শুভময় মণ্ডল: একুশের মঞ্চে নজর কাড়লেন শিউলি। হ্যাঁ, সেই শিউলি সাহা। একদা মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ, বর্তমানে কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহা রবিবার বক্তব্য রাখলেন শহিদ স্মরণ দিবসের সভায়। ঠিক প্রথমসারি নেত্রী নাহলেও এদিন যে তাঁকে বেশ গুরুত্ব দিল দল, তা নিয়ে কিন্তু ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তবে কি মুকুল রায়কে বার্তা দিতেই রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর আগে শিউলিকে বক্তব্য রাখতে দেওয়া হল? জল্পনা রাজনৈতিক মহলে।
[আরও পড়ুন: বুকের পাটা থাকলে ব্যালটে ভোট করান, তৃণমূল ২৫০ আসন জিতবে: অভিষেক]
এদিন দলকে পরিবারের সঙ্গে তুলনা করেন কেশপুরের বিধায়ক। বলেন, ‘দলে সবধরনের মানুষ রয়েছেন। তবে দিনের শেষে আমরা সবাই একটা পরিবার। তৃণমূল কংগ্রেস একটা পরিবার’। কোথাও তাঁর কথার মধ্যে খারাপ সময়ে ঐক্যের বার্তা। মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই দলকে পরিবারের মতো করে বেঁধে রেখেছেন। শিউলির গলাতেও এদিন সেই সুরই শোনা গেল। আরও বললেন, এ রাজ্যে তফসিলি জাতি-উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ সমাজে অগ্রজ ভূমিকা নিচ্ছে। কিন্তু দেশের অন্যান্য রাজ্যে দলিতদের উপর আক্রমণ হচ্ছে, তাঁরা খুন হচ্ছেন। নাম না করে হিন্দিবলয়ের রাজ্যগুলিকে কটাক্ষ করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, তিনি নিজে এই সম্প্রদায়ভুক্ত, তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলায় পিছিয়ে পড়া শ্রেণির উন্নয়ন হয়েছে, কল্যাণ হয়েছে। তা তিনি চাক্ষুষ করেছেন। তাই উন্নয়নের বার্তা দিয়েই তৃণমূল কংগ্রেস পরিবারকে সংঘবদ্ধ থাকার কথা বলেছেন শিউলি।
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে এবং গত বিধানসভা ভোটের আগে মুকুল রায়ের সঙ্গে যখন তৃণমূলের দূরত্ব শুরু হয়, সেইসময় তাঁর সঙ্গে শিউলি সাহাকে একাধিক সময়ে দেখা গিয়েছে। শিউলির সঙ্গেও দলের দূরত্ব বাড়তে থাকে। কিন্তু দেখা যায়, ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে কেশপুর কেন্দ্রে শিউলি সাহাকে প্রার্থী করে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে বেশ অবাকই হয় রাজনৈতিক মহল। তারপর শিউলি আবার দলের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলতে শুরু করেন। সেদিনের কানাঘুষো নিয়ে পরে শিউলিকে একাধিকবার কটাক্ষ শুনতে হয়েছে। তবে দলের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য দেখিয়েছেন। যাঁর ঘনিষ্ঠ বলে কটাক্ষ শুনতে হয়েছে, আজ সেই মুকুল রায়কে বার্তা দিতেই শিউলিকে একুশের সমাবেশে প্রথম সারিতে এনে চমক দিল তৃণমূল।
[আরও পড়ুন: ‘না ডাকলেও অনুষ্ঠানে যান’, দলীয় কোন্দল মেটাতে একুশের সমাবেশে বার্তা মমতার]
ছবি: পিন্টু প্রধান
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.