সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৮৪ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম। হ্যাঁ কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলার টিপু সুলতান মসজিদে এবার ইফতারের সুযোগ পাচ্ছেন মহিলারাও। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন টিপু সুলতান মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সুলতান গোলাম মহম্মদের প্রপৌত্র সুলতান আনোয়ার আলি শাহ। মহিলারা যাতে ধর্মতলা ও সংলগ্ন এলাকাতে এসে যাতে অসুবিধায় না পড়েন, তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মসজিদ চত্বরে অস্থায়ী ছাউনি তৈরি হয়েছে। সেখানেই প্রতিদিন ইফতার করছেন ১৫০জন মহিলা। তাঁদের জন্য আলো, পাখা, পর্যাপ্ত পানীয়জল ও ইফতার সামগ্রী মজুত থাকছে। এহেন আয়োজনে স্বস্তির শ্বাস ফেলছেন শহরে আসা রোজা পালনকারী মহিলারা।
উল্লেখ্য, চাইলে বাড়ি থেকে ইফতার সামগ্রী নিয়ে এসেও সেখানে বসে রোজা ভঙ্গ করতে পারেন মহিলারা। তারপর মগরিবের নমাজ পড়ে ফের নির্দিষ্ট গন্তব্যে রওনা দিতে পারেন। সঙ্গে ইফতার না থাকলে মসজিদ কর্তৃপক্ষ তার বন্দোবস্ত করবে। ইফতার শুরুর কয়েক মুহূর্ত আগে ওই ছাউনিতে পৌঁছালেই সমস্ত আয়োজন হয়ে যাবে। প্রতিদিনই ইফতার সামগ্রীতে থাকছে শরবত, ফল, ছোলা ও মিষ্টি।
বলা বাহুল্য, টিপু সুলতান মসজিদ কর্তৃপক্ষের এহেন ব্যবস্থাপনায় খুশি মুসলিম মহিলারা। অনেককেই কাজের প্রয়োজনে এই চত্বরে আসতে হয়। রোজার পরেই খুশির ইদ। তাই কেনাকাটারও ব্যাপার রয়েছে। ধর্মতলা এমনিতেই কলকাতার বিকিকিনির অন্যতম ক্ষেত্র। রোজা করতে করতেই অনেকে কেনাকাটা করতে আসেন। বাড়ির মহিলারা সঙ্গে থাকেন। তাঁরাও রোজা করেন। পুরুষরা ইফতারের আগে ধর্মতলা লাগোয়া টিপু সুলতান মসজিদে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিতে পারেন। তারপর ইফতার ও নমাজ। আর মহিলারা সঙ্গে থাকা ফলটুকু খেয়ে কোনওরকমে ইফতার সারেন। পথচারীরা উৎসুক নজরে সমস্ত কিছু লক্ষ্য করেন। অনেকে আাবার কোনও হোটেলে বসে বাড়ি থেকে আনা ফল খেয়ে সারেন ইফতার। তবে রোজা ভাঙলেও সন্ধ্যার প্রার্থনা কিন্তু বাকিই থেকে যায়। এতদিন কোথাও একটা অতৃপ্তি তাড়া করে ফিরত। এবার সেই জায়গাই পূর্ণ করে দিল টিপু সুলতান মসজিদ কর্তৃপক্ষ। এই প্রথম প্রথা ভেঙে মসজিদ চত্বরে মহিলাদের প্রবেশের সুযোগ মিলল। সেই সঙ্গে ইফতার, নমাজ ও বিশ্রামের।
এবছর ভরা গরমে রোজা। রোদ্দুরের তেজে মানুষের দুর্বিষহ অবস্থা। সারাদিন কঠোর নিয়মে রোজা পালনের পর এই ইফতারের সুযোগে খুশি মহিলারা। শহরে মাঝে মাঝেই বৃষ্টি নামছে। রোজা করে ছুটোছুটির ইচ্ছে থাকে না। হয়তো কাছেই বাড়ি, ভেবেছিলেন কেনাকাটা সেরে বাড়িতে গিয়ে ইফতার করবেন। কিন্তু বৃষ্টি বাধ সাদল। তখন অন্যতম ভরসা টিপু সুলতান মসজিদের ওই অস্থায়ী ছাউনি। সেখানে ইফতার ও নমাজ পড়ে খুশি সাব্রিনা ইয়াসমিন। কাছেই ওয়েলেসলিতে তাঁর বাড়ি। বৃষ্টির জন্যই আটকে গিয়েছেন। মসজিদে এসে সেরে নিলেন ইফতার। মসজিদ কর্তৃপক্ষের এহেন উদ্যোগ ও সিদ্ধান্তে তিনি যারপরনাই আনন্দিত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.