Advertisement
Advertisement

Breaking News

লাইসেন্স বাতিল

গাফিলতির জেরে শিশুমৃত্যু, বাতিল নামী হাসপাতালের তিন চিকিৎসকের লাইসেন্স

মৃত কুহেলির বাবা স্পষ্ট জানিয়েছেন, এই রায়ে তিনি খুশি নন।

State medical council suspended license of three doctors
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:November 8, 2019 5:23 pm
  • Updated:November 8, 2019 5:33 pm

গৌতম ব্রহ্ম: ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল কলকাতার বাইপাশের এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েছিল চার মাসের কুহেলি চক্রবর্তী। সেই ঘটনায় চিকিৎসায় গাফিলতিতে মেয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে স্বাস্থ্য কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বাবা অভিজিৎ চক্রবর্তী ও মা শালু চক্রবর্তী। শুনানি শুরু হয়। গাফিলতি প্রমাণিত হয়। কমিশন ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে বলে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। তবে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য অভিযোগপত্র পাঠানো হয় ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলে। সেই অভিযোগপত্রটি দেখে এদিন রায় দেয় কাউন্সিল। বাতিল করা হয় কুহেলির চিকিৎসায় যুক্ত তিন চিকিৎসকের লাইসেন্স। অভিযুক্তরা হলেন পেডিয়াট্রিক সার্জেন ডঃ বৈশালী রায় শ্রীবাস্তব, অ্যানেস্থেসিস্ট সঞ্জয় মহাওয়ার এবং মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডক্টর সুভাষ তিওয়ারি।

২০১৭-র ১৪ এপ্রিল কুহেলিকে ইএসআই হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল। কলোনোস্কপির জন্য কুহেলিকে বাইপাসের ওই বেসরকারি হাসপাতালে আনা হয়। অভিজিৎবাবুর অভিযোগ, কুহেলিকে আট-নয় ঘণ্টা না খাইয়ে রেখেও কলোনোস্কপি করানো হয়নি। পরদিন সকাল ছ’টা থেকে স্যালাইন দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বেলা ১১ টাতেও তা চালু হয়নি। এতটা সময় খাবার না খাওয়ায় কুহেলি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। ফলে কলোনোস্কপির জন্য করা অ্যানেস্থেশিয়ার ওভারডোজ সহ্য করতে পারেনি সে। ৫ জুন স্বাস্থ্য কমিশনে গিয়ে সন্তানহারা অভিজিৎ ও শালু অভিযোগ দায়ের করেন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: NRS হাসপাতালে বটগাছের মগডালে মানসিক ভারসাম্যহীন! বহুক্ষণের চেষ্টায় উদ্ধার]

কাউন্সিল সূত্রে খবর, কাউন্সিলের ১৭ নম্বর ধারায় সতর্ক করা হয়েছে ওই তিন চিকিৎসককে। ২৫ নম্বর ধারায় তিন মাসের জন্য বাতিল করা হয়েছে রেজিস্ট্রেশন। এই তিন মাস তাঁরা চিকিৎসা পরিষেবা সংক্রান্ত কোনওরকম কাজ করতে পারবেন না। এর আগেও বাংলায় রেজিস্ট্রেশন বাতিল হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু রাজ্যের প্রথম সারির একটি হাসপাতালে তিন-তিনজন ডাক্তারের একসঙ্গে লাইসেন্স বাতিল করার ঘটনা নজিরবিহীন।

Advertisement

যদিও অভিজিৎবাবু স্পষ্ট জানিয়েছেন এই রায়ে তিনি খুশি নন। তাঁর অভিযোগ, “কাউন্সিলকে ম্যানেজ করা হয়েছে। তিনজন ডাক্তার সমান শাস্তি পেতে পারে না। অ্যানেস্থেসিস্টের দোষ তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। উনি মাত্র পাঁচ মিনিটে আমার বাচ্চাকে দেখে অ্যানেস্থেশিয়ার ডোজ ঠিক করেছিলেন। আমরা বারবার বাচ্চার না খেয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়ার কথা বলেছিলাম। কিন্তু তিনি কর্ণপাত করেননি।” এদিন বিকেল তিনটে নাগাদ ডাকযোগে কাউন্সিল থেকে চিঠি পান অভিজিৎবাবুরা। সঙ্গে সঙ্গে রায়ের বিরুদ্ধে অসন্তোষ জানিয়ে ফোনে কাউন্সিলের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে কথা বলেন অভিজিৎবাবু। কুহেলির মা শালু চক্রবর্তী কথা বলেন কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট নির্মল মাজির সঙ্গে। অভিজিৎবাবুদের বিশ্বাস, লাইসেন্স অন্তত তিন বছরের জন্য বাতিল হওয়ার কথা ছিল। বছরকে ম্যানেজ করে মাস করা হয়েছে। অভিজিৎবাবু আরও জানান, শীঘ্রই তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করবেন। কাউন্সিলের রায় রিভিউর আবেদন জানাবেন। প্রয়োজনে হাইকোর্টে যাবেন।

[আরও পড়ুন: ‘তলানিতে অর্থনীতি’, নোটবন্দির তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে কেন্দ্রকে আক্রমণ মমতার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ