা হয়েছে।
[শহরে বেপরোয়া বাসের রেষারেষিতে হাত বাদ গেল মহিলার]
মৃত ব্যক্তির নাম সৌমেন দাস (৪০)। মধ্যমগ্রামের শ্রীনগর এলাকার তিনি বাসিন্দা। এদিন সকালে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে বাদু রোড হয়ে মধ্যমগ্রাম স্টেশনের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইমারতি সামগ্রীর ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত সৌমেনবাবু। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, চৌমাথায় বাদু রোডের সিগন্যালে দাঁড়িয়েছিলেন সৌমেনবাবু। তাঁর মাথায় হেলমেট ছিল না। হেলমেট নিয়ে এক সিভিক ভল্যান্টিয়ারের সঙ্গে বচসা শুরু হয় তাঁর। বচসা চলতে থাকলে আরও কয়েকজন সিভিক ভল্যান্টিয়ার সেখানে জড়ো হয়। এর পরই মারমুখী হয়ে ওঠে তারা। প্রথমে ধস্তাধস্তি, তার পর সৌমেনবাবুকে বাইক থেকে নামিয়ে মারধর শুরু করে কর্তব্যরত ওই সিভিক ভল্যান্টিয়াররা বলে অভিযোগ। সিভিক ভল্যান্টিয়াররা মিলে সৌমেনবাবুকে রাস্তার উপর ফেলে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে। মারের চোটে সেখানেই নিস্তেজ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ওই বাইক আরোহী। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
[ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মেধাবী পড়ুয়ার পাশে সহপাঠীরা, পুজোর চাঁদায় চিকিৎসা]
ঘটনাস্থল থেকে কয়েক মিনিটের দূরত্বেই সৌমেনবাবুর বাড়ি। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন সৌমেনবাবুর পরিবারের লোকেরা। ঘটনার কথা জানতে পেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। ঘটনার প্রতিবাদে পথে নামেন এলাকার কয়েকশো মানুষ। সিভিক ভল্যান্টিয়ারদের উপর চড়াও হন তাঁরা। ভয়ে একটি শৌচাগারে গিয়ে লুকিয়ে পড়ে তারা। সেখানেও চলে ভাঙচুর। ঘটনাস্থলে যায় মধ্যমগ্রাম থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুলিশের সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তি হয় বিক্ষোভকারীদের। এরপর যশোর রোড অবরোধ করেন উত্তেজিত জনতা। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে র্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স নামানো হয় এলাকায়। আসেন মধ্যমগ্রামের পুরপ্রধান তথা বিধায়ক রথীন ঘোষও। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। তবে তাতেও পিছু হটেননি বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের দাবি, অভিযুক্ত সিভিক ভল্যান্টিয়ারদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। এলাকাবাসীরা বলছেন মধ্যমগ্রাম চৌমাথায় চারদিকেই সিসিটিভি বসানো আছে। সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখলে সহজে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা যাবে।
[রাজ্যের ৮টি রুটে ট্রেন বন্ধ নিয়ে রেলের ভোলবদল, চূড়ান্ত বিভ্রান্তিতে যাত্রীরা]
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মধ্যমগ্রাম চৌমাথায় সিভিক ভল্যান্টিয়ারদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ এবং দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ভূরি ভূরি রয়েছে। বাইক ধরতে অতিসক্রিয় তারা। স্থানীয় এক বাসিন্দার দাবি, “ট্রাফিক পুলিশ থাকলেও, সিভিকদের দাপট এখানে বেশি। এক কথায় বলতে গেলে বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বেশি ডাগর।” পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.