স্টাফ রিপোর্টার, শিলিগুড়ি: যে তুষারপাত নিয়ে উচ্ছ্বাসের অন্ত নেই, সেটাই সিকিমে ডেকেছে বিপদ! ভারী তুষারপাতের জেরে বিপর্যস্ত পূর্ব ও উত্তর সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকার স্বাভাবিক জনজীবন। অনেক রাস্তা বরফে ঢেকে অবরুদ্ধ।
দুর্ঘটনা এড়াতে একাধিক পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকদের যাতায়াত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে। গ্যাংটক থেকে না-থুলা জহওরলাল নেহরু রোড বন্ধ রয়েছে। ছাঙ্গু উপত্যকা-সহ বাকি পর্যটন কেন্দ্রগুলির পারমিট বন্ধ হয়েছে। লাচুং পর্যন্ত রাস্তা খোলা থাকলেও জিরো পয়েন্ট ও ইয়ংথাং ভ্যালিতে যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। সোমবার আবহাওয়া দপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তুষারপাত চলবে। শুধু তাই নয়, ক্রমশ পরিস্থিতির অবনতির সম্ভাবনা প্রবল। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের সিকিম কেন্দ্রের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, “খুবই খারাপ পরিস্থিতি। সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকায় তুষারপাত অব্যাহত রয়েছে। সেটা ক্রমশ বাড়বে। ওই কারণে আরও কিছু রাস্তা অবরুদ্ধ হতে পারে।”
আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবারও সকাল থেকে সিকিমের আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। হালকা বৃষ্টি হয়েছে। তারই জেরে চলেছে মাঝারি থেকে ভারী তুষারপাত। নেমেছে দিন ও রাতের তাপমাত্রা। সোমবার দিনে না-থুলার তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে হয়েছে মাইনাস ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাতের তাপমাত্রা আরও নেমে হয়েছে মাইনাস ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ছাঙ্গুতে দিনের তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাতে সেটা হয়েছে মাইনাস ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গ্যাংটকের তাপমাত্রাও দিনে নেমে দাঁড়ায় ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এবং রাতে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তুষারপাতের জেরে একাধিক রাস্তা ইতিমধ্যে ‘ব্ল্যাক আইস’ জমে অবরুদ্ধ হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ঘরবন্দি হয়েছেন। চিন সীমান্তে সামরিক বাহিনীর রশদ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে আইস কাটার মেশিন নিয়ে অভিযানে নেমেছে বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন।
এদিকে, উত্তর সিকিমের লাচুং, লাচেন, গুরুদংমার এবং ইয়ংথাং ভারী তুষার চাদরে ঢেকেছে। পুরু বরফে তলিয়ে আছে লাচুং, লাচেন, না-থুলা এবং তামজে যাতায়াতের জাতীয় মহাসড়ক। সেনাবাহিনীর স্বস্তিকের একটি দলও সীমান্তের রাস্তাগুলিকে সচল রাখার জন্য দ্রুত ভারী যন্ত্রপাতি এবং জনবল সংগ্রহ করেছে। গ্যাংটক থেকে নাথুলা যাতায়াতের জহওরলাল নেহেরু রোড এখন রীতিমতো বিপজ্জনক। ওই কারণে ছাঙ্গু উপত্যকা, বাবা মন্দির, না-থুলা ভ্রমণের পারমিট ইস্যু বন্ধ আছে। আরএন রোডে জুলুক পর্যন্ত যাতায়াতের পারমিট দেওয়া হচ্ছে। উত্তর সিকিমের লাচুংয়ে যেতে পারলেও জিরো পয়েন্ট, ইয়ংথাং উপত্যকা, গুরুদোংমার হ্রদে যাতায়াত বন্ধ করা হয়েছে। সিকিম প্রশাসনের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ জারি না করা পর্যন্ত ভ্রমণের পরিকল্পনা যেন স্থগিত রাখা হয়। কারণ, আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কতায় বলা হয়েছে, তুষারপাত ক্রমশ বাড়বে। ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেটা চলতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.