Advertisement
Advertisement

‘নেতা হওয়া নয় মুখের কথা’! প্রিয়রঞ্জনের জন্মদিনে আবেগঘন পোস্ট সোমেনের

জন্মদিনে এভাবেই সহযোদ্ধাকে স্মরণ করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।

Somen Mitra remembers Priyaranjan Dasmunsi
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:November 13, 2018 3:03 pm
  • Updated:November 13, 2018 4:09 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সপ্তাহখানেক বাদেই সেই দুঃখের দিন। গতবছর ২০ নভেম্বর দীর্ঘদিন কোমাচ্ছন্ন থাকার পর ইহজগত ত্যাগ করেছিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। আজ, ১৩ই নভেম্বর সেই মানুষটিরই জন্মদিন। বেঁচে থাকলে ৭৪ বছরে পা দিতেন ‘প্রিয়দা’। জন্মদিনে তাঁকেই স্মরণ করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। ফেসবুকে আবেগঘন পোস্ট করে নেতা হওয়ার মর্মার্থ বোঝালেন প্রিয়রঞ্জনের সহযোদ্ধা ‘ছোড়দা’।

[মনোমালিন্য ছেড়ে একসঙ্গে লড়ুন, বঙ্গ বিজেপিকে বার্তা কেন্দ্রীয় নেতাদের]

Advertisement

দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের বিছানাই তাঁর ঠিকানা হয়ে উঠেছিল। প্রথমে ভর্তি ছিলেন নয়াদিল্লির এইমস হাসপাতালে। এর কয়েক বছরে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে প্রিয়বাবুর চিকিৎসা শুরু হয়। সেখানে শুয়েই নিজের বাহাত্তরতম জন্মদিনটি পার করে তিয়াত্তর বছরে পা দেন একসময়ের কংগ্রেসের ডাকসাইটে নেতা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। কিন্তু জন্মদিনে পরিবারের একজন সদস্যও এমনকী তাঁর স্ত্রী দীপা দাশমুন্সিকেও একটি বারের জন্য হাসপাতালে দেখা যায়নি। অথচ দীপার অনুরোধেই ২০০৮ সাল থেকে দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন প্রিয়। দীর্ঘ নয় বছর ধরে তাঁর চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। একসময়ে প্রিয়র ব্যক্তিগত সচিব ছিলেন পি পি সিং৷ দিল্লিতে তিনিই প্রিয়বাবুর যাবতীয় দেখভাল করতেন। মাঝে মধ্যে দীপাদেবী দেখতে যেতেন। দীর্ঘ অসুস্থতা পর্ব কার্যত লোকচক্ষুর আড়ালে চলে গিয়েছিলেন তিনি। সাড়া দিচ্ছিল না তাঁর মস্তিষ্ক। প্রিয়বাবুকে স্নান করিয়ে দিতে হত। খাইয়েও দিতে হত। প্রতিদিন হুইলচেয়ারে করে ঘোরানো হত কেবিনঘর। এমনকী সংক্রমণের কারণে বাড়িতেও আনা যেত না। এত লড়াইয়ের পরও গতবছর ২০ নভেম্বর দীপ নিভে যায়। স্মৃতিতেই থেকে যান ‘প্রিয়দা’।

Advertisement

[‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা, পাকড়াও ‘প্রতারক’]

বহু লড়াই একসঙ্গে লড়েছেন নিজেদের রাজনৈতিক জীবনে। দুজনেই বাংলার রাজনীতির ময়দানে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন দীর্ঘ সংগ্রামের পর। তাই মৃত্যর পরও সহযোদ্ধার মতাদর্শকে ভোলেননি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। মঙ্গলবার ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘নিজেকে নেতা ভাবা আর নেতা হয়ে ওঠা, এ দুটো এক জিনিস নয়। সোজাকথায় ‘নেতা হওয়া নয় মুখের কথা’। নেতা হন তিনিই যিনি মানুষের মানুষের হৃদয়ের গভীরে পৌঁছে সেখানে বাজতে থাকা রাগরাগিনীর মূর্ছনায় নিজেকে জারিত করতে পারেন। নেতা তিনিই হন যিনি নিজের চোখের জল আড়ালে রেখে কর্মী তথা মানুষের চোখের জল মোছাতে পারেন। প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি সেই সকল বিরল মানুষদের একজন, যিনি মানুষের অন্তরে নিজেকে রোপন করতে পেরেছিলেন। মানুষের হৃদয়ের মূর্ছনায় নিজেকে জারিত করতে পেরেছিলেন। নিজের চোখের জল আড়াল করে মানুষের চোখের জল মোছাতে প্রাণপাত করতে পেরেছিলেন। প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি ছিলেন এ বাংলার রাজনীতির ইতিহাসে এক বিরল ব্যক্তিত্ব, এক চলমান নেতৃত্ব। ভারতবর্ষের এক রাজনৈতিক যুগ সন্ধিক্ষণে ছাত্র ও যুব আন্দোলনে এক নতুন ধারার প্রবর্তক, ছাত্র এবং যুব আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা প্রয়াত প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির জন্মদিনে তাঁর প্রতি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।’

সম্প্রতি দ্বিতীয়বারের জন্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদে আসীন হয়েছেন সোমেন মিত্র। কিন্তু দায়িত্ব পেলেও সামনে এক কঠিন চ্যালেঞ্জ। বঙ্গ রাজনীতিতে ক্রমাগত ভাঙনের হাত থেকে দলকে রক্ষা করা। সব নেতা-কর্মীদের একজোট রেখে প্রধান বিরোধী দলের তকমা ধরে রাখা। তাই এহেন পরিস্থিতিতে প্রিয়রঞ্জনের রাজনৈতিক দর্শনকেই হাতিয়ার করে দলীয় কর্মীদের সামনে থেকে লড়াই করার বার্তা দিতে চান সোমেন মিত্র। আবেগঘন ফেসবুক পোস্ট পক্ষান্তরে সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ