অর্ণব আইচ, কলকাতা: দুটি বাসের বেপরোয়া রেষারেষিতে ডান হাত বাদ গেল মহিলার। আহত মহিলার নাম শাবানা আকবর। বাড়ি কড়েয়া থানা এলাকায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ন্যাশনাল মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে সিএমআরআই হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। শারীরিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেই ডান হাতটি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। দুর্ঘটনাস্থল থেকে ঘাতক বাসটিকে আটক করেছে পুলিশ। বাসের চালক ও কন্ডাক্টর পালিয়ে গেলেও পরে দুজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়। চালক ও কন্ডাক্টরের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছে আহত মহিলার পরিবার। পাশাপাশি পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে ৫ বছরের মেয়ে গোসিয়াকে স্কুলে দিয়ে কড়েয়ার বাড়িতে ফিরছিলেন শাবানা। শেক্সপিয়র সরণির থানার কাছাকাছি ফুট ধরে হাঁটছিলেন তিনি। সেই সময় ২৩০ রুটের দুটি বাস একে অপরকে টপকে যাওয়ার জন্য রেষারেষি শুরু করে। অভিযোগ, পিছনের বাসটির চালক আগে যাওয়ার তাড়নায় শাবানাকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় লাগোয়া কালীমন্দির এলাকায় রাস্তার উপরেই পড়ে যান তিনি। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ন্যাশনাল মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। শাবানার পরিবারেরর সদস্যদের খবর দেওয়া হয়। এদিকে ন্যাশনাল মেডিক্যালে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সিএমআর-তে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে শাবানাকে বাঁচাতে ডান হাত বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। এখন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
এদিকে পেশায় প্রাইভেট টিউটর শাবানার ডান হাত বাদ যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছে তাঁর পরিবার। এবার কী করে তিনি ছাত্রছাত্রীদের পড়াবেন তাই নিয়েই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। পরিবারের তরফেও উঠেছে প্রশ্ন। ঘাতক বাসচালকের শাস্তির দাবির পাশাপাশি শাবানার কর্সমসংস্থানেরও দাবি জানিয়েছেন তাঁর স্বামী। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সকালের ব্যস্ত সময়ে শেক্সপিয়র সরণির মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় পুলিশের দেখা নেই। দু’টি বাস একে অপরকে ওভারটেক করে আগে যাওয়ার জন্য ছোটাছুটি করছে। রাস্তায় তা পর্যবেক্ষণ করার মতো কোনও ট্রাফিক পুলিশ নেই। দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে ঘাতক বাসের চালক ও কন্ডাক্টর কি করে পালিয়ে গেল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তবে পরে দুজনকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। থানায় অভিযোগও দায়ের হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.